নাটোর প্রতিনিধি:
চলন্ত বাসে সংঘটিত ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানির ঘটনার তিন দিন পর টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। নাটোরের বড়াইগ্রামের বাসিন্দা ওমর আলী বাদী হয়ে শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে মির্জাপুর থানায় মামলাটি করেন। মির্জাপুর থানার কর্তব্যরত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বাসযাত্রীরা জানান, সোমবার রাত ১১ টায় ঢাকার গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে থেকে ইউনিক রোড রয়েলস পরিবহনের আমরি ট্রাভেলস নামে একটি বাস রাজশাহীর উদ্দেশ্যেছেড়ে আসে। পথিমধ্যে চন্দ্রা এলাকায় বাসটিতে কয়েকজন যাত্রী উঠেন। পরে । রাত ১২টা ৩৫ মিনিটের দিকে বাসটি টাঙ্গাইলে পৌঁছালে নতুন উঠা যাত্রীসহ আরও কয়েকজন অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে বাসটির
নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। পরে তারা যাত্রীদের কাছ থেকে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকারসহ মূল্যবান সামগ্রী লুট করে মির্জাপুর এলাকায় বাস থেকে নেমে যান। এসময় দুই নারী যাত্রীর শ্লীলতাহানি করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া য়ায় ।
ডাকাতির শিকার হওয়া যাত্রীরা প্রথমে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানায় গিয়ে মামলা দায়েরের চেষ্টা করেন। কিন্তু তখন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উপস্থিত না থাকায় তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে মঙ্গলবার দুপুরের দিকে বাসটি নাটোরের বড়াইগ্রাম থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।সেদিনইডাকাতির ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে বাসের সুপারভাইজার সুমন ইসলাম (৩৩), চালক বাবলু আলী (৩০) ও তাঁর সহকারী মাহবুব আলম (২৮) থানা পুলিশ আটক করে
তিনজনকে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত শুনানির পর তাঁদের জামিন মঞ্জুর করে মুক্তি দেয়।
এ ঘটনায় মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশারফ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। তবে কর্তব্যরত এসআই খায়রুল বাসার নিশ্চিত করেছেন যে, মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। যদিও তিনি স্বীকার করেন যে, এজাহারের সুনির্দিষ্ট তথ্য তাঁর জানা নেই।
নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শারমিন নেলী বলেন, যেহেতু ঘটনাটি তাদের আওতার মধ্যে হয়নি এবং কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি, সে কারণে সন্দেহভাজন ব্যক্তি হিসেবে তাদের ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখানো হয়।বিষয়টি মির্জাপুর থানাকে জানানো হয়েছে। তারা যৌথভাবে বাস ডাকাতির বিষয়টি তদন্ত করছেন।
চলন্ত বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের সঙ্গে অমানবিক আচরণের এই ঘটনা সাধারণ মানুষের মধ্যে
আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। ভুক্তভোগীরা দ্রুত ন্যায়বিচার ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে যথাযথ তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করা হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।