পাবনা’য় একই পরিবারের ৩জন হত্যার প্রধান আসামী গ্রেফতার ॥ পুলিশের সংবাদ সম্মেলন

শফিক আল কামাল (পাবনা) ॥ পাবনা শহরের দক্ষিণ রাঘবপুর ফায়ার সার্ভিস’র প্রাচীরের নিকট বসবাসকারী বাড়ির ভাড়াটিয়া অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা, স্ত্রী ও মেয়ে সন্তান স্বপরিবারে হত্যার ঘটনায় মসজিদের ইমাম তানভীর ইসলাম (২৫) কে গ্রেফতার করা হয়।

নওগা জেলার মহাদেবপুর উপজেলার হরিপুর গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশের নিকট তানভীর হত্যায় জড়িত থাকার বিষয় স্বীকার করেছে। রবিবার (০৭’ জুন) দুপুরে পাবনা পুলিশ লাইনস্ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম বিপিএম পিপিএম।

তিনি সাংবাদিকদের আরও জানান, অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা আব্দুল জব্বার ও তার স্ত্রী ছুম্মা খাতুন ছিলেন নি:সন্তান। একদিন বয়সের শিশু সানজিদাকে পালক নিয়ে লালন পালন করছিলেন। এর মধ্যে দেড় বছর আগে বাড়ির পাশে ফায়ার সার্ভিস’র মসজিদের ইমাম তানভীর ব্যবহারে সন্তুষ্ট হয়ে তাকেও সন্তান হিসেবে আপন করে নেন। তানভীরও তাদের বাবা-মা হিসেবে ডাকতে থাকেন। ব্যাংক, পোস্ট অফিসে টাকা লেনদেন তানভীরকে সাথে নিয়ে যেতেন আব্দুল জব্বার। এখান থেকেই জব্বারের টাকা পয়সা ও স্বর্ণালঙ্কারের প্রতি লোলুপ দৃষ্টি পড়ে তানভীরের। অনেকদিন ধরেই টাকা গহনা হস্তগত করার জন্য পরিকল্পনা করতে থাকে হত্যাকান্ডের। এর মধ্যে ২৯ মে ছুটি নিয়ে গ্রামের বাড়ি নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার হরিপুর গ্রামে চলে যায় তানভীর। ছুটি শেষ হওয়ার আগেই ৩১ মে সে পাবনায় ফিরে আসে। ওইদিন রাতে ব্যাংক কর্মকর্তা আব্দুল জব্বারের বাড়িতে অবস্থান নেয় তানভীর। রাত ২টার দিকে ঘুমন্ত অবস্থায় আব্দুল জব্বার, তার স্ত্রী ছুম্মা খাতুন ও মেয়ে সানজিদা (১২) কে কুপিয়ে ও কাঠের বাটাম দিয়ে আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে নগদ ২ লাখ টাকা, এক লাখ ভারতীয় রুপি ও স্বর্ণের গহনা লুট করে পালিয়ে যায়। শুক্রবার (০৫’জুন) দুপুরে ওই বাড়ি থেকে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তারপর থেকেই ঘটনার রহস্য উদঘাটনে মাঠে নামে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক টিম। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা গত রাতে নওগাঁর নিজ বাড়ি থেকে তানভীরকে গ্রেপ্তার করে। নৃশংস হত্যাকান্ডে জড়িত তানভীরের শাস্তি নিশ্চিতে সব ধরনের আইনগত প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হবে বলে জানান পুলিশ সুপার।