” হে শ্রেষ্ঠ বাঙালি
রেখেছিলে কালজয়ী অবদান
তোমার শতবর্ষে হৃদয় স্পর্শে
বিশ্ব দিচ্ছে তোমাকে বিরল সম্মান।”
এমন একজন মানুষকে নিয়ে দু কলম লেখার সাহস করছি যাকে হিমালয়ের সাথে তুলোনা করা হয়েছে। আর এই তুলোনাটি কোন সাধারন লোকে করেননি। এই তুলোনাটি করেছিলেন কিউবা নেতা ফিদেল কাস্ত্রো। হিমালয় তুল্য এই মানুষটি হলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি শুধু একজন মহানায়কই নন, তিনি নিজে একটি প্রতিষ্ঠান এবং একটি ইতিহাস।
যুগে যুগে যখন শোষণ জুলুমের সীমা ছাড়িয়ে যায় তখন কোন ক্ষণজন্মা পুরুষের আবির্ভাব ঘটে। এমনই এক ক্ষণজন্মা পুরুষ ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাংলার শাসন ব্যবস্থার যখন কৃমি কীটে খাওয়া দগ্ধ লাশের চেহারা ঠিক তখনই জন্ম নিলেন এই কালজয়ী নেতা। খুব ছোট থেকে আন্দাজ করা গিয়েছিলো যে এই শিশুটি একদিন বড় কিছু হবে। সবার ধারণা সত্য প্রমানিত হল। সেই ছোট খোকা ধীরে ধীরে কালের আবর্তে ইতিহাসের মহানায়কে পরিনত হলেন যেটা মোটেও সহজ ছিল না। জীবনের প্রতিটি পরতে পরতে তাকে মোকাবেলা করতে হয় অত্যাচার, নির্যাতন আর ষড়যন্ত্রের বিষাক্ত ছোবল। প্রকাণ্ড ঝড়ের মাঝে উত্তাল সাগরে টিকে থাকা তরীর মত তার জীবন। পাহাড় সম ঢেউ এসেও তার ইচ্ছা তরীকে ডুবাতে পারেনি। এমনটি শুধু কোন মহাবীরের পক্ষেই সম্ভব। সীমাহীন সাহস, অসীম আত্মবিশ্বাস, উপস্থিত বুদ্ধি, প্রজ্ঞা এবং মানুষের অকৃত্রিম ভালোবাসা তাকে নক্ষত্রে পরিনত করেছে।
ক্ষণজন্মা এই মহানায়কের জীবন ও কর্ম তুলে ধরা এত ছোট পরিসরে অসম্ভব। পাঠকদের কথা মাথায় রেখে তার সংক্ষিপ্ত জীবনী ও কর্ম তুলে ধরার চেষ্টা করছি। ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় তার জন্ম। ১৯২৭ সালে সাত বছর বয়সে তিনি গিমাডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯২৯ সালে গোপালগঞ্জ পাবলিক স্কুলে ভর্তি হন। এসময় তার চোখে কিছুটা সমস্যা দেখা গেলে লেখাপড়ায় কিছুটা গ্যাপ পড়ে যায়। ১৯৩৭ সালে তিনি গোপালগঞ্জ মিশন স্কুলে ভর্তি হন। স্কুল থেকেই তার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়। ১৯৩৯ সালে অসীম সাহসিকতার জন্য শেরে বাংলা তাকে বুকে টেনে নেন। তিনি তার স্কুলের ছাদ মেরামতের দাবিটি শেরে বাংলার কাছে বলিষ্ঠভাবে পেশ করেছিলেন।
১৯৪০ সালে তিনি মেট্রিক পাশ করেন এবং কলকাতার ইসলামিয়া কলেজে ভর্তি হন। এ সময় তিনি বেঙ্গল মুসলিম ছাত্র ফেডারেশনের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। ইসলামিয়া কলেজে পড়া অবস্থায় তিনি সক্রিয় রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হন। এই কলেজে তিনি জি এস নির্বাচিত হন। ১৯৪৭ সালে তিনি এখান থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। এ সময় কোলকাতার দাঙ্গা প্রতিরোধে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। ১৯৪৮ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনে ভর্তি হন। এ বছর তিনি মুসলীম ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন। উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার পাঁয়তারা চলছিলো তখন। তরুণ মুজিব তীব্র প্রতিবাদ জানালেন। তার নেতৃত্বে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। এ সময় আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে তিনি একাধিকবার গ্রেফতার হন। ১৯৪৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা তাদের নায্য দাবি আদায়ে ধর্মঘট আহবান করলে তরুণ মুজিব তাতে সমর্থন দেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রসাশন তাকে অন্যায়ভাবে বহিষ্কার করে। