আমাদের দেশে অনেক এলাকায় দেখা যায় ফেরিওয়ালারা বাড়ি বাড়ি ঘুরে মাথার চুল কেনে। নারীরাও নির্দোষ ও জায়েজ মনে করে নিজেদের পড়ে যাওয়া জমানো চুল তাদের কাছে বিক্রয় করে। জেনে রাখা দরকার এভাবে মথার চুল ক্রয়-বিক্রয় করা নাজায়েজ।
চুল, নখ, রক্তসহ মানুষের শরীরের কোনো অঙ্গ বা অঙ্গের কোনো অংশ বিক্রি করা জায়েয নয়। মানুষকে আল্লাহ তাআলা সম্মানিত বানিয়েছেন। মানুষের সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এমনকি চুল, নখ ইত্যাদি কর্তিত অংশও সম্মানিত এবং এগুলো বিক্রয়যোগ্য নয়। আল্লহ তায়ালা বলেন,
وَلَقَدْ كَرَّمْنَا بَنِي آدَمَ وَحَمَلْنَاهُمْ فِي الْبَرِّ وَالْبَحْرِ وَرَزَقْنَاهُم مِّنَ الطَّيِّبَاتِ وَفَضَّلْنَاهُمْ عَلَى كَثِيرٍ مِّمَّنْ خَلَقْنَا تَفْضِيلاً
নিশ্চয় আমি আদম সন্তানকে মর্যাদা দান করেছি, আমি তাদেরকে স্থলে ও জলে চলাচলের বাহন দান করেছি; তাদেরকে উত্তম জীবনোপকরণ প্রদান করেছি এবং তাদেরকে অনেক সৃষ্ট বস্তুর উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছি। (সুরা বনি ইসরাইল: ৭০)
কর্তিত বা পড়ে যাওয়া চুল জমা হলে সেগুলো দাফন করে দেওয়া উত্তম। তবে প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে রক্ত যেমন দান করা যায়, চুলও দান করা যায়। নিছক সাজ-সজ্জার জন্য মাথায় পরচুলা বা অন্যের চুল লাগানো নিষিদ্ধ হলেও অসুস্থতার কারণে চুল পড়ে গেলে, ত্রুটি সৃষ্টি হলে ওই ত্রুটি দূর করার জন্য অন্যের চুল লাগানো জায়েজ।
যেমন পুড়ে যাওয়ার কারণে বা ক্যান্সারের চিকিৎসা নিতে গিয়ে অনেকের মাথার সব চুল পড়ে যায়। তাদের জন্য অন্যের চুল মাথায় লাগানো জায়েজ এবং তাদেরকে চুল দান করাও জায়েজ তো বটেই, সওয়াবের কাজ।
কোনো সংস্থা যদি মানুষের চুল সংগ্রহ করে তা থেকে ক্যান্সারে আক্রান্ত, আগুনে পোড়া বা এ জাতীয় অন্য কোনো রোগ-দুর্ঘটনায় আক্রান্ত হয়ে চুল হারানো ব্যক্তিদের জন্য চুল বানায়, তাহলে তাদেরকেও চুল দান করা যেতে পারে।
যার মাথায় স্বাভাবিক চুল আছে, তার জন্য নিছক সাজ-সজ্জার উদ্দেশ্যে মাথায় নিজের চুলের সাথে অন্যদের চুল লাগানো নাজায়েজ। রাসুল (সা.) বলেন,
لَعَنَ اللَّهُ الْوَاصِلَةَ وَالْمُسْتَوْصِلَةَ، وَالْوَاشِمَةَ وَالْمُسْتَوْشِمَةَ
আল্লাহ তাআলা সে সব নারীদের লানত করেন যারা নিজেরা পরচুলা পরে বা পরায়, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে উল্কি অঙ্কন করে বা করায়। (সহিহ বুখারি: ৫৯৩৩)