আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে যুক্ত হলেন মেজর জেনারেল (অব:) ফসিউর

বিশেষ প্রতিনিধি

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য নির্বাচিত হলেন পাবনার কৃতি সন্তান অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল ডা. মো. ফসিউর রহমান (এনডিসি)। রবিবার আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ২০১৯-২০২২ মেয়াদে ৫১ সদস্যবিশিষ্ট এই উপ-কমিটির অনুমোদন দেন। ফসিউর রহমানের জন্মস্থান পাবনার চাটমোহর উপজেলার চরপাড়া গ্রামে। এদিকে চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার পরপরই কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত হওয়ায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে ফসিউর রহমানকে নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনার শুরু হয়েছে।

এর আগে বাংলাদেশ সরকার এ বছরে স্বশস্ত্র বাহিনী থেকে মেজর জেনারেল ড. মো. ফসিউর রহমানকে শুদ্ধাচার পুরস্কারের জন্য মনোনীত করে। গতবছর স্বশস্ত্র বাহিনী থেকে এই পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রধান।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেডিকেল কোরে সরাসরি ক্যাপ্টেন পদে যোগদান করেন পাবনার এই কৃতীসন্তান ফসিউর রহমান। পর্যাক্রমে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদর দফতর, বিভিন্ন ফিল্ড অ্যাম্বুলেন্স, মেডিকেল ইউনিট, সিএমএইচ এবং প্রেষণে বাংলাদেশ রাইফেলস্-এর বিভিন্ন সেক্টর ও পাবনা ক্যাডেট কলেজে সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন মোজাম্বিক, সিয়েরালিয়ন এবং লাইবেরিয়ায় দায়িত্ব পালন করেন। মেজর জেনারেল ফসিউর রহমান ডেপুটি কমান্ড্যাণ্ট পদে সিএমএইচ-ঢাকা সেনানিবাস, চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক এবং আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজ, ঢাকা সেনানিবাসের কমান্ড্যাণ্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সামরিক চিকিৎসা সার্ভিস মহাপরিদফতরের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে অবসরে যান।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, বর্তমান সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের সঙ্গে ফসিউর রহমান ও তার পরিবারের সুসম্পর্ক রয়েছে। এই পরিবারের অনেকেই বর্তমানে প্রশাসনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত রয়েছেন। এতে চাকরি জীবন শেষ করেই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার সুযোগ পান তিনি। কর্মজীবনে জেনারেল ড. মো. ফসিউর রহমান সর্বত্র রেখেছেন অসামান্য অবদান ও সততার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। মেধা ও কর্মদক্ষতা দিয়ে তিনি বর্তমান সরকারের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে নানাভাবে ভূমিকা রেখেছেন।

পাবনার চাটমোহর উপজেলার চরপাড়া গ্রামের শিক্ষাবিদ প্রয়াত দেল মাহমুদ ও প্রয়াত রত্নগর্ভা মা জছিমন মাহমুদ দম্পতির দ্বিতীয় সন্তান হলেন মেজর জেনারেল ড. মো.ফসিউর রহমান। উক্ত দম্পতির প্রথম সন্তান প্রফেসর ডাক্তার মো. জাহাঙ্গীর আলম সরকারি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে অবসর গ্রহণ করে বর্তমানে একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তৃতীয় সন্তান বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বর্তমানে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল, চতুর্থ সন্তান একমাত্র কন্যা দেলেয়ারা মাহমুদ দিলু (বিএসসি সম্মান, এমএসসি) বগুড়া জাহিদুর রহমান মহিলা ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপিকা হিসেবে কর্মরত অবস্থায় ২০১২ সালের ২১ অক্টোবর মৃত্যুবরণ করেন। পঞ্চম সন্তান এএইচএম জাকির হোসেন (বিএসসি-এজি) ভূমি উন্নয়ন কর্মকর্তা এবং কনিষ্ঠ সন্তান ওয়াই এম বেলালুর রহমান বাংলাদেশ পুলিশের বর্তমান ডিআইজি- তিনি পুলিশ সদর দফতরে ডিআইজি ক্রাইম ম্যানেজমেন্ট হিসেবে দায়িত্বপালনের পাশাপাশি ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ, মিরপুর, ঢাকায় এনডিসি কোর্স করছেন। চাটমোহরের সম্ভ্রান্ত এই পরিবারের সদস্যরা কর্মজীবনে চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুর উপজেলার মানুষের প্রয়োজনে পাশে দাঁড়ান।

ফসিউর রহমানের নিকট আত্মীয় ভাঙ্গুড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আব্দুল জব্বার ছানা মাস্টার বলেন, তৎকালীন বিএনপি-জামাত সরকারের আমলে প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকেও আওয়ামী লীগের স্বপক্ষে আদর্শিক কারণে অনেক সময় বিএনপির রোষানলে পড়়তে হয়েছে তাকে। একসময় তিন ভাইকে খাগড়াছড়ি বদলি করা হয়েছিল। এ কারণে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে তার সরাসরি যুক্ত হওয়ায় স্থানীয় নেতাকর্মীরা আনন্দিত।