করোনা ভাইরাসের প্রভাবে পাবনায় পোল্ট্রি শিল্পে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। গেল প্রায় ৫ মাসে লোকশান গুনতে গুনতে বন্ধ হয়ে গেছে অনেক পোল্ট্রি খামার। লোকশানের বোঝা মাথায় নিয়ে এখনো কিছু খামার সচল রয়েছে। তবে উৎপাদন ঘাটতি আর পরিবহন সংকটের অযুহাতে পোলট্রি খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছে খামার ব্যবসায়ীরা। পোলট্রি শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে সরকারের কাছে প্রণোদনার দাবি করছেন সংশ্লিষ্টরা।
পাবনা জেলা প্রাণী সম্পদ অফিসের একটি সুত্র থেকে জানা গেছে, পাবনা জেলায় ছোট বড় মিলে মোট ২৭৩৫টি পোল্ট্রি খামার রয়েছে। এসব খামারে ব্রয়লার এবং লেয়ার মুরগী পালন করা হয়। ব্যবসা মন্দা থাকায় প্রায় ১৪৫৫ টি খামার বন্ধ হয়ে গেছে। পোল্ট্রি খামার গুলো টিকিয়ে রাখতে প্রাণী সম্পদ অফিসের পক্ষ থেকে সার্বিক চেষ্টা চলছে। এদিকে করোনা ভাইরাসের প্রভাবে পোল্ট্রি খামারিরা পড়েছে মহাবিপদে। পোল্ট্রি খামার ব্যবসা ও প্রাণীজ প্রোটিনের উৎপাদন টিকিয়ে রাখতে সরকারের ভর্তুকি বা বিশেষ প্রণোদনার বিকল্প নেই বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
পাবনা সদর উপজেলার রানীগ্রামের পোল্ট্রি খামারি তরুন উদ্যোক্তা শুভ রহমান বলেন, তার খামারে দুই হাজার লেয়ার মুরগি রয়েছে। আগে এক বস্তা (৫০ কেজি) মুরগির খাদ্যের দাম ছিল এক হাজার ৬৫০ টাকা। এখন তা বেড়ে হয়েছে এক হাজার ৭০০ টাকা। এদিকে উৎপাদিত একশত ডিম বিক্রি হচ্ছে ৭৮০-৭৫০ টাকা দরে। ডিমের দাম কম হওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছি। পোলট্রি শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে তিনি সরকারের কাছে ভর্তুকি দাবি করেন। তিনি আরো জানান, খামার পর্যায়ে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগী বিক্রি হচ্ছে ৮৫-৯০ টাকায়। এদিকে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগীর উৎপাদন খরচ প্রায় ১০০ টাকার উপরে। লোকশানের শিকার হয়ে খামার বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন খামারিরা। এভাবে চলতে থাকলে শীঘ্রই দেখা দিতে পারে প্রাণীজ প্রোটিনের ঘাটতি।
পাবনা জেলা প্রাণী সম্পদ অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, অন্যান্য জেলার চেয়ে পাবনায় খামারের সংখ্যা অনেক বেশি। সে মোতাবেক এই সংকটময় সময়ে খামারিদের জন্য বিশেষ প্রণোদনার ব্যবস্থাসহ সকলের প্রচেষ্টায় পোলট্রি শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে এব্যাপারে সার্বিক চেষ্টা চলছে।