সিলেটের বিশ্বনাথে বাবার বাসা থেকে নববধূ কোহিনুর আক্তার আশা (২১) কে নিখোঁজের ১৩দিন পর বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ থানার শতরদরিয়া গ্রামের আব্দুর রহিমে পুত্র শাওন মিয়ার বাড়ি থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এসময় অপহরণকারী শাওন মিয়া (২১)’কে গ্রেফতার করে পুলিশ।পুলিশ জানায়, ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয়ের সূত্র ধরে কোহিনুর আক্তার আশা’কে বিশ্বনাথ থেকে অপহরণ করে কিশোরগঞ্জ নিয়ে যায় শাওন। এরপর সেখানে শাওন তার নিজ বাড়িতে কোহিনুরকে জিম্মি করে রাখে।ইতিপূর্বে একই ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলার দেবীদ্বার থানার গজারিয়া গ্রামের রাকিবুল ইসলামের স্ত্রী ও ছাতক উপজেলা সমবায় অফিসের এমএলএস রুজিনা আক্তার (৩০) এবং তার ভাই সিলেট সদর সমবায় অফিসের এমএলএস রাজিব সরকার (২৫)’কে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করে পুলিশ।জানা যায়, ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলার সরাইল থানার পানিশ্বর গ্রামের রমজান মিয়া দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বনাথ উপজেলা সমাজ সেবা অফিসের নিরাপত্তা প্রহরী হিসেবে কর্মরত। সেই সুবাদে স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে তিনি উপজেলা সদরের জানাইয়া রোডস্থ তেরাবুন ভিলায় ভাড়াটিয়ে হিসেবে বসবাস করে আসছেন। প্রায় ৫বছর পূর্বে আত্মীয় উমান প্রবাসী আলমগীর হোসেনের সঙ্গে তার বড় মেয়ে কোহিনুর আক্তার আশার বিয়ের ঠিক করা (এনগেজমেন্ট) হয়। গত ৫ জুন ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলার নিজ বাড়িতে কোহিনুর আক্তার আশা ও আলমগীর হোসেনের বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। বিয়ের পর স্বামী আলমগীরকে সঙ্গে নিয়ে দ্বিতীয় বারের মতো ১৯ জুন বিশ্বনাথে বাবার বাসায় আসেন কোহিনুর। এরপর গত ৯ জুলাই সকাল ১০টার দিকে হঠাৎ করে বাসা থেকে নিখোঁজ হন। তখন বাসার আশপাশ ও আত্মীয়-স্বজনদের বাড়ী ছাড়াও বিভিন্ন স্থানের খোঁজাখুজি করে মেয়ে কোহিনুরের কোন সন্ধ্যান না পাওয়ায় পরদিন ১০ জুলাই বিশ্বনাথ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন রমজান আলী। এরপর নিখোঁজ কোহিনুরকে উদ্ধারের নামে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করার অফিযোগে গত সোমবার (২০ জুলাই) রুজিনা ও রাজিবকে অভিযুক্ত করে নিখোঁজ কোহিনুর আক্তার আশা’র পিতা বিশ্বনাথ উপজেলা সমাজ সেবা অফিসের নিরাপত্তা প্রহরী রমজান মিয়া বাদী হয়ে বিশ্বনাথ থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং-১৫।মামলা দায়েরের পর নিখোঁজ কোহিনুর আক্তার আশা’র অবস্থান প্রায় নিশ্চিত হয় পুলিশ। এরপর কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ থানা পুলিশের সহযোগিতায় বিশ্বনাথ থানার এসআই ফজলুল হকের নেতৃত্বে একদল পুলিশ বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে অভিযান চালিয়ে করিমগঞ্জের শতরদরিয়া গ্রামের আব্দুর রহিমে পুত্র শাওন মিয়ার বাড়িতে কোহিনুর আক্তার আশা’কে উদ্ধার এবং অপহরণের অভিযোগে শাওন’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।ভিকটিম উদ্ধার ও অপহরণকারী শাওনকে গ্রেফতারের সত্যতা স্বীকার করে বিশ্বনাথ থানার এসআই ফজলুল হক বলেন, গ্রেফতারকৃত শাওনকে আজ শুক্রবার (২৪ জুলাই) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে এবং ভিকটিম গৃহবধূকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসি’তে ভর্তি করা হয়েছে।