মৎস্য সপ্তাহে চলে শুধু অভিযান

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান পরিচালনা করে দুই হাজার মিটার কারেন্ট জাল ও ৫০০ মিটার বালাই জাল আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করেছে। আজ বৃহস্পতিবার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাফিউল আলম উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়নের বিভিন্ন হাওর ও বিল এলাকায় এই অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় উপজেলা মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আলী আযম সহ থানা পুলিশের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সূত্র জানায়, প্রতিবছর বন্যার পানি আগমনের সাথে সাথে চলনবিল অধ্যুষিত ভাঙ্গুড়া উপজেলার দিলপাশার, অষ্টমনিষা ও খানমরিচ ইউনিয়নের হাওর এবং বিল অঞ্চলে কারেন্ট জাল ও বালাই জাল সহ বিভিন্ন প্রকারের অবৈধ জাল দিয়ে মৎস্য শিকার শুরু করে স্থানীয় অসাধু মৎস্যজীবীরা। সরকার নিষিদ্ধ এসব অবৈধ জাল দিয়ে প্রতিনিয়ত নানা জাতের দেশীয় মাছের পোনা সহ ডিমওয়ালা মাছ শিকার করা হয়। এতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল প্রকার অবৈধ জাল ব্যবহার করে মাছ শিকার বন্ধ করতে স্থানীয় মৎস্যজীবীদের বারবার নির্দেশনা দেওয়া হয়। এরপরও অসাধু মৎস্যজীবীরা প্রতিনিয়ত মাছের পোনা ও মা মাছ শিকার করতেই থাকে। তবে উপজেলা মৎস্য অফিস অবৈধভাবে মৎস্য শিকার বন্ধে বছরের অন্য সময় শুধুমাত্র নির্দেশনার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও জাতীয় মৎস্য সপ্তাহে অভিযান পরিচালনা করেন। গত ২১ জুলাই থেকে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ শুরু হয়। তাই এই উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ জাল উদ্ধারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে উপজেলা প্রশাসন। দিনব্যাপী এই অভিযানে দিলপাশার ইউনিয়নের বিভিন্ন হাওড় ও বিল এলাকা থেকে দুই হাজার মিটার কারেন্ট জাল ও ৫০০ মিটার বাদাই জাল উদ্ধার করে আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এদিকে উদ্ধারকৃত অবৈধ জাল পুড়িয়ে ধ্বংস করলেও জালের মালিকদের ধরতে ব্যর্থ হন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ নিয়ে স্থানীয় সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। দিলপাশার ইউনিয়নের মাগুরা গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মজিদ বলেন, বন্যার পানি আসার পর থেকেই অবৈধ জাল দিয়ে মৎস্য শিকারের মহোৎসব শুরু হয়। স্থানীয় অসাধু প্রভাবশালী মৎস্যজীবীরা এই অপকর্ম করেন। বিষয়টি স্থানীয় সকল পর্যায়ের লোকজন জানে। কিন্তু কঠোর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। এতে ভরা মৌসুমে মাছের ঘাটতি দেখা দেয় এই এলাকায়। তবে সাধারণ মানুষ এই ধরনের ঘৃণ্য কর্মকাণ্ডের তীব্র বিরোধিতা করে। অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আলী আযম বলেন, জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার হাওর ও বিল অঞ্চলে অভিযান চালানো হয়। এতে প্রচুর পরিমাণে অবৈধ কারেন্ট ও বাদাই জাল উদ্ধার করে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়। তবে প্রশাসনের অভিযানের কথা আগেই জানতে পেরে জালের মালিক সহ মৎস্যজীবীরা পালিয়ে যায়। মৎস্য সপ্তাহ শেষ হলেও আগামীতে এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।