আগৈলঝাড়ায় জাতীয় ভোটার গৌরনদীতে অগ্নিকান্ডে ৩৮টি দোকান ভস্মীভূত

অপূর্ব লাল সরকার, আগৈলঝাড়া (বরিশাল) থেকে :গৌরনদীতে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ২৪টি দোকান সম্পূর্ণ ও ১৪টি দোকান আংশিক ভস্মীভূত হয়েছে। গতকাল সোমবার ভোররাত সাড়ে ৩টার দিকে গৌরনদী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে।
এতে প্রায় ২ কোটি টাকার সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে স্থানীয় ব্যবসায়ীসহ সকলে ধারণা করছেন। আগুন নেভাতে গিয়ে স্থানীয় ৫ জন
আহত হয়েছে। এ অগ্নিকান্ডে সময় বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কে ও গৌরনদী-পয়সারহাট আঞ্চলিক সড়কে প্রায় সাড়ে ৩ ঘন্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিলো।
গৌরনদী ফায়ার স্টেশনের সাব-অফিসার আব্দুস ছালাম জানান, গতকাল সোমবার ভোররাত সাড়ে ৩টার দিকে গৌরনদী বাসস্ট্যান্ডের নিজাম সরদারের চায়ের দোকান থেকে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিটের মাধ্যমে
আগুনের সূত্রপাত ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

মূহুর্তের মধ্যে আগুনের লেলিহান শিখা ২০-২৫ ফুট উচ্চতায় উঠে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে গৌরনদী, উজিরপুর, বাবুগঞ্জ,
বরিশাল দক্ষিণ ফায়ার স্টেশনের ৪টি গাড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছে ফায়ার কর্মীরা স্থানীয়দের সহযোগিতায় সাড়ে ৩ ঘন্টা আপ্রাণ চেষ্টা
চালিয়ে সকাল সাড়ে ৬টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এরই মধ্যে অগ্নিকান্ডে সোহেল ট্রেডার্স, শহিদুল স্টোর, সরদার ইলেকট্রিক, স্বাধীন স্টোর, হাবিব স্টোর, জাহিদ স্টোর, জালাল স্টোর, আরিফ স্টোর, সাদিয়া টেলিকম, কমলেশ স্টুডিও, জয়গুরু মিষ্টান্ন ভান্ডার, জাকির ডিজিটাল প্রেসের শো-রুম, ফিরোজ মেকার, মনো হেয়ার কাটিং সেলুন, বি আলম স্টোর, নান্নু হোটেল, গৌরনদী অটোটেম্পু- মাহিন্দ্রা শ্রমিক কার্যালয়, নিজামের চায়ের দোকানসহ ২৪টি দোকান সম্পূর্ণ ও আকিব ইলেকট্রিক, মনির মেকার, আমার ফোন কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার, জাকির ডিজিটাল প্রেস, মাস্টার ইলেকট্রিক, ফরিদ মিয়ার গোডাউনসহ ১৪টি দোকান আংশিক ভস্মীভূত হয়েছে। আগুন নেভাতে গিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ী বিএম বেলাল, সঞ্জয় কুমার পাল, সোহেল শিকদার, আরিফ হোসেন, মো. খলিল আহত হয়েছে।
বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মো. ফারুক হোসেন জানান, রবিবার ভোর রাতে গৌরনদী বাসস্ট্যান্ডের একটি চায়ের দোকান থেকে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিটের মাধ্যমে আগুনের সূত্রপাত হয়।
মূহুর্তের মধ্যে আগুনের লেলিহান শিখা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। খবর
পেয়ে গৌরনদী, উজিরপুর, বাবুগঞ্জ ও বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের ৬টি
ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে সাড়ে তিন ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে সকাল সাতটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। এতে ২৪টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান
সম্পূর্ণ ভস্মীভূত ও ১৪টি দোকান আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তিনি আরও জানান, অগ্নিকান্ডে ব্যবসায়ীদের অন্তত: ২ কোটি টাকার ক্ষতি
হয়েছে। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে পারে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। সরকারিভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণের কাজ চলছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গৌরনদী ফায়ার ষ্টেশনের ১টি গাড়ি ঘটনাস্থলে পৌছে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করার সাথে
সাথে ষ্টেশনের পাম্পটি বিকল হয়ে পড়ে। এর দেড়ঘন্টা পর উজিরপুর,
বাবুগঞ্জ, বরিশাল থেকে ৩টি গাড়ি ঘটনাস্থলে পৌছে চেষ্টা চালিয়ে সকাল সাড়ে ৬টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। স্থানীয় ফায়ার স্টেশনের
পাম্প নষ্ট হওয়ায় ও অন্য ৩টি গাড়ি দেরিতে আসায় বেশী ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ব্যবসায়ীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
খবর পেয়ে মন্ত্রী পদমর্যাদায় পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ এমপি,

জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান, গৌরনদী উপজেলা চেয়ারম্যান
সৈয়দা মনিরুন নাহার মেরী, পৌর মেয়র মো. হারিছুর রহমান, ইউএনও
ইসরাত জাহান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।