// নাটোর প্রতিনিধি
নাটোরের সিংড়া পৌরসভার বেশ কিছু এলাকায় নেশা ও জুয়ার টাকা জোগাতে বেড়েছে চুরি। হাঁস-মুরগি, ছাগল, মোবাইল, নগদ টাকা চুরি হচ্ছে দিনদুপুরে ও মধ্যরাতে।
সোমবার (১৯ জুন) গভীররাতে চকসিংড়া কবরস্থান পাড়া ও শোলাকুড়া মহল্লার দুটি বাড়ি থেকে কয়েকটা হাঁস ও মুরগি চুরি হয়। নকল চাবি দিয়ে তালা খুলে হাঁসের ঘর থেকে এসব হাঁস চুরি করা হয়। শুধু তাই নয় সম্প্রতি একই মহল্লার অপর একজনের বাড়ি থেকেও কয়েকটি মুরগি চুরি হয়। এছাড়াও প্রায় সময়ই বাড়ি থেকে মোবাইল, টাকা ও ছাগল চুরি হয়।
এতদিন মাদকের ব্যবসা চললেও এলাকায় নতুন করে শুরু হয়েছে জুয়ার আসর। মাসখানেক থেকে চলছে চকসিংড়া ও শোলাকুড়া মহল্লার বিলের মধ্যে দুটি জুয়ার আসর। প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত চলে বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত ব্যক্তিদের নিয়ে চলে জুয়ার জমজমাট আসর। এতে নিঃস্ব হচ্ছে যুবসম্প্রদায়। বাড়ছে পারিবারিক কলহ ও দ্বন্দ্ব।
সূত্রে জানা যায়, সিংড়া পৌরসভার পেট্রোবাংলা, চকসিংড়া পূর্বপাড়া, চকসিংড়া কবরস্থান পাড়াসহ কিছু এলাকায় বেড়েছে মাদক কেনাবেচা ও জুয়ার আসর। চকসিংড়া কবরস্থানের নিচের উঁচু ভিটা ও শোলাকুড়া মাদ্রাসার পূর্ব-উত্তর দিকের বাগানে প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত চলে জুয়ার আসর। এদিকে মাদকের রমরমা ব্যবসা চলছে। জুয়া ও মাদকের টাকা জোগাতে প্রায় বাড়িতেই দিনে ও রাতে সংঘটিত হচ্ছে চুরি। চকসিংড়া কবরস্থান পাড়া, পূর্ব পাড়া ও পেট্রোবাংলার চিহ্নিত কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী চালিয়ে যাচ্ছে মাদকের রমরমা ব্যবসা। যাদের বিরুদ্ধে থানায় অসংখ্য মামলা রয়েছে। কারাগার থেকে বের হয়ে এসেই আবার জড়িয়ে পরছে মাদকের ব্যবসায়। চুরি সংঘটিত হওয়ার পেছনে মাদক ও জুয়াকে দায়ী করছেন এলাকাবাসী ও ভূক্তভোগীরা। এতে অতিষ্ঠ ও চরম ক্ষিপ্ত তারা।
চকসিংড়া কবরস্থান পাড়ার ভূক্তভোগী আবুল কালাম আজাদ বলেন, জুয়া ও নেশার জন্য টাকা জোগাতে চুরি বেড়েছে। আমার ঘরের তালা নকল চাবি দিয়ে খুলে ৩টি হাঁস নিয়ে গেছে। থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
একই মহল্লার হাসি বেগম বলেন, সম্প্রতি আমার বাড়ি থেকেও মুরগি চুরি হয়েছে। মাদক ও জুয়া বন্ধ না হলে চুরি-ছিনতাই বন্ধ হবে না। প্রশাসনের কাছে দাবি করছি, দ্রুত মাদক ব্যবসা ও জুয়ার আসর বন্ধ করা হোক।
গোলাম রাব্বানী ও আতাউর রহমান নামের দুজন এলাকাবাসী জানান, প্রতিদিন আমাদের এলাকায় নতুন নতুন মানুষের আগমণ ঘটে। তারা এসে মাদক নিয়ে আবার চলে যায়।
মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, এখানে দিনদুপুরে প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি হয়। সারারাত চলে জুয়া। এসব অনৈতিক কাজের টাকা জোগাতে এলাকায় বেড়েছে চুরি। আমরা খুবই অতিষ্ঠ। এসব বন্ধে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
সিংড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, আমরা মাদক নিয়েই কাজ করছি। মাদক ব্যবসা ও সেবন আগের চেয়ে অনেকাংশে কমে গেছে। শীঘ্রই পেট্রোবাংলা, চকসিংড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হবে।