লালমনি বহুভাষী সাটলিপি কম্পিউটার কমার্শিয়াল কলেজ এর নাম পরিবর্তন ও সদস্যপদ বাতিল বিষয়ে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জেলা প্রশাসক বরাবরে অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক । অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, শহরের মিশন মোড়স্থ বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোঃ গোলাম ফারুক গত ১৯৯১ খ্রি. ৪ এপ্রিল “লালমনি বহুভাষী সাটলিপি কম্পিউটার কমার্শিয়াল কলেজ” নামে একটি কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। তা যথারীতি বগুড়াস্থ নট্টামস এর অনুমোদনক্রমে কলেজে টাইপ ও শর্টহ্যান্ড শিখানোর স্বল্প মেয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্স পরিচালনা করেন। পরে ১৩-১৫ জানুয়ারি ১৯৯৫ খ্রি. বগুড়াস্থ নট্টামস এ উচ্চ মাধ্যমিক ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা শিক্ষা কোর্স চালু করার বিষয়ে ৩দিন ব্যাপী আলোচনা ও একটি সুপারিশমালা তৈরীকরণের কর্মশালায় উপস্থিত থেকে সুপারিশমালা মোতাবেক প্রতিষ্ঠানটিতে ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা কোর্স চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। এক পর্যায়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক ১৯৯৫ খ্রি. প্রত্যেক জেলা হতে কারিগরি শিক্ষা ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানের নামের তালিকা জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে গঠিত কমিটির মাধ্যমে চাওয়া হলে বিষয়ে প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানকে ১ নম্বর প্রতিষ্ঠান হিসেবে মনোনয়ন প্রদান করা হয় । এ মনোনয়নের পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক ১৯৯৫ খ্রি. বর্ণিত প্রতিষ্ঠানকে কারিগরি শিক্ষাক্রমের আওতাভুক্ত হয়। প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠালগ্ন হতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক স্বীকৃতি লাভ করা পর্যন্ত সার্বিক কর্মকান্ডে গোলাম ফারুকের স্ব-উদ্যোগে প্রতিষ্ঠানটি চালু করায় তৎকালীন কলেজ ব্যবস্থাপনা কমিটি তাকে আজীবন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেন। বর্ণিত প্রতিষ্ঠানের বর্তমান কর্মরত অধ্যক্ষ মোঃ এন্তাজুর রহমান প্ররোচনায় তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ এমদাদুল ইসলাম ফাতেমী ফারুকের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। বিষয়টি চরম আকার ধারণ করলে গোলাম ফারুককে প্রতিষ্ঠাতা সদস্য পদ হতে বাদ দেয়ার পরিকল্পনা করে। এক পর্যায়ে ফারুক বিজ্ঞ দেওয়ানী আদালতে মামলা আনয়নে বাধ্য হয়। যার মামলা নং- ৫৭/১৯৯৬। মামলা চলাকালীন সময়ে ১৯৯৭ খ্রি. তৎকালীন জেলা প্রশাসক কলেজের ভাবমূর্তি বজায় রাখার মানসে ব্যক্তিগত উদ্যোগ গ্রহণ করে প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট সকলের উপস্থিতিতে কলেজ প্রতিষ্ঠার যাবতীয় তথ্যাদি বিশ্লেষণ করে ফারুককে “আজীবন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য” হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেন এবং বিজ্ঞ দেওয়ানী আদালতের দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার করার অনুরোধ জানান। তৎপ্রেক্ষিতে তিনি মামলা প্রত্যাহার করেন । ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এমদাদুল ইসলাম ফাতেমী নিজ সুবিধা বিবেচনায় অন্যত্র চলে যাওয়ায় মোঃ এন্তাাজুর রহমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করে নির্বাচনী বোর্ড গঠনসহ বর্ণিত প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ লাভ করেন। অধ্যক্ষের এরুƒপ কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করায় ফারুকের সাথে পুনরায় মতবিরোধ সৃষ্টি হয়। ফলে ফারুক বাধ্য হয়ে প্রতিষ্ঠানের অর্থ আত্মসাতের প্রতিকারের জন্য কলেজ ব্যবস্থাপনা কমিটিসহ বিভিন্ন মহলে অভিযোগ আনয়ন করেন। অভিযোগের ফলে লালমনিরহাট ডিবি কর্তৃক অভিযোগ তদন্তে প্রাথমিকভাবে অভিযোগ সমূহ প্রমাণিত হওয়ায় ডিবি কর্তৃক লালমনিরহাট সদর থানায় একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়। যার নম্বর -১০, তারিখ ১০/০৯/২০০০ খ্রি. । অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনয়ন ও মামলা রুজু হওয়ায় তিনি ফারুককে প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হতে বাদ দেয়ার নোটিশ প্রদান করেন। এ নোটিশ মোতাবেক কলেজ ব্যবস্থাপনা কমিটি ১৯৭৭ এর ৭ (সি) নং উপধারা মোতাবেক কেন ফারুকের সদস্য পদ বাতিল করা হবে না এবং কেন তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না মর্মে জবাব চান হেতু ফারুককে উক্ত নোটিশের জবাব প্রদান করেন । অতপর আকস্মিকভাবে উক্ত কলেজের নাম পরিবর্তন করে “শেখ শফিউদ্দীন কমার্স কলেজ” নামকরণ করা হয়। অর্থাৎ প্রতিষ্ঠাতা সদস্য পদ হতে গোলাম ফারুককে বাদ দেয়ার লক্ষ্যেই বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সকল নিয়ম কানুন উপেক্ষা করে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে কলেজের নাম পরিবর্তন করে ০৭/০৮/২০০১ তারিখের ‘দৈনিক একটি পত্রিকায় ছাত্রছাত্রী ভর্তির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। গত ৩ নভেম্বর গোলাম ফারুকের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা প্রসাশক তদন্তের জন্য সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে নির্দেশ প্রদান করেছেন । উপজেলা নির্বাহী অফিসার অভিযোগটি সরেজমিনে তদন্ত পুর্বক প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য সহকারী কমিশনার ( ভুমি) জি আর সারোয়ারকে দায়িত্ব অর্পন করেছেন। এ ব্যাপারে অধ্যক্ষ এন্তাজুর রহমান বলেন, সাময়িকভাবে সম্মানহানীর জন্য ফারুকসহ কতিপয় ব্যাক্তি অপপ্রচার চালাচ্ছে । অভিযোগকারী ফারুক বলেন, সুষ্ট তদন্ত হলে প্রকৃত রহস্য বেড়িয়ে আসবে ।