গত তিন সপ্তাহ আগে প্রবল বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলের পানির চাপে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার দ্বীপপুর ইউনিয়নের লাউবাড়িয়া গ্রামে ফকিনী নদীর তীরে পাউবো’র বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধটি ভেঙ্গে যায়। এতে দুই ইউনিয়নের ১০/১২ টি গ্রামের সাথে উপজেলা সদরের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। বাঁধের এই ভাঙ্গনের ফলে বাগমারা ও পাশ্ববর্তী আত্রাই উপজেলার বেশ কিছু বিলের মাছ ও ফসলী জমির ব্যাপক ক্ষতি হয়। এসময় বাড়তে থাকে গ্রামবাসীর দূর্ভোগ। গ্রামবাসীরা জানায়, ভাঙ্গনের প্রায় তিন সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও ভাঙ্গনের স্থানে নৌকা বা আাঁড় দিয়ে পারাপারের কোন উদ্যোগে নেয়নি ইউনিয়ন পরিষদ। ফলে এই বাঁধের উপর দিয়ে প্রায় ১০/১২ টি গ্রামের লোকজনের যাতাযাত বন্ধ হয়ে গেছে। এখন কোরবানী জমে ওঠবে। বাঁধের এই ভাঙ্গনের কারণে বাঁধের আশেপাশে অন্তত চারটি ছোট বড় হাটে গরু ছাগল সহ অন্যান্য পন্য সামগ্রী নিয়ে যেতে পারছে না গ্রামবাসী। কৃষকরা জানান, এই ভাঙ্গনের কারণে আমরা চরম বিপদের সম্মুখীন হয়েছি। আমরা কোরবানীন পশু বিক্রি করতে পারছি না। অন্যান্য পন্য হাটে নিতে পারছি না। এই বেকায়দা অবস্থায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা পরিষদে গিয়ে কোন কূলকিনারা না পেয়ে আমরা নিজেরাই সাকো নির্মানের উদ্যোগ নিয়েছি। গতকাল বুধবার ভাঙ্গন কবলিত স্থানে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে প্রায় শতাধিক গ্রামবাসী সাঁকো নির্মানে নিয়োজিত হয়েছে। এসব কাজের বদারকি করছেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বিকাশ চন্দ্র ভৌমিক। তিনি জানান, ঈদের আগেই এখানে আমরা এখানে যোগাপযোগ স্থাপন করতে চাই। গ্রামাবসীরা যে যার মত বাঁশ কাঠ ও শ্রম দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করছে। তিনি সহ কয়েকজন গ্রামবাসী জানান, এখানে অস্থায়ী পারাপারের জন্য উপজেলা পরিষদ থেকে একটি নৌকা দেওয়া হলেও সেটি দুই দিনের মাথায় আকেজো হয়ে পড়ে আছে। এই আবস্থায় স্থানীয় কয়েকজন নৌকার মাঝি এখানে ১০ টাকা করে নিয়ে পারাপার শুরু করে। এদিকে,বিভিন্ন খাল বিলের মুখে বীজ কালভাটের মুখ বন্ধ করায় নামছে না বন্যার পানি। অপরর দিকে কয়েক দিনের টানা বৃষ্টির কারনেই উপজেলার ফকির রানী নদী ও বারানই নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। উপজেলার অধিকাংশ ইউনিয়নে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি লক্ষ করা গেছে। গত এক সপ্তাহ পূর্বে নওগাঁর মান্দা উপজেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের টেংরা এলাকার বাঁধটি ভেঙ্গে রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলা ও বাগমারা উপজেলার বিভিণœ এলাকা বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়। ওই সময় বাগমারা উপজেলার দুই একটি ইউণিয়নের বাড়িঘর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, পানবরজ, ক্ষেতের ধান, পাট, পেঁপে, ভুট্টাক্ষেতসহ বিভিণœ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। এতে দূর্ভোগে পড়ে যান সাধারন লোকজন। এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরিফ আহম্মেদ জানান, বিপদকালীন সেখানে একটি নৌকা দেওয়া হয়েছে। সেটি কেন চলছে না বিষয়টি খোজ নেওয়া হবে। তবে সেখানে সাকোঁ নির্মানে আমরা গ্রামবাসীর পাশে আছি। অতি দ্রুত সাকোটি নির্মাণ করা হবে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান।