বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি
নাটোরের বড়াইগ্রামে বিয়ের মাত্র তিন মাসের মাথায় যৌতুকের দাবীতে স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা মামলায় স্বামী রুবেল হোসেনকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছে আদালত। আদালত মৃত্যুদন্ডের পাশাপাশি আসামীকে এক লাখ টাকা অর্থদন্ডে দন্ডিত করেন। মঙ্গলবার দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল নাটোরের বিচারক মোহাঃ ইমদাদুল হক এই আদেশ দেন। মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত রুবেল বড়াইগ্রাম উপজেলার শিবপুর গ্রামের খোকন মুন্সির ছেলে।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল নাটোরের এপিপি অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ২০১৭ সালের ২৭ জুন সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার তেতুলিয়া গ্রামের আকবর আলী শেখের মেয়ে ফাতেমা খাতুনের সঙ্গে রুবেল হোসেনের বিয়ে হয়। বিয়ের এক মাসের মাথায় রুবেল হোসেন তার স্বী ফাতেমা খাতুনকে বাবার বাড়ি থেকে দুই লাখ টাকা যৌতুক এনে দেয়ার জন্য শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে। কিন্তু টাকা এনে না দেয়ায় ২০১৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রাতে রুবেল তার স্ত্রী ফাতেমা খাতুনকে মারপিটের এক পর্যায়ে গলা টিপে শ্বাসরোধে হত্যা করে। একই সঙ্গে তারা কৌশলে এটি আত্নহত্যা বলে অপপ্রচার চালায়। এ ঘটনায় পরদিন নিহতের বড় বোন আকলিমা বেগম বাদী হয়ে রুবেল হোসেন (২৪), তার বাবা খোকন মুন্সী (৫৫), ভাই জুয়েল হোসেন (২৫) ও ভাইয়ের স্ত্রী বেবী বেগম (২২) কে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক আমিরুল ইসলাম চারজনের বিরুদ্ধে চার্জশীট প্রদান করেন। পরে চার্জ গঠণকালে আদালত অপর তিন আসামীকে অব্যাহতি দিয়ে এক নম্বর আসামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠণ করেন। এরপর দীর্ঘ শুনানীকালে আদালত ১০ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণ করেন। স্বাক্ষ্য প্রমাণে আসামীর বিরুদ্ধে তার নববিবাহিতা স্ত্রীকে গলা টিপে হত্যার বিষয়টি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ হওয়ায় বিচারক আসামী রুবেল হোসেনের মৃত্যুদন্ড এবং একলাখ টাকা অর্থদন্ডে দন্ডিত করেন। পরে রুবেল হোসেনকে জেল হাজতে পাঠানো হয়।