বিনা চাষে রসুন আবাদে ব্যস্ত চাটমোহরের কৃষক

ইকবাল কবীর, চাটমোহর (পাবনা)
ব্যাপক রসুনের আবাদ হওয়ায় এবং মসলা ফসল রসুন চাষ করে লাভবান হওয়ায় চাটমোহরে রসুন এখন “সাদা সোনা” খ্যাতি পেয়েছে। ইতিমধ্যেই চলতি মৌসুমে রসুন লাগানোর কাজ শুরু হয়েছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রসুন ক্ষেত মুখরিত থাকছে নারী-পুরুষ শ্রমিকের কোলাহলে। বাড়তি আয়ের জন্য নারী শ্রমিকেরা কাক ডাকা ভোড়ে ঘুম থেকে উঠে বাড়ির সবার জন্য খাবার তৈরী করে নিজেরা খেয়ে গৃহস্থের জমিতে রসুন রোপনে বেড়িয়ে পরছেন। গতকাল সরেজমিন চাটমোহরের মাঠ গুলোতে চোখে পরে এমন দৃশ্য।
চাটমোহর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর চাটমোহরে রসুন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬ হাজার ১শ হেক্টর। ইতিমধ্যে এক হাজার ৮শ হেক্টর জমিতে রসুন বীজ বপন করা হয়েছে।
চিনাভাতকুর গ্রামের রসুন চাষী আজিরুদ্দীন জানান, বিল থেকে বর্ষার পানি নেমে যাবার পর জমি চাষ না করে নরম কাদামাটিতে সার ছিটিয়ে রসুন কোয়ার অর্ধেকটা পুতে দেওয়া হয়। এর পর খড়, কচুরীপানা দিয়ে পুরো জমি ঢেকে দেয়া হয়। এক বিঘা জমিতে রসুন চাষে ৪ মণ রসুনের বীজ লাগে; যার মূল্য ১৬ হাজার টাকা, বীজ বপনে শ্রমিক খরচ পরে ৭ হাজার ২শ টাকা, ড্যাপ, পটাশ, ইউরিয়া সার মিলিয়ে ২ হাজার টাকা, কয়েকবার সেঁচ বাবদ প্রায় ৩ হাজার টাকা, দুই দফা আগাছা দমনে ৫ হাজার টাকা, খেত থেকে রসুন উত্তোলন করতে প্রায় ৮ হাজার টাকা সব মিলিয়ে প্রায় ৪০ হাজার টাকার মত খরচ পরবে। উত্তোলনের সময় এক বিঘা জমিতে কাঁচা অবস্থায় প্রায় ৪০ মন রসুন পাওয়া যায়। শুকালে ৩০ মন টিকে। বর্তমান বাজার দর হিসেবে যার মূল্য প্রায় এক লাখ ২০ হাজার টাকা। মামাখালী গ্রামের বর্গা রসুন চাষী ফজের প্রাং জানান, বর্গা চাষ করে আমরা ৩ ভাগের দুই ভাগ রসুন পাই। এক ভাগ পায় জমির মালিক। বীজের দাম এবার বেশি বলেও জানান তিনি।
চাটমোহর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ.এ.মাসুম বিল্লাহ জানান, রসুনের ভাল দাম পাওয়ায় এ এলাকার কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে, মোটামুটি উৎপাদন হলে এবং রসুনের মধ্যম দাম থাকলেও কৃষক লাভ করতে পারবেন।