ইয়ানূর রহমান : যশোরের বাঘারপাড়ার এক বিএনপি নেতাকে বাড়ি থেকে উঠিয়ে থানায় নিয়ে চাঁদা দাবি ও চাঁদা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় পায়ে গুলি করার অভিযোগে আদালতে মামলা হয়েছে। এতে আসামি করা হয়েছে সাবেক এমপি রনজিৎ রায় ও সাবেক পুলিশ সুপার আনিছুর রহমান সহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে।
ঘটনার আট বছর পর মামলাটি করেছেন বাঘাপাড়া নলডাঙ্গা গ্রামের মৃত নেছার আলীর ছেলে ভিকটিম আবু সাইদ। অন্য আসামিরা হলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম (খ সার্কেল), বাঘাপাড়া থানার তৎকালীন অফিসার ইনচার্জ ছয়রুদ্দীন আহম্মেদ, এসআই হান্নান শরীফ, এসআই সোহাগ, এএসআই মাসুদুর রহমান, এএসআই শরিফুল ইসলাম, কনস্টেবল আবু তালেব, সেলিম, আবু সাইদ, মাহাবুবু আলম, নলডাঙ্গা গ্রামের মফেজ গাজীর ছেলে ইউনুস, মৃত খালেক বিশ্বাসের ছেলে বাকু বিশ্বাস, কৃষ্ণনগরের বদর মন্ডলের ছেলে সালাম মন্ডল। অভিযোগ আমলে নিয়ে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার দালাল সিআইডি যশোর জোনকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন
বাদী পক্ষের আইনজীবী রুহিন বালুজ।
মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, তিনি বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। ২০১৬ সালের ১০ জুন রাত ১০টার দিকে এমপি রণজিৎ রায়, ইউনুস, বাকু বিশ্বাসের ইন্ধনে একদল পুলিশ তার বাড়িতে হানা দেয়। পরে জোর করে তাকে বাঘারপাড়া থানায় নিয়ে যান। একইসাথে আবু সাইদের পরিবারকে থানায় আসতে বলেন। পরে স্বজনেরা ওসির সাথে কথা বললে তিনি জানান দশ লাখ টাকা লাগবে, অন্যথায় সাইদকে ক্রস ফায়ারে
দেয়া হবে। বাধ্য হয়ে স্বজনেরা দুই লাখ টাকা ওসির হাতে তুলে দেন। ওই টাকা পুলিশ গ্রহণ করে এরপর বাকি আট লাখ টাকার জন্য চাপ দিতে থাকেন। টাকা দিতে না পারায় থানা থেকে বের করে দেয় সাইদের পরিবারকে।
মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, মধ্যরাতে সাইদকে নিয়ে বাঘারপাড়ার তেলিধান্যপোড়া গ্রামের একটি ইটভাটার পাশে নিয়ে ডান পায়ে গুলি করে ফেলে
চলে যায়। রাত সাড়ে ৩টা ৫০ মিনিটে খবর পেয়ে সাইদের পরিবার সাইদকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। অন্যদিকে পুলিশ সাইদের নামে একটি সাজানো অস্ত্র মামলা করে। এরপর সাইদকে পুলিশ পাহারায় রেখে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে ডান পায়ের উপর থেকে কেটে দেয়। এছাড়া হাসপাতালের সকল কাগজপত্র পুলিশ ছিনিয়ে নেয়। এছাড়া এসব বিষয়ে মামলা করলে সাইদকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।
বাধ্য হয়ে তারা এতদিন নিশ্চুপ ছিলেন। পরিস্থিতি স্বাভাকি হওয়ায় তিনি আদালতে এ মামলা করেন।#