আর মাত্র কয়েকদিন বাদে শুরু হবে বোরো ধান কাটা। আগাম জাতের ধান ইত্মেধ্যে পাকতে শুরু করেছে। কিন্তু করোনা ভাইরাসের প্রভাবে ধান কাটা শ্রমিকের তীব্র সঙ্কট দেখা দিতে পারে এমনটি আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। ফলে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার কয়েক হাজার কৃষক ঘরে ধান তোলা নিয়ে দুশ্চিন্তাই দিশেহারা হয়ে পরেছেন। আগৈলঝাড়া উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের চলতি মৌসুমে ৯ হাজার ৫ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো চাষাবাদ করা হয়েছে। উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৪৮ হাজার ১শ’ ৪৮ মেট্রিক টন চাল। ক্ষেতে চলতি বছর ধানের ভাল ফলন হলেও করোনা ভাইরাসের কারণে গোপলগঞ্জ, ফরিদপুর, খুলনা, বাগেরহাট, শরণখোলা, মোড়লগঞ্জ জেলা-উপজেলার ধান কাটা শ্রমিকরা আসবে না বলে জানিয়ে দেয় কৃষকদের। ফলে আগৈলঝাড়ার ধান চাষ করা কৃষকরা পরেছে মহাবিপদে।
শুরু থেকে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ধান বেশ ভাল হয়েছে। কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষকরা মনে করছেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার রোগ বালাই না থাকায় ধানের অনেক ভাল ফলন হবে। কৃষি অফিসের তথ্য মতে, ইতোমধ্যে আগাম জাতের ধান পাক ধরেছে। হয়তো আগামী সপ্তাহের শেষের দিকে এসব ধান কাটা শুরু হবে। কিন্তু সারাদেশে করোনা ভাইরাসের কারনে একদিকে যেমন একের পর এক জেলাগুলো লকডাউন করে দেয়া হচ্ছে। অন্যদিকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে জনসমাগম এড়িয়ে সামাজিক জনদূরত্ব বজায় রেখে চলতে হচ্ছে জনসাধারণকে। কৃষকরা বলছেন, উপজেলা জুড়ে ধান কাটা মৌসুমে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে কয়েক হাজার শ্রমিক এসে ধান কেটে ঘরে তুলে দেন। কিন্তু এবার কি হবে! ইতোমধ্যে করোনা ভাইরাস রোধে এই উপজেলাকে লকডাউন ঘোষণা করেছেন উপজেলা প্রশাসন। এর মধ্যে কিভাবে শ্রমিকরা আসবেন। এনিয়ে সর্বত্র চলছে আলোচনা সমালোচনা। যদি শ্রমিকরা লকডাউনের মধ্যে সময়মত আসতে না পারেন তা হলে কিভাবে ধান ঘরে উঠবে এমন দুশ্চিন্তাই কৃষদের ঘুম নেই ! এমন ভাবনা যেন দূর্বল করে ফেলছে কৃষকদেরকে।
উপজেলার গৈলা গ্রামের খলিলুর রহমান, মধ্য শিহিপাশা গ্রামের জালাল সরদার, কোদালধোয়া গ্রামের নবীন হালদার, কালুপাড়া গ্রামের পশিম সন্যামতসহ আরও অনেক কৃষকরা বলেন, আমন আবাদে ধান পাকার পরেও ধান কাটতে হাতে কিছু সময় পাওয়া যায়। কিন্তু ইরি-বোরো মৌসুমে নানান রকম প্রাকৃতিক দূর্যোগ লেগেই থাকে। ফলে ধান পাকার সাথে সাথেই কেটে ঘরে তুলতে ব্যস্ত হয়ে পরতে হয়। কয়েক বছর ধরে এমনিতে ধানের আবাদে নানা কারণে লোকসান গুণতে হয়েছে। এই মৌসুমেও যদি শ্রমিক সঙ্কটে সময়মতো ধান ঘরে তোলা না যায় তাহলে ব্যাপক লোকসানের কবলে পরতে হবে। তাই ধান ঘরে তুলতে কৃষি শ্রমিকদের অবাধ চলাচলের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন কৃষকরা।
এব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, যে এলাকা থেকে ধান কাটা শ্রমিক আসবেন ওই এলাকার ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার প্রত্যয়নপত্র নিয়ে এলে পথে প্রশাসনসহ কেউ বাঁধা দেবেনা। তবে তারা যে বাড়িতে আসবে সে বাড়িতে তাদের থাকার জন্য আলাদা ঘরের ব্যবস্থা করে দিতে হবে।