ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতাঃ
করোনা সংকটকালে প্রয়াত সাবেক ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ এমপি’র অনুপস্থিতিতেও সহধর্মিনী ও সন্তানরা ঈশ্বরদী এবং আটঘোরিয়ার দরিদ্র ও অসহায় মানুষের পাশে থেকে ধারাবাহিকভাবে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করে চলেছেন। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে গত ২রা এপ্রিল জননেতা শরীফ ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। করোনার কারণে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল এবং চেহলাম অনুষ্ঠিত করা সম্ভব না হওয়ায় মরহুমের স্ত্রী ও সন্তানেরা পারিবারিক বিপর্যয়কে পাশ কাটিয়ে সাধারণ মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। লক্ষিকুন্ডায় পৈত্রিক বাড়িতে পারিবারিকভাবে মিলাদ অনুষ্ঠানের পর এযাবত ঈশ্বরদী ও আটঘোরিয়ায় জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে হতদরিদ্র ও নি¤œ আয়ের প্রায় আঠারো হাজার পরিবারের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছেন। মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এবং আসন্ন ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে এসব খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার বিকেলে আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নের কৈকুন্ডা গ্রামে সহযোগিতা বিতরণের সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা শরীফ পুত্র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য গালিবুর রহমান শরীফ বলেন, আমার বাবা সারা জীবন এই এলাকার অসহায় মানুষের পাশে থেকে সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করে নিয়েছেন। আজ করোনা সংকটকালে বাবা নেই। আমরা দেখেছি জীবিত অবস্থায় বাবা অসহায় মানুষদের কিভাবে বুকে টেনে নিয়েছেন। তাই আমরা তাঁর সন্তানেরা বাবার শুণ্যতা কিছুটা হলেও পূরণের প্রচেষ্টা করছি। বাবা বলতেন, আমার এলাকার কোন মানুষই না খেয়ে থাকবে না। তাই ঈশ্বরদী ও আটঘোরিয়ার কোন মানুষ এই পরিস্থিতিতে যদি খেতে না পেয়ে কষ্ট ভোগ করেন, তাহলে আমার বাবার আত্মার শান্তি পাবে না।
সোমবার বিকেলে ঈশ্বরদী পৌরসভার ৩ ও ৬ নং ওয়ার্ডে খাদ্যসামগ্রী বিতরণকালে সাবেক মন্ত্রীর আরেক পুত্র, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রিয় শিল্প ও বাণিজ্য উপ-কমিটির সাবেক সদস্য সাকিবুর রহমান শরীফ কনক বলেন, ঈশ্বরদী উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও আমার মা মিসেস কামরুন্নাহার শরীফের নির্দেশে ও দিক নির্দেশনায় আমরা অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। এগুলো সরকারি অনুদান নয়, সম্পূর্ণ আমার মায়ের ব্যক্তিগত অনুদান। বাবার কুলখানীর জন্য এখন এসব খাদ্যসামগ্রী ঈদ উপহার হিসেবে দেওয়া হচ্ছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মকলেছুর রহমান মিন্টু জানান, গত ১০ই এপ্রিল হতে ১৯শে মে পর্যন্ত ঈশ্বরদী পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ড ও ৭টি ইউনিয়নে এবং আটয়োরিায়া পৌর এলাকা এবং ৬টি ইউনিয়নে আমাদের প্রয়াত অভিভাবক মরহুম শরীফ সাহেবের সন্তানেরা মায়ের নির্দেশে অসহায় মানুষকে সাহায্যের জন্য দৌড়ে বেড়াচ্ছেন। আমরা এবং আমাদের সকল অংগ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা তাদের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বিতরণ কাজে সহযোগিতা করছি।
সাঁড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এমদাদুল হক রানা সরদার জানান, প্রত্যেকটি ইউনিয়নেই সাবেক ভুমিমন্ত্রীর সন্তানেরা অসহায় মানুষকে নিয়মিত সহযোগিতা করে চেেলছেন। তাঁর সন্তানরা অসহায় মানুষদের বুঝতেই দিচ্ছে না যে, শরীফ সাহেবের অবর্তমমানে এলাকায় তারা অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছেন। একইভাবে পাকশী ও লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদ্বয় করেনা সংকটকালে অসহায় মানুষদের শরীফ পরিবারের সহযোগীতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, যেখানে সরকারি সহযোগিতা অপ্রতুল, সেখানে আজ যদি তাঁর স্ত্রী ও সন্তানেরা এগিয়ে না আসতো তাহলে অনেকেকেই কষ্ট ভোগ করতে হতো।