অবশেষে রূপপুর প্রকল্পের অধিগ্রহণকৃত জমির ফসলের ক্ষতিপূরণ পেলেন কৃষক

// ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতাঃ
দীর্ঘ পাঁচ বছর পর ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা ঈশ্বরদীতে নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের (আরএনপিপি) অধিগ্রহণকৃত জমির ফসলের ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। সোমবার (১৩ মার্চ) বিকেলে উপজেলা পরিষদের মিলনায়তনে ক্ষতিগ্রস্থ ২৮ জন কৃষকের হাতে ক্ষতিপূরণের চেক তুলে দেওয়া হয়।

জানা যায়, ২০১৭ সালে চরাঞ্চলের ৯৯০ একর খাস জমি প্রকল্পের জন্য অধিগ্রহন করা হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নের আগে এসব অব্যবহৃত খাস জমিতে স্থানীয় কৃষকেরা ফসলের চাষাবাদ করতেন।  প্রকল্প বাস্তবায়নের স্বার্থে মানবিক দিক বিবেচনা করে ফসলের ক্ষতিপূরণ প্রদানের লক্ষ্যে অস্থায়ীভাবে ৮০০ একরে চাষাবাদকারী ৬২৫ জন এবং ১৯০ একরে ১৫০ জনসহ মোট ৭৭৫  জনের তালিকা প্রস্তুত হয়। পরমাণু শক্তি কমিশন ঢাকার ২০১৭ সালের ২০ নভেম্বর জেলা প্রশাসক পাবনা বরাবরে ফসলের ক্ষতিপূরণের জন্য ২৭ কোটি ৩৪ লাখ ৮৭ হাজার ৯৯০ টাকা বরাদ্দ করেন। এই ক্ষতিপূরণের অর্থ জেলা প্রশাসক ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে ওই বছরের ১৭ ডিসেম্বর প্রেরণ করেন। এ প্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের ৫ জুলাই ৬৪ জনকে ১ কোটি ৭৫ হাজার ৫৫০ টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে কৃষকরা নতুনভাবে তালিকায় নাম অর্ন্তভূক্তির জন্য মামলা মোকদ্দমায় জড়িয়ে পড়লে ক্ষতিপূরণ  প্রদান বন্ধ হয়ে যায়। পাবনা যুগ্ম জেলা জজ ২য় আদালতের অপর ৫১২/১৭নং মোকাদ্দমার আদেশে ৫ জনকে ১০ লাখ ৮৮ হাজার ৩৯১ টাকা  ২০১৯ সালের ১ আগষ্ট প্রদান করা হয়।

এবিষয়ে এরই মধ্যে হাইকোর্টের রীট পিটিশনের রায় এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক ৩১৪ জনকে সর্বমোট ২০ কোটি ২৪ লাখ ৫৯ হাজার ৮৫৫ টাকা প্রদান করা হয়েছে।

রীট পিটিশন ৫২৮৩/২২ এর নির্দেশনা মোতাবেক সোমবার ( ১৩ মার্চ) ২৮ জন কৃষককে ৮৪ লক্ষ টাকা ফসলের ক্ষতিপূরণের অনুদান প্রদান হলো। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা সোনালী ব্যাংক ঈশ্বরদী শাখায় স্ব-স্ব ব্যাংক একাউন্টের অনুকূলে চেক প্রদান করা হয়েছে বলে ইউএনও জানিয়েছেন। তিনি আরও জানান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এর নির্দেশনা অনুযায়ী ফসলের ক্ষতিপূরণের শতকরা ৩ ভাগ উৎসে কর হিসেবে সরকারি কোষাগারে ট্রেজারী চালানের মাধ্যমে জমা প্রদান করা হচ্ছে।

সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার পি এম ইমরুল কায়েস। সহকারি কমিশনার (ভূমি) টি এ রাহসিন কবীর, পাকশী ইউপির চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিন্টু বিশ্বাসসহ ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক ও সাংবাদিরা  এসময় উপস্থিত ছিলেন।

দীর্ঘদিন পর ফসলের ক্ষতিপূরণের অনুদান পেয়ে উপস্থিত কৃষকরা সন্তোষ প্রকাশ করেন।