অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদানকালে ২৫ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। সেখানে সাইড লাইনে এই দুই নেতার কুশলাদি বিনিময় হতে পারে। তবে জাতিসংঘ সফরকালে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী (সেক্রেটারি অব স্টেট) অ্যান্টনি ব্লিংকেনের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করে। সদস্য হওয়ার ৫০ বছরপূর্তি উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ বিশেষ এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে। ২৪ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় জাতিসংঘের বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখবেন। জাতিসংঘে উপস্থিত সব সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানকে এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ মিশন আশা করছে ৫০টি দেশের সরকারপ্রধান বা তাদের প্রতিনিধিরা এ ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস এ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন সেটা নিশ্চিত। জাতিসংঘে বাংলাদেশ আয়োজিত কোনো অনুষ্ঠানে এত বেশি সরকারপ্রধান বা তাদের প্রতিনিধি অতীতে যোগ দেননি। অনুষ্ঠানের মধ্যমণি থাকবেন নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
জাতিসংঘে অবস্থানকালে বিশ্বের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন ড. ইউনূস। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে যোগ দিতে ২৪ সেপ্টেম্বর বিকালে নিউইয়র্ক আসছেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি অধিবেশনে ২৭ সেপ্টেম্বর বক্তৃতা করবেন। প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হিসাবে আসছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ও বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ; সড়ক পরিবহণ ও সেতু এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হিসাবে ২০ জনের একটি প্রতিনিধিদল আসছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এতও অল্পসংখ্যক প্রতিনিধিদল নিয়ে কোনো সরকারপ্রধান জাতিসংঘে আসেননি।
জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দিয়ে সাইড লাইনে বিশ্বের বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতার সঙ্গে বৈঠক করবেন ড. ইউনূস। এর মধ্যে রয়েছেন বাহরাইনের যুবরাজ ও প্রধানমন্ত্রী সালমান বিন হামাদ বিন ইসা আল খলিফা, নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী ডিক শফ, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ, নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুইজ্জু, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন, ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লিয়েন ও বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট অজয় বাঙ্গা।
এছাড়া জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস, জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক, জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডিসহ জাতিসংঘের বেশ কয়েকটি সংস্থার প্রধান ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। প্রধান উপদেষ্টা সফর শেষে ২৭ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবেন।