দেশের সব পৌরসভায় ইভিএমে (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) ভোট নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কয়েক ধাপে এই ভোট নেওয়া হবে এবং প্রথম ধাপ শুরু হবে ডিসেম্বরের শেষ দিকে। তবে ইউনিয়ন ও উপজেলা পরিষদের সব নির্বাচন ইভিএমে করা সম্ভব হবে না। মে মাসের মধ্যে পৌর ভোট সম্পন্ন করা হবে। তবে মোট ক’টি ধাপে ভোট নেওয়া হবে তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
সোমবার নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সভা শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা সাংবাদিকদের এসব সিদ্ধান্তের কথা জানান। তিনি বলেন, আগামী জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে পৌরসভাসহ যেসব স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের মেয়াদ শেষ হবে সেসব প্রতিষ্ঠানে ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ ভোট নেওয়া হবে। এই ধাপে ২০-২৫টি পৌরসভায় ভোট নেওয়া হতে পারে।
আইন অনুযায়ী, নির্বাচিত পৌরসভার মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যে নতুন নির্বাচন করতে হবে। ইসির বৈঠকে পৌরসভাসহ বিভিন্ন স্থানীয় নির্বাচনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। মে মাসের মধ্যে বেশিরভাগ পৌরসভার মেয়াদ পূর্ণ হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, কয়েকটি ধাপে পৌর নির্বাচন করতে হবে। হয়তো পাঁচটি ধাপে হতে পারে। তবে কয় ধাপে হবে তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, পৌরসভা গঠনের পর প্রথম সভা থেকে পৌরসভায় মেয়াদ শুরু হয়। একেকটি পৌরসভার প্রথম বৈঠক একেক সময়ে হয়েছে। সব পৌরসভার মেয়াদ একসঙ্গে পূর্ণ হবে না। যে কারণে সব পৌরসভায় একসঙ্গে নির্বাচন করা সম্ভব হবে না।
নির্বাচন কমিশনার শাহাদাত হোসেন চৌধুরী বলেন, ইভিএমে নির্বাচন করা হবে পৌরসভায়। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কারিগরি সহায়তা ও লোকবলের বিষয় আছে। এ কারণে তিন থেকে চারটি ধাপে ভোট করতে হবে।
এদিকে বঙ্গবন্ধুর সময় প্রণীত গুপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২-এর কোনো ধরনের পরিবর্তন না করে ইংরেজি থেকে বাংলায় রূপান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। এর আগে ইসির পক্ষ থেকে গুপ্রতিনিধিত্ব আদেশ পরিবর্তন করে নতুন করে গুপ্রতিনিধিত্ব আইন ২০২০ প্রণয়নের পরিকল্পনা করলেও সরকারের সায় মেলেনি।
রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের অংশটি আরপিও থেকে বের করে নতুন আইন করার উদ্যোগের কথা জানিয়ে সিইসি বলেন, রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের বিষয়টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় না। স্থানীয় সরকার নির্বাচনের অনেক ক্ষেত্রে পলিটিক্যাল পার্টির নমিনেশনের বিষয়টি আছে। এটা আরপিওতে অ্যাডজাস্ট করা যায় না। এসব কারণে কেবল রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের অংশটি নিয়ে আমরা প্রস্তাব করেছি আলাদা আইন করব। যুক্তি হলো এটা ২০০৮ সালে করা হয়েছে। জাতির পিতার আদেশের চেতনার সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। ২০০৯ সালে একটি অধ্যায় এখানে ঢোকানো হয়েছে। এটি আলাদা করা হলে আরপিওর মৌলিকত্বে কোনো ইফেক্ট পড়বে না। তবে সরকার যদি মনে করে আলাদা আইন করার দরকার নেই। তাহলে আরপিওর মধ্যেই প্রতিস্থাপন হবে।