// ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতাঃ
উপজেলা প্রশাসনকে না জানিয়ে ঝড়ে ভেঙে পড়ার নামে ৫৮ টি বড় ও মাঝারি আকারের বাবলা গাছ কাটার অপরাধে গাছ খেকো ঈশ্বরদী বন কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেনকে শোকজ করা হয়েছে। অতিরিক্ত দায়িত্বরত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (এসিল্যান্ড) টিএম রাহসিন কবির রবিবার সকালে বন কর্মকর্তাকে শোকজ করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ঝড়ে ভেঙে পড়ার কারণ দেখিয়ে ঈশ্বরদী উপজেলা বন কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন লোক লাগিয়ে ৫৮টি বড় ও মাঝারি সাইজের বাবলাগাছ কেটেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা প্রশাসনকে না জানিয়ে একক সিদ্ধান্তে তিনি গাছগুলো কেটেছেন। জানা যায়, গত সোমবার (২৪ এপ্রিল) আকর্ষিক ঝড়ে ৮-১০টি বাবলা গাছ হেলে ও ভেঙ্গে পড়ে। উপজেলা প্রশাসনকে না জানিয়ে এবং কমিটির সিদ্ধান্ত না নিয়ে বন কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন একক সিদ্ধান্তে লোকজন লাগিয়ে ৫৮ টি গাছ কেটে ফেলেন। এরমধ্যে ৭ টি গাছের টুকরা বাদশা মোড়ে স্তপ করে রেখে বাকিগুলো আত্মসাত করেছেন বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন। কেটে ফেলা গাছগুলোর গোড়া মাটি দিয়ে ঢেকে রাখা হয়।
গাছা কাটার বিষয়ে বর্তমানে অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা টি এম রাহসিন কবিরকে দেওয়া হয় মিথ্যে তথ্য। বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিন কেটে ফেলা বাবলা গাছগুলো দেখতে গেলে বন কর্মকর্তা সুকৌশলে অন্য এলাকার ৭টি কাটা গাছ দেখিয়ে ফিরিয়ে আনেন। পরে স্থানীয়ভাবে অভিযোগ উত্থাপন ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে নড়েচড়ে বসেন উপজেলা প্রশাসন। এরই ধারাবাহিকতায় বন কর্মকর্তাকে শোকজ করা হয়।
স্থানীয় আফজাল হোসেন জানান, প্রায় ২০-২৫ বছর আগে রাস্তার দুই পাশে একটি সমিতির নামে গাছগুলো রোপণ করা হয়েছিল। সমিতির সদস্যদের পরিচর্যায় গাছগুলো বড় করে। গাছগুলো ব্যবহার উপযোগী হয়েছে। অথচ আমাদের বাদ দিয়ে গাছগুলো কেটে সাবাড় করেছে।
সিরাজুল ইসলাম জানান, ঝড়ে উপড়ে পড়ার অজুহাতে গাছগুলো কাটা হয়েছে। সারা বছর তো আর ঝড় থাকে না। এরপরও গাছ কাটা হয়। স্থানীয় কিছু ব্যক্তি নিজেদের দলীয় নেতা পরিচয় দিয়ে কেটে নিয়ে যাচ্ছে।
মুলাডুলি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক মালিথা জানান, রাস্তার দুই পাশে বন বিভাগের থাকা গাছ কাটার বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।
বন কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন জানান, শোকজের কথা শুনেছি, এখনও হাতে পাইনি। অফিসে গেলে জানতে পারবো। গাছ কাটার বিষয়ে কোনো আপস নেই। ঝড়ে হেলে পড়া ও ভেঙে যাওয়া কিছু গাছ কেটে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয় বলে জানান তিনি।
অতিরিক্ত দায়িত্বরত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (এসি ল্যান্ড) টি এম রাহসিন কবির জানান, বন কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন কমিটির সিদ্ধান্ত না নিয়ে এবং উপজেলা প্রশাসনের অনুমতি না নিয়ে গাছ কেটেছে। গাছগুলো একক সিদ্ধান্তে কেটেছেন তিনি। যা তিনি কখনোই করতে পারেন না। শোকজ করে তার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে কপি পাঠানো হয়েছে। তিন কার্যদিবসের মধ্যে বন কর্মকর্তার নিকট জবাব চাওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে বন বিভাগ থেকেও আলাদাভাবে তদন্ত হবে। ##