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন পূর্ব পাকিস্থান আওয়ামী মুসলীম লীগ গঠিত হয়। এ সময় তিনি জেলে থাকা অবস্থায় দলের যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৫২ সালে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে জেলখানায় অনশন শুরু করেন এবং একটানা ১৭ দিন অনশন করে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।
১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হল। এসময় তিনি ব্যাপক ভূমিকা রাখেন। নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের বিপুল বিজয় হলে তিনি কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। কেন্দ্রীয় সরকার যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রীসভা বাতিল করলে তিনি গ্রেফতার হন। ১৯৫৫ সালে তিনি পূর্ব পাকিস্থানের স্বায়ত্বশাসন দাবি করে ২১ দফা দাবি পেশ করে আন্দোলন চালাতে থাকেন। এ বছরেই আওয়ামী মুসলীম লীগ থেকে মুসলীম শব্দ বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগ গঠন করা হয় এবং তিনি দলের সাধারন সম্পাদক হন। ১৯৫৬ সালে তিনি কোয়ালিশন সরকারের মন্ত্রী হন। ১৯৫৭ সালে তিনি মন্ত্রীসভা থেকে পদত্যাগ করেন এবং স্বায়ত্বশাসনের দাবিতে আন্দোলন চালাতে থাকেন। ১৯৫৮ সালে আইয়ুব খান কর্তৃক মার্শাল ল জারি করা হলে তিনি গ্রেফতার হন এবং দীর্ঘ সময় জেল খাটেন। ১৯৬১ সালে তার নেতৃত্বে আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়। তিনি আবারো গ্রেফতার হন। ১৯৬২ সামরিক শাসন অবসান হলে তিনি কারামুক্ত হন।
১৯৬৩ সালে তিনি প্রাপ্তবয়স্কদের ভোটে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তনের দাবি করেন। ১৯৬৫ তে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহীতার মামলা করা হয় এবং তিনি দীর্ঘ সময় জেল খাটেন। ১৯৬৬ সালে তিনি ৬ দফা পেশ করেন। এর প্রথম দফাটি ছিল স্বায়ত্বশাসন। এটি ছিল মুক্তির সনদ। এসময় তিনি একাধিকবার গ্রেফতার হন। ১৯৬৮ সালে তার বিরুদ্ধে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা করা হয় এবং গ্রেফতার হন। ১৯৬৯ সালে তিনি গনঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে কারামুক্ত হন। এ বছর তাকে বঙ্গবন্ধু উপাধি দেয়া হয়। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নিরষ্কুশ জয় লাভ করে। ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে টালবাহানা শুরু হলে তিনি আন্দোলনের ডাক দেন। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চে তিনি বাংলার মানুষের অধিকার ও স্বাধীনতা নিয়ে কালজয়ী ভাষণ দেন। ২৫ মার্চ রাতে নিরীহ বাঙালিদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে হায়েনার দল। এই রাতেই বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। এর পর তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয়। ১৯৭২ সালে তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং সরকার প্রধান হন। ১৯৭২ সালে তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সংবিধান কার্যকর হয়। ১৯৭৪ সালে তিনি জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ দেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকদের হাতে তিনি সপরিবারে নিহত হন।
তিনি ছিলেন এমন একজন মানুষ যার কাছে নিজের সুখ ছিল খুব তুচ্ছ। তার মত দূরদর্শী নেতা বিশ্বে বিরল। তিনি ছিলেন গণতন্তের পুজারী এক নির্ভীক দুর্জয় সাহসী জাতীযতাবাদী নেতা। অমানিশার ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত দাসত্বের করাল গ্রাসে নিপতিত একটি জাতির জন্য তিনি এলেন আলোর দিশারী হয়ে।
ছোট থেকে বৃহৎ বিষয়গুলি নিয়ে ভাবতে পারতেন। সমাজের কোথায় গলদ এবং সেটা সারানোর উপায়টিও তিনি জানতেন। অতি দৃঢ়চেতা এই মহাবীর বাল্যকালেই প্রমাণ করেছিলেন যে তার জন্ম শুধু দুটো ডাল ভাত খেয়ে বাঁচার জন্য হয়নি। সমাজ বদলে তার করনীয় অনেক কিছু আছে। স্কুলে পড়া অবস্থায় দাবি দাওয়া নিয়ে বাংলার মূখ্যমন্ত্রী শেরে বাংলার সামনে বুক ফুলিয়ে দাঁড়ানো সহজ কোন বিষয় ছিল না। শেরে বাংলার বুঝতে মোটেও সময় লাগেনি যে কি সুপ্ত শক্তি সেই বালকটির মাঝে লুকিয়ে ছিল। তিনি সেই বালককে কাছে টেনে নিলেন। সেই বালক হয়ে গেলো বিশ্ব আইকন, নেতৃত্বের জাদুকর, ইতিহাসের এক বিরাট মহীরুহ। তিনি ছিলেন সৎ, বলিষ্ঠ, অদম্য, দুর্বার ও বিদ্রোহের অগ্নিশিখা। কিংবদন্তি কালজয়ী এই নেতার কণ্ঠে ছিল ইন্দ্রজাল। যার বজ্রকণ্ঠের ভাষণ ইতিহাসের বড় দলিল হয়ে গেছে। ক্ষণজন্মা এই পুরুষ ছিলেন মুক্তির দিকপাল, এক মহা কান্ডারি এবং মানবতাবাদের ক্যানভাসে গণতন্ত্রের দিশারী।
তিনি ছিলেন স্বপ্নদ্রষ্টা, এক বিরাট বটবৃক্ষ এবং বাতিঘর, যিনি ছিলেন স্বৈরাচার শাসনের বিরুদ্ধে এক প্রবল ঝড়। সাত কোটি বাঙালির প্রাণের প্রদীপ বিশ্ববরেণ্য এই নেতা ছিলেন দেশ প্রেমের এক মূর্ত প্রতীক। রাজনীতির এই মহাকবি ছিলেন তিমিরাচ্ছন্ন গগনের এক দীপ্ত রবি। শোষণের বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন এক মহা স্ফুলিঙ্গ যিনি মহাপ্রাচীর ভেঙ্গে ছিনিয়ে এনেছেন পতাকা এবং একটি মানচিত্র। বাংলার নৃপতি, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু ছিলেন অকুণ্ঠ, সদাশয় ও দূরদর্শী। জননন্দিত, অবিসংবাদিত, অস্প্রদায়িক, সেক্যুলার, আপোষহীন এই বিশ্বনেতার চলার পথ মোটেও মসৃণ ছিল না।
তার স্বর্নালী দিনগুলি কেটে গেছে রাজপথ,আন্দোলন-সংগ্রাম আর কারাগারের অন্ধ কুঠিরে। স্বপ্নের কারিগর, অনলবর্ষী এই বক্তা তার সহজাত গুণের কারণে ঘুমন্ত বাঙালিকে জাগিয়ে তুলতে পেরেছিলেন। বিশ্বের বহু নেতা বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন। কিন্তু ফসল ঘরে তুলতে পেরেছেন এমন নজির খুব কম। বঙ্গবন্ধু ছিলেন এমন এক ব্যক্তি তিনি যা ভেবেছেন তা শুরু করেছেন, সেটাকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন এবং সেটার ফসল ঘরে তুলে আনতে সক্ষম হয়েছেন। আর তার শ্রেষ্ঠত্ব ঠিক এখানেই। ধারাবাহিক সংগ্রামের বলিষ্ঠ এই বীর হিমালয়ের মত প্রতিরোধ গড়ে তুলেছেন যা ভেদ করা কারও পক্ষে সম্ভব হয়নি। যার মহান নেতৃত্বে মাত্র নয় মাসে পরাক্রম একটি সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে বাঙালিরা স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছিল।
