// নাটোর প্রতিনিধি
নাটোরের বাগাতিপাড়ায় নিরাপত্তা কর্মী পদে চাকরি না পেয়ে স্কুলের প্রবেশপথে বাঁশের বেড়া দিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের পথ আটকে দেন জমির মালিক। প্রায় তিন ঘন্টা পর পুলিশ ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে ওই বেড়া খুলে দেওয়া হয়। সোমবার উপজেলার জামনগর দ্বি-মূখী উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানায়, সকাল ১১ টার দিকে জমির মালিক জামনগর কুঠিঘোষপাড়া গ্রামের মৃত নাজিম উদ্দিনের ছেলে জুয়েল আলী স্কুলের প্রবেশ পথে বাঁশ দিয়ে বেড়া দেন। এর ফলে স্কুলের প্রবেশমুখ আটকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের পথ বাধার মুখে পড়ে। জমির মালিক জুয়েল আলী জানান, ক্রয়সূত্রে তার বাবা নাজিম উদ্দিন স্কুলের প্রবেশমুখের জমির মালিক। প্রায় ৪০ বছর থেকে যাতায়াতের জন্য স্কুল ওই জমি ব্যবহার করে। গত বছরের অক্টোবর মাসে ওই বিদ্যালয়ে চাকুরির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলে স্কুল কর্তৃপক্ষের সাথে জমির বিনিময়ে নিরাপত্তা কর্মী পদে তার প্রতিবন্ধী ও শিক্ষিত ভাই রিয়েল আহম্মেদের চাকরি দেওয়া কথা হয়। সেমোতাবেক তার ভাই রিয়েল ওই পদে আবেদন করেন এবং পরীক্ষায় অংশ নেন। কিন্তু বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে নিয়োগ না দিয়ে স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে অন্য আরেকজনকে নিয়োগ দিয়েছেন। এরপর বিষয়টি নিয়ে আবারো কথা হলে জমির মূল্য বাবদ তিন লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা হয়। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ তা দেননি। বরং দুই-তিন দিন আগে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাজেরা খাতুন তাদের (জুয়েলের) জমি আর ব্যবহার করবেন না বলে জানান। এ ঘটনার পর সোমবার তিনি (জুয়েল) তার জমির সীমানায় বাঁশ দিয়ে বেড়া দেন। এতে স্কুলের পথের প্রবেশ মুখ আটকা পড়ে। পরে স্থানীয় মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এবং থানার ওসি বিষয়টি সুরাহা করার আশ্বাস দিলে তিনি বাঁশের বেড়া খুলে দেন। জামনগর দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাজেরা খাতুন বলেন, ১৯৪৬ সালে প্রতিষ্ঠা লাভের পর থেকেই স্কুল যাতায়াতের জন্য ওই পথ ব্যবহার করছে। পাকা রাস্তা থেকে মাত্র সামান্য জমি অন্য মালিকানায় রয়েছে। জমির বিনিময়ে চাকরি দাবি করলেও নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে চাকরিতে তাদের প্রার্থী উত্তীর্ণ হননি। এরপর ক্ষিপ্ত হয়ে জমির মালিক বাঁশ দিয়ে স্কুলের পথ ঘিরে দেন। পরে দুইটার দিকে পুলিশ ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে তা খুলে দেন।
এ ব্যাপারে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি বেলাল হোসেন বলেন, একটি পক্ষ বিদ্যালয়ের প্রবেশ পথে বাঁশের বেড়া দিয়েছিল। তবে তাদের সমস্যার সামাধান করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আঃ রাজ্জাক বলেন, বিদ্যালয়ের প্রবেশপথের ওই জমি ব্যক্তি মালিকানা। বেড়া দেওয়ার খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে বেলা দুইটার দিকে স্কুলের অফিসে উভয়পক্ষকে নিয়ে একটি বৈঠকে বসা হয়েছিল। সেখানে আইনগতভাবে জমি গ্রহনের জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে।
বাগাতিপাড়া মডেল থানার ওসি শফিউল আযম খাঁন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয় এবং বাঁশের বেড়া উচ্ছেদ করা হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।