নেত্রকোনার কলমাকান্দায় দুর্নীতি, অর্থআত্মসাৎ, অসদাচরণসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে কলমাকান্দা সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইলিয়াস হোসেন কোকিলের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে বিদ্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে শিক্ষক-কর্মচারীদের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
এ সংবাদ সম্মেলনে প্রধান শিক্ষক ছাড়া বিদ্যালয়ের সব শিক্ষক-কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন। এসময় সহকারি শিক্ষক একেএম এমদাদুর রহমানের সভাপতিত্বে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সহকারি শিক্ষক এইচএম ইলিয়াস। পরে বক্তব্য দেন সহকারি শিক্ষক মোশারফ হোসেন, আলী উছমান, নিবেদিতা সাহা, লাকি তালুকদার ও মাহবুবুর রহমান প্রমুখ।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, কলমাকান্দা সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়টি ১৯৪২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১৮ সালে তা জাতীয়করণ করা হয়। বিদ্যালয়ে বর্তমানে ২৮ জন শিক্ষক-কর্মচারীসহ ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ৭শ’ শিক্ষার্থী রয়েছে।
শিক্ষকদের অভিযোগ, ইলিয়াস হোসেন কোকিল বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ হওয়ার পর শিক্ষক-কর্মচারীদের পদ সৃজন সম্পর্কিত চিঠি গোপনসহ নানা অনিয়ম করে আসছে। শিক্ষকদের দাবি, নেত্রকোনা জেলার পুর্বধলা ও বারহাট্টা উপজেলার দুটি বিদ্যালয় একই সময়ে জাতীয়করণ হয়। ওই বিদ্যালয়গুলো যথাসময়ে পদ সৃজনের তথ্য প্রেরণ করায় শিক্ষক-কর্মচারীরা বর্তমানে সরকারি সুযোগ–সুবিধা পাচ্ছেন। কিন্তু কলমাকান্দা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে তা হচ্ছে না। প্রধান শিক্ষক ইলিয়াস হোসেন পদ সৃজনের তথ্য সংশ্লি মন্ত্রণালয়ে যথাসময়ে প্রেরণ না করে ওই চিঠিটি তিনি গোপন করেন। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে তিনি তড়িঘড়ি করে গত জুন মাসে প্রয়োজনীয় তথ্যাদি প্রদান করেন।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষকেরা আরও অভিযোগ করেন, ইলিয়াস হোসেন ২০১৮ ও ২০১৯ শিক্ষাবর্ষে জেএসসি ও ২০১৯ ও ২০২০ শিক্ষাবর্ষে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে স্পেশাল ক্লাসের নামে জনপ্রতি রসিদ ছাড়া ৩০০ টাকা করে আদায় করেন। এ ছাড়া ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষায় জনপ্রতি ১৭০ টাকা আদায় করে বিধি মোতাবেক ব্যয় না করে আত্মসাৎ করেন। এছাড়া তিনি শিক্ষকদের সঙ্গে অসদাচরণ করেন।
এসব অনিয়মের বিষয়ে গত ২১ জুন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করা হয়। পরে জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (শিক্ষা) দায়িত্বে থাকা আব্দুল্লাহ আল মাহমুদকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, ‘আমি বিষয়টি তদন্ত করে গত জুলাইয়ের শেষ দিকে জেলা প্রশাসকের কাছে জমা দিয়েছি।
এ ব্যাপারে ইলিয়াস হোসেন কোকিল বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। আমি কোনো অসদাচরণ, অর্থ আত্মাসাৎ বা দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত নই। একজন প্রধান শিক্ষক হয়ে আমি তা করতে পারি না।