মানব প্রেম, দয়া, ক্ষমা ও দানশীলতা তাকে ধীরে ধীরে কালজয়ী ব্যক্তিত্বে পরিনত করে। তিনি এমন এক ক্যারিশমেটিক ব্যক্তিত্বের অধিকারী ছিলেন যার কথায় ও ভালোবাসার টানে বাঙালিরা জীবন দিতে রাজি ছিল। বাঙালি জাতির মুক্তির দূত, নীতিতে অবিচল, উজ্জীবনী শক্তির ধারক আপন শক্তি বলে প্রকাণ্ড প্রতিবন্ধককে দুমড়ে মুচড়ে ফেলেছিলেন। টর্ণেডোর মত ক্ষিপ্রগতিতে তিনি হাজার বছরের বদ্ধ খাঁচার দুয়ার খুলে দিয়েছিলেন। পরাধীনতার লৌহ শিকলে আটকে থাকা একটি জাতিকে তিনি মুক্ত করেছিলেন। কোন ভয়, কোন ষড়যন্ত্র, কোন ফাঁদ, কোন হুমকি তার এগিয়ে যাওয়ার পথকে প্রতিহত করতে পারেনি।
তিনি তার ব্যক্তিগত চাওয়া পাওয়া নিয়ে
কোন স্বপ্ন দেখতেন না। তার গগনচুম্বী স্বপ্ন ছিল বদ্ধ প্রকষ্ঠে আটকে থাকা
অসহায় মানুষগুলিকে মুক্ত করে স্বাধীনতার স্বাদ দেয়া। বাঙালি জাতি যে শিকলে
বাঁধা পড়েছিল সেটা ভেঙ্গে দেয়াই ছিল তার মহা ব্রত।
তিনি তার মূল
স্বপ্নটি পূরুণ করতে পেরেছিলেন। মুক্তির পরম স্বাদ তিনি বাঙালিদের
দিয়েছিলেন। বিশ্বের একজন ত্যাগী সংগ্রামী নেতা হিসাবে নিজের জীবনকে উৎসর্গ
করেছিলেন। অসীম সাহসিকতার জন্য ব্রিটিশ রাজকবি টেড হিউজ বঙ্গবন্ধুকে ”
টাইগার অব বেঙ্গল” বলে অভিহিত করেছেন।
কবিতার মতো করে বলতে ইচ্ছে করেঃ
” তুমি জন্মেছিলে বলে
জন্মেছিলো একটি দেশ
মুজিব তোমার আরেক নাম
স্বাধীন বাংলাদেশ।
তিনি ছিলেন একজন খাঁটি বাঙালি। বাঙালিয়ানার প্রবাদ পুরুষ এই মানুষটির শিল্প সাহিত্যের প্রতি ছিল অগাধ ভালোবাসা। রবীন্দ্রনাথের একটি গানকে তিনি জাতীয় সঙ্গীতের মর্যাদা দিয়েছিলেন। নজরুলের একটি গানকে তিনি রণসঙ্গীত হিসাবে নির্বাচিত করেছিলেন এবং নজরুলকে তিনি বাংলাদেশের জাতীয় কবির মর্যাদা দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর আহবানে ৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধে নারী পুরুষ নির্বিশেষে অংশগ্রহন করেছিলো। নারীদের বিশেষ মর্যাদা বঙ্গবন্ধু দিয়েছিলেন। ৭২ এর সংবিধানে নারী পুরুষের সমতার বিধানটি যুক্ত করেন। নারীর ক্ষমতায়নের ভিত রচিত হল ৭২ এর সংবিধানের মাধ্যমে। যুদ্ধে অংশগ্রহনকারী নারীদের তিনি বীরাঙ্গনা উপাধি দিয়েছেন। যুদ্ধ শিশুর সামাজিক পরিচয়ের বিষয়টি বঙ্গবন্ধুর মাথায় ছিলো। বিশাল হৃদয়ের এই মহান নেতা জাতীয় মহিলা সংস্থার এক ভাষণে বললেন আজ থেকে যুদ্ধ শিশুদের সামাজিক পরিচয়ের ক্ষেত্রে তাদের পিতার নামের জায়গায় শেখ মুজিবুর রহমান লিখবে এবং ঠিকানা লিখবে ধানমন্ডি ৩২। যুদ্ধে যে সব নারীরা নির্যাতিত হয়েছিল তাদের তিনি বিশেষ মর্যাদা দেয়া সহ পুর্ণবাসন করেন। সরকারী চাকুরিতে নারীদের জন্য ১০ ভাগ কোটা সংরক্ষণ করেন।
কিন্তু যুদ্ধ বিধস্ত দেশটিকে তিনি যখন নতুনভাবে সাজানো শুরু করলেন ঠিক তখনই কতিপয় জঘণ্য কুচক্রী কিছু অমানুষ তার বুকে গুলি চালালো নির্মমভাবে। বিশ্বাসঘাতকদের হাতে প্রাণ হারালেন তিনি ও তার পরিবার। সৃষ্টি হলো ইতিহাসের সবচেয়ে জঘণ্য কলঙ্কিত অধ্যায়। কবির ভাষায় বলা যায়–
১৫ আগস্টের সেই কালো রাত
যখনই মনে পড়ে
দুচোখ দিয়ে অবিরাম
কষ্টের পানি ঝরে।
হিমালয়তুল্য এই মহান নেতার সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দক্ষ হাতে দেশ পরিচালোনার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্নকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। দেশের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গৃহিত নানা পদক্ষেপ বিশ্বব্যাপী সমাদৃত হয়েছে। বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের এক রোল মডেল।