দুর্নীতিতে জড়ানো কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না’ বলে একটি টেলিভিশনের টকশোতে বলেছিলেন রিজেন্ট গ্রুপ ও রিজেন্ট হাসপাতাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান সাহেদ করিম ওরফে মো. সাহেদ।
এখন দুর্নীতির দায়ে তিনিও ছাড় পেলেন না। করোনা টেস্টের ভুয়া রিপোর্ট প্রদান, অর্থ আত্মসাতসহ প্রতারণার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সাহেদ ওই টকশোতে বলছিলেন, ‘এই যে আমি ঢাকায় ত্রিশ বছর ধরে আছি। আমি কোনোদিন ক্যাসিনোর কথা শুনি নাই। অথচ দেখেন এই শহরে কত ক্যাসিনো ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। সরকার অপরাধীকে ছাড় দেবে না বলে নিজের দলের ভেতর থেকে পরিচ্ছন্ন অভিযান শুরু করেছে। এই জিকে শামীমের কথাই ধরুন, সে কি ছাড় পেয়েছে?
টেলিভিশনের ওই টকশোতে দেয়া সাহেদের বক্তব্যের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়াতে বেশ ভাইরাল হয়েছে। অনেকেই তার ভিডিওটি নিজেদের ফেসবুকে শেয়ার করেছেন। তাতে বইছে সমালোচনার ঝড়। অনেকে বলছেন, ‘আসলে যত বড় চোর, তত বড় চাপা। ভাবা যায়?’ ‘ঠাণ্ডা মাথায় হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যাওয়া লোকটার মুখ দিয়ে কতো বড় বড় কথা বেরোচ্ছে!’ ‘এই একজনের হয়তো মুখোশ খসে পড়েছে, অথচ এমন মুখোশধারী চারপাশে!’
সাহেদকে সাতক্ষীরা থেকে গ্রেফতার করে ঢাকায় আনা হয়েছে। তার সম্পর্কে বুধবার সকালে র্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া ইউংয়ের পরিচালক আশিক বিল্লাহ বলেন, তিনি (সাহেদ) ছদ্মবেশে বোরকা পরে নৌকা দিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। আমাদের কাছে গোপন তথ্য ছিল। আমরা বিভিন্ন মাধ্যম থেকে তথ্য পেয়ে তাকে গ্রেফতার করি। তার বাসা সাতক্ষীরায়। কিন্ত তিনি তারই জেলায় ছদ্মবেশে বিভিন্ন যানবাহনে চলাফেলা করেছিলেন।
গত ৬ জুলাই রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুর শাখায় অভিযান চালায় র্যাব। অভিযানে ভুয়া করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট, করোনা চিকিৎসার নামে রোগীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়সহ নানা অনিয়ম উঠে আসে। পরে রোগীদের সরিয়ে রিজেন্টের উত্তরা ও মিরপুর শাখা সিলগালা করে দেয়া হয়।
গ্রেফতার করা হয় ৮ জনকে। এরপর বৃহস্পতিবার রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান সাহেদের প্রধান সহযোগী তারেক শিবলী গ্রেফতার করা হয়। হেফাজতে নেয়া হয় টিভি নাটকের অন্যতম প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ‘টেলিহোম’র প্রধান ও সাহেদের ভায়রা মোহাম্মদ আলী বশিরকে।