লালমনিরহাট আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নে তিস্তার ভাঙ্গনের ২০টি বাড়ির অধিক বিলিন হয়ে গেছে। ভাঙনকবলিত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মহিষখোচা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের চৌরাহা গ্রামের প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তিস্তার ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ভাঙনের শিকার পরিবারগুলো তাদের ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। এসব পরিবারের নিজস্ব জমি না থাকায় রাস্তার ধারে ও উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন। আবার অনেকেই হাঁটু পরিমাণ পানিতে ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পেতে ঘরবাড়ি ও স্থাপনা সরিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন।ভাঙনের শিকার রফিকুল, মোফা, মকসুদার, সাহাবুদ্দিন বলেন, তিস্তায় হামাকগুলাক (আমাদের) আর বাইচবার দিলো না, হামরা এ্যালা কোনটে যামো! এ্যাদোন করি কি আর জীবন চলে। ভাঙনের শিকার পরিবারগুলোর এমন আহাজারিতে এলাকার বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে।ভাঙনকবলিত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, তিস্তা নদীর পানি কিছুটা কমার সঙ্গে সঙ্গে প্রবল স্রোতে চোখের পলকেই বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। কোনরকমে বসতভিটা সরিয়ে নিচ্ছেন পরিবারগুলো। বসতভিটা সরিয়ে নিতে পারলেও গাছপালাগুলো সরিয়ে নেয়ার সময়টুকুও পাচ্ছেন না তারা।মহিষখোচা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোসাদ্দেক হোসেন চৌধুরী বলেন, আমার জীবনে এ রকম নদী ভাঙন চোখে পড়েনি।তিনি আরও বলেন, এর আগে সিংঙ্গীমারী গ্রামটি তিস্তার ভাঙনে বিলীনের পর চৌরাহা গ্রামটিও মানচিত্র থেকে বিলীন হতে চলেছেন। ভাঙনের হাত থেকে রক্ষার জন্য প্রশাসনের কাছে জিও ব্যাগ চাওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভাঙন কবলিত এলাকায় বালু মজুত করে রেখেছেন বলে দাবি করেন তিনি।উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মফিজুল ইসলাম বলেন, ভাঙন কবলিত এলাকায় ভাঙন রোধে জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগের জন্য জেলা প্রশাসকের নিকট চিঠি পাঠানো হয়েছে।আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিন বলেন, ভাঙন কবলিত এলাকায় বালু মজুদ করা হয়েছে, জিও ব্যাগ বরাদ্দ এলে ভাঙন রোধে কাজ শুরু করা হবে।তিনি আরও বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভাঙন কবলিত পরিবারগুলোর সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।