স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম সংগঠক, প্রখ্যাত সাংবাদিক, ভাষা সৈনিক, উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি ও বৃহত্তর পাবনার কৃতি
সন্তান কামাল লোহানীর মৃত্যুতে পাবনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
পাবনার বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান বর্ষিয়ান এই সাংবাদিকের মৃত্যুতে শোকে মুহ্যমান।
কামাল লোহানীর মৃত্যুতে যারা শোক জানিয়েছেন তারা হলেন, স্কয়ার গ্রুপের পরিচালক ও অ্যাটকো প্রেসিডেন্ট অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু, দুদকের সাবেক কমিশনার আওয়ামীলীগের কেন্দ্রিয় উপদেষ্টা মো.
সাহাবুদ্দিন চুপ্পু, পাবনা জেলা আওয়ামীলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি ও পাবনা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রেজাউল রহিম লাল সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক প্রিন্স, সাবেক স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু এমপি, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, পাবনা চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মো. সাইফুল
আলম স্বপন চৌধুরী, ঐক্য ন্যাপ কেন্দ্রিয় প্রেসিডিয়াম সদস্য ও পাবনা জেলা সভাপতি প্রবীণ সাংবাদিক রণেশ মৈত্র পাবনা জেলা কমিটির সাধারণ
সম্পাদক আপেল মাহমুদ, পাবনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা রবিউল ইসলাম রবি, পাবনা প্রেসক্লাব সভাপতি এবিএম
ফজলুর রহমান সম্পাদক সৈকত আফরোজ আসাদ, পাবনা সংবাদপত্র পরিষদ
সভাপতি আব্দুল মতীন খান, সাধারণ সম্পাদক শহীদুর রহমান শহীদ, পাবনা
রির্পোটার্স ইউনিটির সভাপতি হাবিবুর রহমান স্বপন ও সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহবুব মোর্শেদ বাবলা, ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস্
ক্রাইম রিপোটার্স ফাউডেশন পাবনা জেলা কমিটি সভাপতি সাংবাদিক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল জব্বার, সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক শাইফুল ইসলাম শুভ,
ক্যাব পাবনা জেলা শাখার সহসভাপতি অধ্যক্ষ জেবুন্নুচ্ছো ববিন সাধারণ সম্পাদক এসএম মাহবুব আলম, ইয়াং জার্নালিষ্ট ফোরাম পাবনা জেলা
শাখার সভাপতি তারেক খান সাধারণ সম্পাদক রনি ইমরান পাবনা জেলা যুবলীগ আহবায়ক আলী মতুর্জা বিশ্বাস সনি, যুগ্ম আহবায়ক শিবলী
সাদিক, পাবনা সদর উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ মোশারোফ হোসেন সাধারণ সম্পাদক সোহেল হাসান
শাহীন। বিবৃতিতে তারা বলেন, কামাল লোহানীর দেশ একজন বলিষ্ট সাংস্কৃতিক নেতৃত্বকে হারালো। যার শুন্যস্থান কখনই পুরন হওয়ার নয়।
গতকাল শনিবার সকালে করোনায় আক্রান্ত কামাল লোহানী রাজধানীর মহাখালীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের
আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থান শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্নালিল্লাহি…রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর।
গত মাসের মাঝামাঝিতে কিডনির সমস্যাসহ কামাল লোহানীর অন্যান্য শারীরিক জটিলতা দেখা দেয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত ১৭ জুন
সকালে তাকে রাজধানীর হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সেখানেই চলছিল চিকিৎসা। পরে সেখান থেকে তাকে মহাখালীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে নেওয়া হয়। তিনি ২০১৫ সালে
সাংবাদিকতায় একুশে পদক পান কামাল লোহানী।
কামাল লোহানী দৈনিক মিল্লাত পত্রিকা দিয়ে সাংবাদিকতা শুরু করেন। এরপর
আজাদ, সংবাদ, পূর্বদেশ, দৈনিক বার্তায় গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেছেন।
সাংবাদিক ইউনিয়নে দুই দফা যুগ্ম সম্পাদক ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতেও দুইবার মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন
এই বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব। ছায়ানটের সম্পাদক ছিলেন পাঁচ বছর। কামাল লোহানী উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি ও সম্মিলিত
সাংস্কৃতিক জোটেরও উপদেষ্টা।কামাল লোহানীর জন্ম তৎকালীন পাবনা ও বর্তমানে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া
থানার সনতলা গ্রামে। বাবা আবু ইউসুফ মোহাম্মদ মুসা খান লোহানী।
মা রোকেয়া খান লোহানী। প্রথমে কলকাতার শিশু বিদ্যাপীঠে পড়াশুনা শুরু করেন। দেশভাগের পর ১৯৪৮ সালে পাবনা চলে আসেন। ভর্তি হন পাবনা জিলা স্কুলে। ১৯৫২ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর ভর্তি হন পাবনা
এডওয়ার্ড কলেজে। এই কলেজ থেকেই উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন।
২০২০ সালের ২০ জুন মরণব্যাধী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মহাখালীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।