হেকমত আলী ঃ সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষ ড. হুমায়ুন কবির মজুমদারের খুঁটির জোর কোথায়। দুর্নীতি দমন কমিশনের এজাহারভূক্ত আসামি হয়েও আদালত থেকে জামিন না নিয়ে অধ্যক্ষের পদে কিভাবে বহাল আছেন তা কলেজের শিক্ষকবৃন্দ ও শিক্ষার্থীসহ পাবনাবাসীর কাছে প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয় পাবনা‘র মামলা নং ৪, তাং ৭/৬/২০২১ ইং থেকে জানা যায় ই/ আর নং ১৯/২০১৭ অনুসন্ধানকালে ঘটনাস্থ পরিদর্শন, সংগৃহীত / প্রাপ্ত রেকর্ডপত্র ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের বক্তব্য পর্যালোচনায় দেখা যায়,অভিযুক্ত সংশ্লিষ্ট অধ্যক্ষ ড. হুমায়ুন কবির মজুমদার সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ পাবনাতে ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর হতে অদ্যবধি অধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি প্রতিষ্ঠান প্রধান ও আয়ন ব্যয়ন কর্মকর্তা ( ডিডিও) হিসাবে সকল হিসাব পরিচালনা করেন। সরকারি কলেজের সংশ্লিষ্ট হিসাব হতে টাকা উত্তোলন / ব্যয়ের ক্ষেত্রে সরকারি বিধি বিধানসহ শিক্ষা মন্ত্রনালয় বাংলাদেশ সচিবালয় হতে ২০১৪ সালের ৬ জুলাই জারীকৃত পরিপত্র প্রতিপালন করা বাধ্যতামূলক ছিল। অভিযুক্ত হুমায়ুন কবির মজুমদার সরকারি বিধি বিধান ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র তোয়াক্কা না করে গত ২০১৬ – ১৭ অর্থবছরে ছাত্র সংসদের কার্যক্রম দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা সত্ত্বেও উক্ত তহবিল ( হিসাব নং ০২০০০০৫৩৫২৫৮৯) হতে ৫ জন ছাত্রনেতা ও কর্মচারীর নামে জালিয়াতিমূলকভাবে ভূয়া আবেদনপত্র ও বিল / ভাউচার তৈরী করে নিজেই অনুমোদন করত: ১৫ টি চেকের মাধ্যমে ৫, ০২,০০০/- টাকা , উন্নয়ন তহবিল ( হিসাব নং ০২০০০০৫৩৫২৬৫৫) হতে উন্নয়ন কমিটির সুপারিশ ছাড়াই কোটেশন ব্যতীত ভূয়া আবেদন ও বিল ভাউচার প্রস্তুতপূর্বক নিজেই অনুমোদন করত: ৩৮ টি চেকের মাধ্যমে ১৯,৯৯,২৩৮ /- টাকা এবং বিবিধ তহবিল ( হিসাব নং ০২০০০০৫৩৪২৮১৬) এর অর্থ ব্যয় সংক্রান্ত বাস্তবায়ন কমিটি গঠন না করেই ভূয়া আবেদনপত্র ও বিল / ভাউচার প্রস্তুতপূর্বক নিজেই অনুমোদন করত: উক্ত তহবিল হতে ৩৭ টি চেকের মাধ্যমে অসৎ উদ্দেশ্যে প্রতারনা ও জালিয়াতি মূলকভাবে ভূয়া আবেদনপত্র ও ভাউচারাদী প্রস্তুত পূর্বক অপরাধমূলক অসদাচারনের মাধ্যমে নিজেই অনুমোদন করত: কলেজের ছাত্র সংসদ, উন্নয়ন তহবিল, বিবিধ তহবিল এবং ভর্তি কার্যক্রম ও ফরম পূরণ তহবিলের ৫৬, ০৮৯৮৬/- টাকা অগ্রনী ব্যাংক লিঃ কলেজ গেইট শাখা পাবনা হতে চেকের মাধ্যমে উত্তোলন করত: অপরাধমূলক বিশ^াসভঙ্গের মাধ্যমে আতœসাত করে দন্ডবিধির ৪০৯/৪২০/৪৬৭৪৬৮/৪৭১ ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) আসামী হুমায়ুন কবির মজুমদার ( ৫৬) , অধ্যক্ষ সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ পাবনা, পিতা মৃত আহমেদ মিয়া, সাং শ্যামপুর, ডাকঘর শাহরাস্তি, থানা ও জেলা : চাঁদপুর ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। দীর্ঘ দুই বছর তদন্ত শেষে দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয় পাবনার সহকারী পরিচালক শহীদুল আলম সরকার বাদী হয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয় পাবনার ই / আর মামলা নং ০৪ ( পাবনা), তাং ৭/৬/২০২১ ইং, দন্ডবিধি ৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১ এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় মামলা রুজু করা হয়। কলেজের কয়েকজন শিক্ষক জানান, মামলা হওয়ার পর থেকে উক্ত অধ্যক্ষ সাবইকে সন্দেহ করেন এবং বিভিন্ন সময়ে মানুষিক ভাবে নির্যাতন করে আসছেন। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী একজন প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা ৩ বছর পর পর কর্মস্থল থেকে বদলী হন। অথচ একজন দুদকের আসামী কিভাবে ৮ বছর এখানে আছেন তা আমাদের বোধ্যগম্য নয়। তারা আরও জানান অধ্যক্ষর খুঁটির জোর কোথায়। যেখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চান দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়তে। সেখানে এই দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষ কিভাবে এত বছর এখানে থাকেন। অধ্যক্ষর দুর্নীতির ফিরিস্তি জানিয়ে অনেক শিক্ষক বলেন দুদক এক বছরে যদি ৫৬ লক্ষ টাকার দুর্নীতি পায় তা হলে এই ৮ বছরে কত টাকা দুর্নীতি হয়েছে তার হিসাব করা প্রয়োজন। দুর্নীতি দমন কমিশনের নিরবতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন কলেজের অনেক শিক্ষক। পাবনার কৃতিসন্তান গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের নবনির্বাচিত ২২ তম মহামান্য রাস্ট্রপতি মুহা. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু এবং ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু এবং পাবনা সদর আসনের সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্স দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষর বিরুদ্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ নিবেন বলে সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের সচেতন শিক্ষক ও ২৬ হাজার শিক্ষার্থী আশাবাদী। এ ব্যাপারে পাবনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আ স ম আব্দুর রহিম পাকন বলেন, দুদকের আসামী হওয়া সত্ত্বেও এত বছর কিভাবে পাবনার ঐতিহ্যবাহী সরকারি এডওয়ার্ড কলেজে অধ্যক্ষ পদে হুমায়ুন কবির মজুমদার বহাল আছেন তা তার বোধগম্য নহে। তিনি অতি সত্ত্বর এই দুনীতিবাজ অধ্যক্ষর বিরুদ্ধে আইগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।