মুজিব বর্ষ উপলক্ষ্যে পাবনায় প্রথম চাটমোহরের মথুরাপুর গ্রামে সমলয়ে রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে হাইব্রিড বেরো ধান চাষ পদ্ধতি উদ্বোধন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে পাবনার জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ সমলয়ে যান্ত্রিক এ চাষ পদ্ধতির উদ্বোধন করেন। জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ জানান, দেশে অর্থনৈতিক উন্নয়নের ছোয়া লেগেছে। বর্তমানে কৃষি শ্রমিকের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। কৃষি ব্যবস্থা যান্ত্রিকিকরণ করা হচ্ছে। সমলয়ে সমবায় ভিত্তিক কৃষি ব্যবস্থাপনা চালু হচ্ছে। বীজ বপন থেকে ফসল কাটা পর্যন্ত পুরো প্রক্রিয়াটি আমরা যান্ত্রিকিকরণের মাধ্যমে সম্পন্ন করতে ৫০ একর জমিতে পরীক্ষা মূলক ভাবে চাষ করছি। কৃষি মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে আমরা এ পদ্ধতি বাস্তবায়ন করছি। এটি সফল ভাবে বাস্তবায়ন করতে পারলে আগামিতে সবাই সুফল দেখতে পাবেন। আমি নিশ্চিত ভাবে বলতে পারি আগামি দিনে কৃষক এ প্রক্রিয়া অনুসরণ করবে।
কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর পাবনার উপ-পরিচালক আব্দুল কাদের জানান, আমরা মেকানাইজেশন পদ্ধতিতে বোরো ধানের চারা বপন করছি। আমাদের উদ্দেশ্য হলো কম খরচে বেশি উৎপাদন। যন্ত্রের মাধ্যমে ৮ ইঞ্চি পর পর মাটিতে তিনটি করে চারা চলে যাচ্ছে। এতে চারা থেকে চারার সঠিক দূরত্ব নিশ্চিত হচ্ছে। কম শ্রমিক লাগছে। পোকা মাকড়ের আক্রমন কম হবে। রোগ ব্যাধি কম হবে। যান্ত্রিক পদ্ধতিতে আগাছা দমন করা যাবে। সাধারণ বোরো ধানের ফলন যখন হেক্টর প্রতি ৬ টন তখন যান্ত্রিক এ চাষ পদ্ধতিতে হাইব্রিড বোরো ধান আবাদ করে কৃষক হেক্টর প্রতি সাড়ে দশ থেকে ১২ টন পর্যন্ত চিকন রপ্তানী যোগ্য ধান পাবেন। এ চাষ পদ্ধতি বিস্তৃত হলে আমরা চালের আন্তর্জাতিক বাজার ধরতে পারবো। আমরা একদিকে কৃষি যান্ত্রিকিকরণ এবং অন্যদিকে উচ্চ ফলনশীল বোরো ধান চাষের দিকে এগুচ্ছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ.এ.মাসুম বিল্লাহ জানান, মুজিব জন্ম শত বর্ষে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চাটমোহর পাবনার অধীনে রবি ২০২০-২১ মৌসুমে ৭৫ জন কৃষকের ৫০ একরের বøক প্রদর্শনী স্থাপনের মাধ্যমে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচীর আওতায় সমলয়ে হাইব্রিড জাতের বোরো ধানের চাষ করা হচ্ছে। এ পদ্ধতিতে একই জমিতে একই প্রকার ফসলের আবাদ হবে। এবছর বোরো চাষের জন্য প্লাষ্টিকের ট্রেতে বীজ তৈরী করা হয়েছে। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে এ পদ্ধতিতে বোরো ধান চাষে উৎপাদন খরচ কম হবে এবং সময় সাশ্রয় হবে। তিনি আরো জানান, চলতি মৌসুমে চাটমোহরে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৯ হাজার ৭শ ৭০ হেক্টর। এ এলাকায় সাধারণত হাইব্রীড এস এল ৮, হীরা, উফশী ব্রীধান-২৮, ব্রীধান-২৯, ব্রীধান-৫১ ও ব্রীধান-৭৯ জাতের ধান চাষ বেশি হয়ে থাকে। বর্তমান বাজারে ধানের দাম বেশি। আশা করছি কৃষক লাভবান হবেন। যারা সমলয় পদ্ধতিতে চাষাবাদ করবেন তারা আরো বেশি সুফল পাবেন।
এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চাটমোহর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল হামিদ মাস্টার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈকত ইসলাম, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রভাষক পারভীন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) শারমিন ইসলামসহ কৃষক এবং কৃষি অফিসের অন্যান্য কর্মকতাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।