বগুড়া শাজাহানপুরে রিক্সা চালকের রডের আঘাতে খুন হন গার্মেন্টস কর্মী মিম। ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার পথে বগুড়ার শাজাহানপুরের গন্ডগ্রামে গভীর রাতে রাস্তার উপর খুন হওয়া গার্মেন্টস কর্মী মিম আক্তার হত্যা কান্ডের রহস্য উন্মোচন হয়েছে। শাজাহানপুর বাস থেকে নেমে বগুড়ার বনানী স্ট্যান্ড থেকে রিক্সা যোগে কলোনী এলাকায় ভাড়া বাড়িতে ফেরার পথে রিক্সা চালক নূর ইসলাম (২৮) এর কুমতলবের শিকার হন মিম। এক পর্যায়ে রিক্সা চালকের রডের আঘাতে খুন হন তিনি। বগুড়ার পুলিশ সুপার মো: আলী আশরাফ ভূঞা এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল ও মিডিয়া) সনাতন চক্রবর্তীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে শাজাহানপুর থানা পুলিশ ১৫ দিনের মাথায় ক্লু লেস এই হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচনে সক্ষম হন। তদন্ত টীম সূত্রে জানাগেছে, গার্মেন্টস কর্মি মিম আক্তার গত ৪ জুন গাজীপুর জেলার মৌচাক এলাকা থেকে বগুড়া গামী বাসে উঠেন। বাসের কন্ডাকটর রাত সাড়ে ৯টায় বগুড়ার বনানী বাস স্ট্যান্ডে মিম আক্তার কে নামিয়ে দিয়ে একটি রিক্সায় উঠিয়ে দেন।কু-মতলবি রিক্সা চালক নূর ইসলাম তাকে কলোনীতে না নিয়ে গিয়ে শাকপালা এলাকায় নিয়ে যান। সেখান থেকে রানীরহাট-বনানী সড়কের গন্ডগ্রামে জনশূন্য এলাকায় নিয়ে যায় এবং মিম আক্তারের হাতে থাকা ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। এক পর্যায়ে সম্ভ্রম হানির চেষ্টা করলে মিম আক্তার তাতে বাঁধা দেয়। এ সময় রিক্সার চাকা খোলার রড দিয়ে মিম আক্তারের ঘাড়ে আঘাত করলে সাথে সাথেই তার মৃত্যু ঘটে। এ ঘটনায় মিম আক্তারের মা খায়রুন্নাহার শাজাহানপুর থানায় মামলা দায়ের করলে মামলাটি এস.আই আব্দুর রাজ্জাক তদন্ত করেন। কিন্তু ক্লু লেস হওয়ায় কোন কুল-কিনারা পাচ্ছিলেন না।তবে রিক্সা চালকের চেহারার অস্পষ্ট বর্ণনা উদ্ধার করে। সেই অস্পষ্ট বিবরণের সাথে মিল পাওয়ায় এক রিক্সা চালককে সরসরি চ্যালেঞ্জ করেন কৈগাড়ী পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই ফারুক। এমতাবস্থায় ওই রিক্সা চালক ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়। বিষয়টি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে জানান এএসআই ফারুক। পরবর্তীতে রিক্সা চালক নুর ইসলামকে আটকের পর রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে থলের বিড়াল বেড়িয়ে আসে। তবে রিক্সা চালক প্রথমে আসল ঘটনা বলেনি। সে তার শত্রুদের ফাঁসাতে ৪ জন নিরপরাধ ব্যক্তির নাম বলে পুলিশকে। কিন্তু তার সে চালাকি ধরা পড়ে চৌকস পুলিশ কর্মকর্তার জিজ্ঞাসাবাদে। অবশেষে নিজেই মিম আক্তারকে খুন করেছে মর্মে আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী দিয়েছে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার পাকুরতলা গ্রামের রফিকুল ইসলামের পুত্র রিক্সা চালক নুর ইসলাম। তদন্ত টীমের বস্তুনিষ্ঠ তদন্তের মধ্য দিয়ে নিরীহ গার্মেন্টস কর্মী মিম আক্তারের হত্যা রহস্য উন্মোচনের পাশাপাশি নিরপরাধ ৪ ব্যক্তি মিথ্যা গণধর্ষণ মামলা থেকে নিস্কৃতি পেয়েছেন।