ঢাকা :: বাম গণতান্ত্রিক জোট কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সমন্বয়ক ও বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ এবং কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সদস্য সিপিবি সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, সাধারণ সম্পাদক কমরেড শাহ আলম, বাসদ এর সাধারণ সম্পাদক কমরেড খালেকুজ্জামান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক, বাসদ (মার্কসবাদী)-র সাধারণ সম্পাদক কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী, গণসংগতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জুনায়েদ সাকী, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড মোশরেফা মিশু, কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক কমরেড মোশাররফ হোসেন নান্নু, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের কমরড হামিদুল হক আজ ১৫ এপ্রিল সংবাদপত্রে দেয়া এক বিবৃতিতে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সাড়ে তিন মাস সময়েও পুনরুদ্ধারে সরকারের ব্যর্থতায় তীব্র ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, দেশের স্বাস্থ্য খাতের প্রতি সরকারের অবহেলার কারণেই আজ করোনা রোগীর চিকিৎসার জন্য চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের পর্যাপ্ত সুরক্ষা সামগ্রী সরবরাহ করা যাচ্ছে না। ফলে আজ সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মাঈনুদ্দিনকে মৃত্যুবরণ করতে হলো এবং অনেক চিকিৎসক করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু ঝুঁকিতে রয়েছে। এটি খুব দুর্ভাগ্য যে সিলেটের মতো বিভাগীয় শহরে একজন চিকিৎসককে আইসিইউ ও ভেন্টিলেটর সুবিধা দিতে না পারায় তাকে নিজ উদ্যোগে ঢাকায় এসে মৃত্যুবরণ করতে হলো। এ ঘটনা দেশবাসীর চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিল দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বেহাল দশার চিত্র।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, করোনা প্রতিরোধে অগ্রাধিকার হিসেবে স্বাস্থ্যখাতে সুনির্দিষ্ট বরাদ্দ না করে সরকার পোষাক রপ্তানি শিল্প ও অন্যান্য শিল্পে প্রণোদনা ঘোষণা করেছে, এতে সরকারের দৃষ্টি কোন দিকে তার প্রমাণ পাওয়া যায়।
নেতৃবৃন্দ চিকিৎসকদের সুরক্ষা না দিয়ে তাদের তিরস্কার ও হুমকী প্রদানের তীব্র নিন্দা জানান। একই সাথে বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালের ৬ চিকিৎসককে সাময়িক বহিস্কারের নিন্দা জানিয়ে তাদের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার করে করোনা যুদ্ধের সামনের সারির যোদ্ধাদের পাশে দাঁড়ানো, তাদের সাহস যোগানো এবং চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের আস্থা তৈরি করা এবং ঝুঁকি ভাতা ও বীমা প্রদানের দাবি জানান।
নেতৃবৃন্দ বলেন, করোনা ইস্যু মূলত স্বাস্থ্য ইস্যু ফলে এখাতে কমপক্ষে ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করে পর্যাপ্ত সুরক্ষা সামগ্রী সরবরাহ, পর্যাপ্ত কীট সংগ্রহ, দিনে কমপক্ষে প্রতি জেলায় ১ হাজার পরীক্ষা করা, আইসোলেশন সেন্টার ও চিকিৎসার জন্য ফিল্ড হাসপাতাল তৈরি, পর্যাপ্ত আইসিইউ ও ভেন্টিলেটর জরুরি ভিত্তিতে স্থাপনের দাবি জানান।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ পোষাক শ্রমিকদের মার্চ মাসের বেতন এখনও পরিশোধ না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বেতন না পেয়ে শ্রমিক পরিবার অনাহার-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে। বেতনের দাবিতে বিভিন্ন স্থানে শ্রমিকরা বিক্ষোভ করছে। খুলনা, রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় কর্মহীন মানুষ খাবারের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে। অবিলম্বে পোষাক শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ এবং কর্মহীন রোজগারহীন মানুষের খাদ্য ও নগদ অর্থ প্রদানের জোর দাবি জানান। অন্যথায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে যা কারো জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে না।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ ওএসএস বন্ধের নিন্দা জানিয়ে বলেন, সরকার দলীয় নেতা-কর্মী ও ভোটারবিহীন নির্বাচনে জনপ্রতিনিধিদের চুরি-দুর্নীতির দায় জনগণের উপর চাপিয়ে ওএমএস বন্ধ করার ঘটনা সরকারের চরম ব্যর্থতাকেই উন্মোচন করেছে। এটা প্রমাণ করছে এই সরকার জনগণের খাদ্য ও জান-মালের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। নেতৃবৃন্দ ত্রাণ ও ওএমএস এর চাল চুরির সাথে যুক্তদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ওএমএস চালু করার দাবি জানান।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, ইতিমধ্যে বাংলাদেশে ও ভারতের আবহাওয়া দপ্তর পূর্বাভাস দিয়েছে সিলেট অঞ্চলে আগামী ১৭-২০ এপ্রিল ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ঐ অঞ্চলের কৃষকদের দ্রুত ধান কাটার জন্য বলা হয়েছে। নেতৃবৃন্দ হাওরে ধান কাটার জন্য সুরক্ষা নিশ্চিত করে দ্রুত শ্রমিকের যাতায়তের ব্যবস্থা করার জন্যও সরকারের প্রতি দাবি জানান।