পাবনার ভাঙ্গুড়ায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত এক দম্পতি সুস্থ হয়ে উঠেছেন। বুধবার রাতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দ্বিতীয়বার ওই দম্পতির নমুনা পরীক্ষা করে নেগেটিভ ফলাফল ভাঙ্গুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য প্রশাসনকে জানান। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ভাঙ্গুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার হালিমা খানম। ওই দম্পতি আলম ফকির ও শাকিলা পারভিন গাজীপুর ফেরত পোশাককর্মী। তারা ভাঙ্গুড়া উপজেলার মুন্ডুতোষ ইউনিয়নের মল্লিকচক গ্রামের বাসিন্দা। গত এপ্রিল মাসের ২৮ তারিখে তাদের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। এ উপজেলায় ওই দম্পতি প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী ছিলেন।
সূত্র জানায়, গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানায় ওই দম্পতি কাজ করতো। গত ১৭ এপ্রিল তারা ভাঙ্গুড়া এসে সামান্য অসুস্থ হয়ে পড়ে। এরপর ২৩ এপ্রিল ভাঙ্গুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কর্মীরা তাদের নমুনা সংগ্রহ করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ল্যাবে পাঠায়। পরে ২৮ এপ্রিল তাদের করোনা পজিটিভ হওয়ার বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে জানায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ঐদিন উপজেলা প্রশাসন ওই দম্পতির বাড়ি লকডাউন করে দেন। পরে উপজেলা প্রশাসন, স্বাস্থ্যকর্মী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর রাখেন তাদের। তবে ওই দম্পতির শরীরের তেমন কোনো করোনা উপসর্গ না থাকায় শুধু স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক। এরপর গত দেড় সপ্তাহ আগে দ্বিতীয়বার তাদের নমুনা সংগ্রহ করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বুধবার রাতে দ্বিতীয়বারের ফলাফলে তাদের শরীরে করোনা নেগেটিভ প্রকাশ পায়।
সুস্থ হয়ে ওঠা শাকিলা পারভিন জানান, ‘আমাদের কখনোই গুরুতর শারীরিক কোনো অসুস্থতা ছিলনা। এরপরেও আমাদের শরীরে করোনা ভাইরাস ধরা পড়ে। এরপর থেকে আমাদের দুটি শিশু বাচ্চা শ্বশুর শাশুড়ির কাছে রেখে একটি আবদ্ধ করে একমাস কাটিয়েছি। উপজেলা প্রশাসন ও আত্মীয়স্বজনেরা আমাদের নিয়মিত খোঁজখবর রেখে খাবারের ব্যাবস্থা করে দিয়েছেন। ওষুধ-পত্র না খেলেও আমরা নিয়মিত গরম পানি দিয়ে গার্গল করে গরম পানির ভাপ নিতাম। এতে আল্লাহর রহমতে সুস্থ হয়ে উঠি।’
ভাঙ্গুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার হালিমা খানম জানান, ওই দম্পতি করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর থেকেই হোম আইসোলেশনে রাখা হয়। উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে তাদের খাওয়া-দাওয়াসহ সার্বিক বিষয়ে সহযোগিতা করা হয়। তবে তাদের গুরুতর কোনো উপসর্গ না থাকায় শুধু স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বলা হয়। তারা নিয়মিত গরম পানি দিয়ে গার্গল করতেন, বিভিন্ন ভিটামিন ও পুষ্টিকর খাবার খেতেন, নিয়মিত সাবান দিয়ে হাত ধৌত করতেন। এতে ওই দম্পতি কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলায় এক মাসের মধ্যেই সুস্থ হয়ে ওঠেন।