শাহজাদপুর ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রায় এক বছর যাবৎ অজ্ঞানের ডাক্তার না থাকায় অস্ত্রপাচার বন্ধ রয়েছে। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে অপারেশন থিয়েটারে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি, ভোগান্তিতে শাহজাদপুরের জনগন। ফলে অসহায় হতদরিদ্র ও দুস্থ্য প্রসুতি মায়েদেরকে নিরাপদ প্রসবের জন্য টাকা খরচ করে বেসরকারী ক্লিনিক ও হাসপাতালে গিয়ে সিজারিয়ান অপারেশন করতে বাধ্য হতে হচ্ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সুত্রে জানা যায়। মাতৃ স্বাস্থ্য ভাউচার স্কীম প্রকল্পের অধিনে উপজেলার দুস্থ্য প্রসুতি মায়েদের বিনামুল্যে নিরাপদ প্রসব করানোর লক্ষে প্রতিটি প্রসুতি মাতা প্রসব পুর্ববর্তী তিনটি স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও প্রসব পরবর্তী দুইটি স্বাস্থ্য পরীক্ষা বাবদ ৫শ টাকা এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতাল ও সুর্যের হাসি ক্লিনিকের যে কোন একটিতে নিরাপদ প্রসব করা মাকে ২ হাজার টাকা করে মোট ২‘হাজার ৫‘শ টাকাও বরাদ্ধ রয়েছে। পরিপুর্ন অপারেশন থিয়েটার, সার্জারী ডাক্তার ও গাইনি কনসালটেন্ট থাকা সত্বেও শুধু মাত্র অজ্ঞানের ডাক্তার না থাকায় প্রায় এক বছর যাবৎ বন্ধ রয়েছে সকল প্রকার অপারেশন। সরেজমিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায় উপজেলার বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকা থেকে গর্ভবতী মায়েরা এসে হাসপাতালে গাইনি কনসালটেন্ট এর সাথে যোগাযোগ করছে। আগত গাড়াদহ ইউনিয়নের গাড়াদহ গ্রামের মদিনা খাতুনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, গত ছয় বছর আগে এই হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে তার একটি কন্যা সন্তান জন্ম গ্রহন করে। পুনরায় গর্ভবতী হওয়ায় তাকে আবারো সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করাতে হবে। এদিন তিনি সন্তান প্রসবের জন্য হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার জন্য সকল প্রস্তুতি নিয়ে এসেছেন। কিন্তু অজ্ঞানের ডাক্তার না থাকায় নিরাপদে সন্তান প্রসবের জন্য তাকে সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপজেলা পঃ পঃ কল্যান কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, অত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মাসে গড়ে ৩০ থেকে ৩৫ জন প্রসুতি মায়েদের সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে নিরাপদ প্রসব করানো হয়। পরিপুর্ন অপারেশন থিয়েটার, সার্জারী ডাক্তার ও গাইনি কনসালটেন্ট সবই আছে। শুধু মাত্র অজ্ঞানের ডাক্তার না থাকায় গত এক বছর যাবৎ উপজেলার দুস্থ্য প্রসূতি মাতাদের বিনামুল্যে সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধ রয়েছে। অজ্ঞানের ডাক্তারের চাহিদা দিয়ে উর্ধতন কর্র্তৃপক্ষকে বার বার অবহিত করা হলেও কোন কাজ হচ্ছে না। ফলে এলাকার দরিদ্র দুস্থ্য প্রসূতি সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং বিভিন্ন দালালের মাধ্যমে বেসরকারি ক্লিনিকে গিয়ে মোটা টাকার বিনিময়ে অপারেশন করাতে বাধ্য হচ্ছে। অজ্ঞানের ডাক্তার যোগদান করলে পুনরায় প্রসুতি মায়েদের সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে নিরাপদ প্রসব করানো হবে। এবিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ্ মোঃ শামসুজ্জোহা জানান, বিষয়টি আমার জানা ছিলনা। উপজেলার অসহায় ও দুস্থ প্রসুতি মাতারা যাতে বিনামুল্যে সিজিারিয়ান অপারেশন সুবিধা পায় সে বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উর্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে সমাধানের ব্যবস্থা করা হবে।