করোনা ভাইরাসের মধ্যেই বাল্যবিয়ের আয়োজন চলছিলো। বিয়ে বাড়ী থেকে কাজীর ফোন পেয়ে এক কি.মি কাঁদা রাস্তা হেটে ঘটনাস্থলে গিয়ে সপ্তম শ্রেণীর এক ছাত্রীর বাল্যবিয়ে বন্ধ করেছেন নাটোরের গুরুদাসপুরের ইউএনও মোঃ তমাল হোসেন। শনিবার আনুমানিক রাত ১০টার দিকে ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার চাপিলা ইউনিয়নের পশ্চিম নওপাড়া গ্রামে।
শিক্ষার্থী যুথি খাতুন(১৩)। মৌখাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। দরিদ্র পরিবারের মেয়ে। বাড়ি উপজেলার চাপিলা ইউনিয়নের পশ্চিম নওপড়া গ্রামে। ওই এলাকার কৃষক আবুল হোসেন জটুর ছোট মেয়ে যুথি। ইচ্ছে ছিলো পড়াশোনা করে দেশের কল্যাণে কাজ করবে। পরিবারের সদস্যরা জোড় পুর্বক বিয়ের পিড়িতে বসিয়েছিলো যুথিকে। বিয়ের বয়স পুর্ন হয়েছে বলে ফোন দেওয়া হয়েছিলো ওই ইউনিয়নে দায়িত্ব প্রাপ্ত কাজী মোঃ আশরাফুল আলম কে। বিয়ে পড়ানোর জন্য এসেছিলেন কাজী। কাজী এসেই মেয়েকে দেখতে চান এবং মেয়ের জন্মসনদের কপি চান মেয়ের পরিবারের কাছে। পরে পরিবারের পক্ষ থেকে কাজীকে বলা হয় মেয়ের বয়স কম আছে। কৌশল অবলম্বন করে কাজী মেয়েটি কে বাহিরে নিয়ে তার মনের কথা জানতে চায়। মেয়েটি কাজী কে অনুরোধ করে বলে, আপনি যেভাবে পারেন এই বিয়েটি বন্ধ করে দেন। আমি পড়াশোনা করতে চাই। মেয়েটি এখন বিয়ে করবে না বলেও কাজী কে জানায়। পরে ঘটনাস্থল থেকেই কৌশলে কাজী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ তমাল হোসেন কে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানান। ঘটনা শোনার সঙ্গে সঙ্গেই মেয়ের বাড়িতে পৌছান ইউএনও মোঃ তমাল হোসেন। ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই মেয়ের বিয়ে বন্ধ করেন তিনি এবং মেয়ের হাতে আর্থিক অনুদান তুলে দেন। বিয়ের উপযুক্ত বয়স না হওয়া পর্যন্ত যেন ওই মেয়েকে বিবাহ না দেওয়া হয় তার জন্য পরিবারের কাছ থেকে মুচলেকা নেওয়া হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ তমাল হোসেন জানান, উপজেলার চাপিলা ইউনিয়ন থেকে কাজী আশরাফুল আলম ফোন করে সপ্তম শ্রেণীর এক ছাত্রীর বাল্যবিয়ের বিষয়ে জানান। ঘটনা শোনার সঙ্গে সঙ্গে মেয়ের বাড়িতে গিয়ে তার বিয়ে বন্ধ করা হয়। পরিবারের লোকজনকে বুঝিয়ে বলা হয়েছে। এবং তার মেয়ের যেন পড়াশোনা করতে কোন সমস্যা না হয় তার জন্য সার্বিক সহযোগিতা করার কথাও বলা হয়েছে। তারপরও নগদ কিছু অর্থ মেয়েটির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান।