চাটমোহরে মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে জোড়পূর্বক বের করে দেবার অভিযোগ

চাটমোহর(পাবনা) প্রতিনিধি

পাবনার চাটমোহর উপজেলার এনায়েতুল্লাহ ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা আবু ইসহাককে জোড় পূর্বক মাদ্রাসা থেকে বের করে দেবার অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকাল দশটার দিকে তার কক্ষে গিয়ে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে চাবি ও ফাইলপত্র কেড়ে নিয়ে তাকে জোড়পূর্বক মাদ্রাসা থেকে বের করে দিয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন স্থানীয়রা।

এ সময় একই মাদ্রাসার সহকারি অধ্যাপক রবিউল করিম বাচ্চুকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে চেয়ারে বসান তারা। মাদ্রাসার কিছু শিক্ষক এ সময় মাদ্রাসায় উপস্থিত থাকলেও কোনো প্রতিবাদ করেননি। এ ঘটনার বিচার চেয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা আবু ইসহাক মাদ্রাসাটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর আবেদন করেছেন।

মাওলানা আবু ইসহাক তার অভিযোগে জানান, ’বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর মাহাতাব হোসেন, চাটমোহর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোকলেছুর রহমান বিদ্যুৎ, স্থানীয় ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম সরকারের নেতৃত্বে এলাকার কিছু লোকজন আমার কক্ষে আসেন। তারা আমাকে আওয়ামীলীগের দোসর, আওয়ামীলীগের লোকজনকে নিয়ে কমিটি করেছি, বালুচরের মানুষকে কমিটিতে রাখি নাই কেন, আমি কোন ক্ষমতাবলে চেয়ারে আছি এমন বিভিন্নরকম প্রশ্ন করেন। এক পর্যায়ে তারা আমাকে চেয়ার ছেড়ে দিতে বলেন এবং চাবি বুঝিয়ে দিয়ে বের হয়ে যেতে বলেন। আমি তাদের নানাভাবে আমার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ থাকার বৈধতা সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করলেও তারা কোনো কথাই শোনেননি। তখন আমি সম্মান রক্ষোর্থে চলে আসছি। পরে তারা অফিস কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন।’

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত সহকারী অধ্যাপক ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দাবিদার রবিউল করিম বাচ্চু বলেন, ‘নিয়োগকালীন সময়ে ম্যানেজিং কমিটি রেজুলেশন করে আমাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দিয়েছে। কিন্তু মাওলানা ইসহাক সাহেবকে বারবার বলার পরও তিনি আমাকে কখনও দায়িত্ব বুঝিয়ে দেননি। আজ এলাকাবাসী তাকে সরিয়ে আমাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের চেয়ারে বসিয়ে দিয়েছেন।’

চাটমোহর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোকলেছুর রহমান বিদ্যুৎ বলেন, বালুচর সমাজের মানুষের হাতে গড়া এই মাদ্রাসা। সমাজের লোকজনই এটা করছে। আমিও সমাজের মানুষের মধ্যে পড়ি। মাওলানা ইসহাক সাহেবের বৈধ কাগজপত্র নাই। এজন্য তাকে চলে যেতে বলা হয়েছে। রেজুলেশনে রবিউল করিম ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্বে রয়েছেন।

মাদ্রাসাটির সভাপতি ও চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেদুয়ানুল হালিম জানান, ‘এ বিষয়ে সামনে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির একটি সভা আহবান করবো। সেখানে কমিটির সদস্যদের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সাল থেকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন মাওলানা আবু ইসহাক। মাদ্রাসার নিয়োগ কার্যক্রমের জন্য ম্যানেজিং কমিটি মিটিংয়ের মাধ্যমে সহকারী অধ্যাপক রবিউল করিম বাচ্চুকে নিয়োগকালীন সময়ের জন্য সাময়িক সাচিবিক দায়িত্ব দেন। পরবর্তীতে সরকারি ঘোষণায় নিয়োগের সকল কার্যক্রম স্থগিত হয়। নিয়োগ পক্রিয়া স্থগিত হওয়ার পরও ৯ থেকে ১০ মাস প্রশাসনিকসহ সকল কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন মাওলানা আবু ইসহাক।  নিয়োগকালীন সময়ের রেজুলেশনের কথা বলে নিজেকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দাবী করে আসছেন রবিউল করিম।