লালমনিরহাট প্রতিনিধি।
বিএনপির ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতালে লালমনিরহাটে বেশ কয়েকটি স্থানে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে লালমনিরহাট সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য, গোকুন্ডা ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক নেতা ও মহেন্দ্রনগর ইউনিয়ন লোড আনলোড শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম নিহত হয়েছে। এ ছাড়া জেলার বিভিন্ন স্থানে উভয় দলের সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনায় অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে। ভাংচুর করা হয়েছে পুলিশ, সাংবাদিকের গাড়িসহ অন্তত ৪টি মোটর সাইকেল।
রোববার (২৯ অক্টোবর) সকালে লালমনিরহাট সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগরে আওয়ামী লীগ-বিএনপির সংঘর্ষে আহত হয় জাহাঙ্গীর আলম। এ সময় গুরুত্বর আহত জাহাঙ্গীর আলমকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেলে জাহাঙ্গীর আলম মারা যায়। নিহত জাহাঙ্গীর আলম গোকুন্ডা ইউনিয়নের বেড়পাঙ্গা এলাকার আজিজার রহমানের পুত্র।
সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকে লালমনিরহাটের বিভিন্ন স্থানে ঝটিকা মিছিল ও পিকেটিং করতে থাকে বিএনপির নেতাকর্মীরা। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সাপ্টীবাড়ী বাজারে জাতীয় মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা হরতালের সমর্থনে বিক্ষোভ করতে থাকে। এক পর্যায়ে আদিতমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল আলম হরতাল বিরোধী মিছিল নিয়ে বের হলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এ সময় বিএনপির ২জন কর্মীকে পিটিয়ে আহত করা হয়। পরে সকাল ১১টার দিকে আদিতমারী উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে মিছিল নিয়ে যায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এতে সংঘর্ষ শুরু হলে উভয় পক্ষের ২জন আহত হয়। এ সময় বিএনপির অফিসের চেয়ার ও সাইনবোর্ড ভাংচুর করে আওয়ামী লীগ সমর্থকরা। পরে সেখান থেকে পালিয়ে যায় বিএনপি নেতাকর্মীরা। বর্তমানে সেখানে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
একই সময় লালমনিরহাট সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগরে বিএনপি-আওয়ামীলীগ সংঘর্ষ হয়। এ সময় মহেন্দ্রনগর ইউনিয়ন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ, লালমনিরহাট সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য জাহাঙ্গীর আলম, আওয়ামী লীগ কর্মী বিপ্লব ও বাবলু মিয়াকে কুপিয়ে আহত করে হরতাল সমর্থকরা। এদের মধ্যে জাহাঙ্গীর আলম ও রাজু আহমেদের অবস্থা গুরুত্বর হওয়ায় তাকে লালমনিরহাট সদর হাসপাতাল থেকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় লালমনিরহাট সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য জাহাঙ্গীর আলম মারা যায়। এছাড়াও লালমনিরহাটের মিশন মোড় এলাকায় পুলিশের ২টি মটর সাইকেলসহ ৪টি মটর সাইকেলে ভাংচুর চালিয়েছে হরতাল সমর্থকরা।
সন্ধ্যায় লালমনিরহাটের মিশন মোড় চত্বরের পূর্ব পার্শ্বে অবস্থিত হামার বাড়ী (বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়) ভাংচুর করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ।
লালমনিরহাট সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ওমর ফারুক জানান, লালমনিরহাট শহরের আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় শহরের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।