পুলিশ পরবিারের সাথে বিরোধে মেধাবী ছাত্র অন্তরকে হত্যা করা হয়

চার হরফের ছোট একটি নাম ”অন্তর”। ২১ বছরের টগবগে যুবক। স্বপ্ন ছিল প্রকৌশলী হয়ে ছোট ভাই আর মাকে নিয়ে সুন্দর জীবন গড়ে তুলবে। ছোট বেলা থেকেই ছিল মেধাবী ছাত্র। সাফল্যের সাথে এস,এ,সি পাশ করে। ভর্তি হয় রাজশাহী পলিটেকনিক্যালে। এতেই কাল হয়ে উঠে অন্তরের স্বপ্ন পূরণে।
নিহত অন্তরের মা অঞ্জুলী খাতুন জানান, আমার ছেলেকে বিপদগ্রামী করেন গাঙ্গুহাটি গ্রামের তোফাজ্জ্বল হোসেন মন্টুর পরিবার। তার দুই সন্তান পুলিশে চাকুরী করে। বাচ্চু নামে মন্টুর ছেলে তখন রাজশাহীতে পুলিশে চাকুরী করে। আমার ছেলে কিছু দিন পর পর কলেজ থেকে বাড়িতে আসত। এ সুযোগে বাচ্চু পুলিশ অন্তরের স্কুল ব্যাগে ইয়াবা দিয়ে তার বাবা মুন্টুর নিকট দিতে বলত। মুন্টু ফিরোজ নামে একজনকে দিয়ে এ ইয়াবা বিক্রয় করত। অন্তরের মা অঞ্জলী বলেন বিষয়টি যখন আমি জানতে পারি তখন অন্তরকে বুঝালে সে বুঝতে পারে। আর অন্তর যখন তাদের মাদক ব্যবসায় সহযোগিতা করা বন্ধ করে দেয়, তখন ওই পুলিশ পরিবারের সাথে আমার ছেলের বিরোধ সৃষ্টি হয়। বিরোধের কারণে একাধিক মামলা দিয়ে মেধাবী অন্তরকে পলাতক আসামী বানায় তারা। পুলিশ পরিবারের অনেক গোপন তথ্য জানা থাকায় টাকার বিনিময়ে আমার সন্তানকে হত্যার ষড়যন্ত করা হয়। গত ১ জুন দুপুরে অন্তরের মুঠো ফোনে সুইট নামের এক বন্ধুর ফোন পেয়ে অন্তর বাড়ীর পাশে দোকানে যায়। পুর্ব পরিকল্পিত ভাবে ওৎ পেতে থাকা ষড়যন্তকারীদের দেখে অন্তর দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। বিধিবাম! লুঙ্গি পেঁচিয়ে অন্তর পড়ে গেলে দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে উপযুপরি কুপিয়ে দুই হাত ও দুই পা বিছিন্ন করে ফেলে রেখে চলে যায়। রক্তাক্ত দৃশ্যপট পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার আর.আতাইকুলা ইউনিয়নের গাঙ্গুহাটি গ্রাম। অন্তর ওই গ্রামের জামালের ছেলে।
অন্তরের মা আরো বলেন, ঘটনার দিন অন্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকায় সোনারগাঁ ইউনিভারসিটিকে যাবার প্রস্তুতি গ্রহণ করছিল অন্তর। সে সোনারগাঁ ইঊনিভারসিটির তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিল। শুধু মাত্র পারিবারিক বিরোধের জের ধরেই মেধাবী শিক্ষিত যুবককে হারায় তার পরিবার। পুলিশের বাবা তোফাজ্জ্বল হোসেন মন্টুকে হত্যা মামলার আসামী করায় বিভিন্ন ভাবে আমাকে ওই পরিবার ভয় ভীতি দেখাচ্ছে। আমি নিরাপত্তাহীনতায় জীবন যাপন করছি বলে জানান অন্তরের শোকে কাতর মা অঞ্জুলী খাতুন ।
এ বিষয়ে ওই গ্রামের ইউপি সদস্য আলতাব হোসেন বলেন, দিনের বেলায় একজন মেধাবী ছাত্রকে হত্যা করা হয়েছে। তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তি দাবী করেন তিনি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আতাইকুলা থানার এসআই সুভাস কুমার বলেন, নিহত অন্তরের পিতা বাদী হয়ে থানায় ১০ জন নামীয় ও ৫/৬ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে মামলা করেন। মামলা নং ১ তারিখ ১/৬/২০। ৪ নং এজাহার নামীয় আসামী পুলিশ পিতা তোফাজ্জল হোসেন মন্টুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামীরা পলাতক রয়েছে তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। মামলা তদন্তাধীন রয়েছে।