বিশ^ব্যাপী করোনার প্রাদুর্ভাবে বিপর্যস্থ জনজীবন। বাংলাদেশে গত মার্চ মাস থেকে সনাক্ত হওয়া এই রোগ বর্তমানে প্রকট আকার ধারণ করেছে। অদৃশ্য এই শক্তির মোকাবিলায় সংক্রমন
এড়ানোর জন্য বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ অনুসারে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ক্ষেত্রে ব্যাপক জনসমাগাম এড়িয়ে চলা, নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি মেনেচলা সহ বিভিন্ন সরকারী বিধিনিষেধের কারণে দৈনিক আয়ের উপর নির্ভরশীল মানুষদের বিশেষত উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে বসবাসরত দলিত ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির মানুষ বেশিমাত্রায় অসহায় হয়ে পড়েছে।
গ্রামবিকাশ কেন্দ্র পিছিয়ে পড়া এসব দলিত ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির জীবন মান উন্নয়নে প্রায় দুই দশক ধরে কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় আন্তর্জাতিক সংস্থা ইউএনডিপি ও হেকস্/ইপার এর সহযোগীতায় গ্রামবিকাশকেন্দ্র করোনাকালীন সময়ে দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ এবং দিনাজপুর সদর উপজেলার দলিত ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রায় তিনহাজার পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করে।
আজ খাদ্যসমাগ্রী বিতরণ কার্যক্রমের সমাপনী দিনে দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলায় তিনটি পয়েন্টে দলিত ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রান্তিক এসব জনগোষ্ঠীর মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
এই খাদ্যসামগ্রীবিতরণ কার্যক্রমে বীরগঞ্জ পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দিনাজপুর -১ আসনের মনোরঞ্জন শীল গোপাল এমপি।
এছাড়াও অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাা মোঃ ইয়ামিন হোসেন, বাজুন বেসরা চেয়ারম্যান বীরগঞ্জ উপজেলা আদিবাসী সমিতি, মোঃ আমিনুল
ইসলাম,উপ- প্রধান নির্বাহী, গ্রামবিকাশ কেন্দ্র; ভূপেশ রায়, হেকস্/ইপার প্রতিনিধি এবং সারা মারান্ডী-পরিচালক সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট গ্রাম বিকাশ কেন্দ্র,মোঃ আব্দুল খালেক-সিনিয়র ম্যানেজার-গ্রাম বিকাশ কেন্দ্র সহ বিভিন্ন কর্মকর্তা ও কর্মীবৃন্দ।
প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন , “দলিত ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির সার্বিক উন্নয়নে গ্রামবিকাশ কেন্দ্র ইউএনডিপি ও হেকস্/ইপার যে উদ্যোগ গ্রহন করেছে এবং তা সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। এই খাদ্য সহায়তা প্রান্তিক এই জগোষ্ঠীর মানুষদের করোনাকালীন সময়ে সহায়ক হবে বলে তিনি উল্ল্যেখ
করেন।
বীরগঞ্জ পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই করোনা দূর্যোগে দলিত ও আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জন্য খাদ্য সহায়তা কার্যক্রমে প্রতিটি অংশগ্রহণকারী ও সহায়তা গ্রহণকারী মাঠের প্রবেশ পথের পাশে রাখা বেসিন এ সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে মাঠে প্রবেশ
করেন এবং সুনির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে লাইনে দাঁড়িয়ে নির্ধারিত খাদ্য সামগ্রী গ্রহণ করে সুশৃঙ্খল ভাবে প্রস্থান করেন।
খাদ্যসহায়তা হিসেবে প্রতিটি দলিত ও আদিবাসী পরিবার প্রতি চাল মিনিকেট-১০ কেজি, আটা প্যাকেট-৪ কেজি, মসুর ডাল- ২ কেজি, চিনি-১ কেজি,লবন-১ কেজি, সয়াবিন তেল-১
লিটার,চিড়া-১ কেজি,সুচি-৫০০গ্রাম ও ১০০ গ্রাম লাইফবয় সাবান ২ টি বিতরন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, খাদ্যসামগ্রী বিতরন কার্য্যক্রম গত ১১ই জুন, ২০২০ তারিখে দিনাজপুর স্টেডিয়াম প্রাঙ্গনে সম্মানিত মোঃ মাহ্মুদুল আলম,জেলা প্রশাসক দিনাজপুরের মাধ্যমে উদ্ধোধন করা হয় এরপর এ যাবত মোট পাঁচটি পয়েন্টে বিতরনের কাজ চলে।