কলকাতার ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাস। শহরের একটি আধুনিক হাসপাতাল রয়েছে সেখানে। কয়েকদিন ধরে রাতের ঘুম ছুটে গেছে হাসপাতালটির কর্ণধারের।
করোনাভাইরাসের কারণে এরইমধ্যে ভারত সরকার সব ভিসা বাতিল করেছে। এতে বাংলাদেশি রোগীর সংখ্যা কমে গেছে। তাই চিন্তিত হয়ে পড়েছেন ওই কর্ণধার। বললেন, ‘প্রতিমাসে প্রায় ছয় হাজার বাংলাদেশি রোগী আসেন। গত দুই দিনে আমরা পেয়েছি মাত্র ২০ জনকে।
আরো বললেন, স্বীকার করতে দ্বিধা নেই, কলকাতার স্বাস্থ্য ব্যবসা দাঁড়িয়ে আছে বাংলাদেশ থেকে আসা রোগীদের কারণে। এখন যেহেতু ভারত সরকার সব ভিসা বাতিল করেছে। তাই চিন্তিত হয়ে পড়েছেন হাসপাতাল মালিকরা।
আরেক হাসপাতালের জনসংযোগ বিভাগের কর্মকর্তা বলেন, ‘আগামী তিন দিনে ৪৫টি অপারেশন হওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশি রোগীদের। তাঁরা আমাদের ফোন এবং ই-মেইল করে জানিয়েছেন, ভিসা বাতিল হওয়ায় আসবেন না তাঁরা।’
কলকাতার মেডিকা এএমআরআই, অ্যাপোলো, আরএন টেগর, রুবি হাসপাতাল- এমন কয়েকটি হাসপাতালে সকালে গেলে মনে হয় যেন মিনি বাংলাদেশ। হাসপাতালগুলোতে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রচুর মানুষ আসেন চিকিৎসা নিতে। চিকিৎসার সঙ্গে অনেকে কলকাতায় শপিংও করে নেন, কাটিয়ে যান বেশ কিছুদিন। তাই স্বাস্থ্য পরিসেবাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে এক বাজার। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ থেকে আসা রোগীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
আরেকটি হাসপাতালের কর্ণধার বলেন, ‘স্বাস্থ্য পরিষেবা বাজার এক অভূতপূর্ব বিপর্যয়ের সম্মুখীন, কারণ আমাদের সামগ্রিক আয়ের প্রায় ৩০ শতাংশ আসে বাংলাদেশের রোগীদের থেকে। এই অবস্থা যদি বেশিদিন চলে, তাহলে আমাদের ব্যবসা মার খাবে।’
এদিকে, বাংলাদেশ থেকে কেবল রোগীরা আসতে পারছেন না তাই নয়, যারা এখন কলকাতায় তারাও খুব চিন্তিত, তারা জানেন না কীভাবে দেশে ফিরবেন। কারণ বিমান পরিষেবা বন্ধ হতে চলেছে সোমবার থেকে।
ঢাকার বাসিন্দা কে এম আহমেদ শামিম কিডনির সমস্যা নিয়ে কলকাতায় এসেছিলেন ডায়ালাইসিস করাতে। এখন তার চিন্তা বাসায় ফেরা নিয়ে। তিনি বলেন, ‘চিকিৎসার কারণে আরো কিছুদিন থাকলে ভালো হতো। কিন্তু রবিবারের রিজেন্টের ফ্লাইটেই আমাদের ফিরতে হবে।’