রাজশাহীর পুঠিয়ায় নেশার টাকার জন্য স্ত্রী পলি খাতুন (২৫) ও ৫ মাসের শিশু কন্যা ফারিয়াকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে মাদকাসক্ত পাষন্ড স্বামী ফিরোজ আলী (৩৫)। এসম ঘুমিয়ে থাকার কারণে বেঁচে গেছে আড়াই বছরের একমাত্র শিশুপুত্র ফাহিম আলী। সোমবার দিবাগত রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে উপজেলার গোপালহাটি গ্রামের ফকিরপাড়া এলাকায় মর্মান্তিক এ হত্যাকাÐের ঘটনা ঘটে। রাতে ফাহিম আলীর কান্না শুনতে পেয়ে ফিরোজের বাবা-মা ঘরে ঢুকেন। এ সময় তারা পলি ও ফারিহাকে বিছানায় মৃত অবস্থায় পান। বিষয়টি জানাজানি হলে পুলিশ যায়। গতকাল মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি) সকালে মরদেহ দুটির সুরতহাল শেষ করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায় পুলিশ। এর আগে ভোরে ঢাকার গাবতলী এলাকায় একটি যাত্রীবাহী বাস থেকে ঘাতক ফিরোজকে আটক করা হয়। পুলিশ লাশ দুটির পাশ থেকে একটি বালিশ জব্দ করেছে। পুলিশের ধারণা এই বালিশ চাপা দিয়েই স্ত্রী-কন্যাকে হত্যা করেছেন ফিরোজ আলী। এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ফিরোজ আলী বিয়ের আগে থেকেই নেশাগ্রস্থ ছিলেন। চার বছর আগে পুঠিয়া পৌরসভার কৃষ্ণপুর পশ্চিমপাড়া মহল্লার জুলহাস আলীর মেয়ে পলি খাতুনের সাথে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে নেশার টাকার জন্য তিনি বাড়ির বিভিন্ন জিনিসপত্র বিক্রি করতেন। এ নিয়ে তার স্ত্রীর পলির সাথে মাঝে মধ্যেই ঝগড়া বিবাদ হতো। মাঝে মধ্যে ফিরোজ তার স্ত্রীকে শারিরিক নির্যানত চালাতেন। নেশার টাকার জন্য এ হত্যাকাÐ ঘটেছে বলে পুলিশ ধারণা করছে। এবিষয়ে পুঠিয়া থানার (ওসি) রেজাউল ইসলাম জানান, ফিরোজ আগে বাসে সুপারভাইজার হিসেবে কাজ করতেন। একটি সড়ক দুর্ঘটনায় তার এক পা কাটা পড়ে। এরপর থেকে তিনি অতিমাত্রায় হেরোইনে আসক্ত হয়ে পড়েন। মাঝে মধ্যে টাকা চাওয়ায় স্ত্রীর পলি খাতুনের সাথে প্রায়ই ঝগড়া করতেন ফিরোজ। এই রাগে স্ত্রী ও কন্যা শিশুকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। ওসি জানান, মৃতদের শরীরের কোথাও আঘাতের চিহ্ন না থাকায় এবং পাশে বালিশ পড়ে থাকায় ধারণা করা হচ্ছে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। ওসি আরও জানান, তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় রাতেই ফিরোজের অবস্থান নিশ্চিত হওয়া যায়। এরপর ঢাকার পুলিশের সহায়তায় গাবতলী থেকে তাকে আটক করা হয়। তাকে রাজশাহী আনা হচ্ছে। আর এ নিয়ে ফিরোজকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হযেছে।