আজ ১৯ এপ্রিল। পাবনার বগুড়া-নগরবাড়ী মহাসড়কের সাঁথিয়া উপজেলার পাইকরহাটি গ্রামের (বর্তমান নাম শাহীদনগর) ডাববাগান নামক স্থানে একাত্তরের এদিনে পাক হানাদার বাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখ প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়।
পাকসেনাদের ঢাকা থেকে নগরবাড়ী হয়ে বগুড়া যাবার খবর পেয়ে মুক্তিসেনাদের পক্ষে ইপিআর সুবেদার গাজী আলী আকবরের নেতৃত্বে (বাড়ি কুষ্টিয়া জেলার শান্তিডাঙ্গা গ্রামে) বেঙ্গল রেজিমেন্ট, ইপিআর, পুলিশ বাহিনী, আনছারসহ অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধারা প্রতিরোধ গড়ে তোলে। ডাববাগানের সম্মুখ যুদ্ধে ৫০ জন পাকসেনা নিহতের পর পিছু হটে নগরবাড়ী ফিরে যায়। এ সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হন ইপিআর হাবিলদার মমতাজ আলী, হাবিলদার আঃ রাজ্জাক, নায়েক হাবিবুর রহমান, সিপাহী এমদাদুল হক, সিপাহী ঈমান আলী, সিপাহী রমজান আলীসহ আরও অনেক ইপিআর সদস্য। পাকবাহিনী শক্তি বৃদ্ধি করে রাত্রিবেলা আবার আক্রমন করলে মুক্তিসেনারা পিছু হটে যায়। পাকসেনারা পার্শ্ববর্তী রামভদ্রবাটি, কোড়িয়াল, বড়গ্রাম, সাটিয়াকোলা প্রভৃতি গ্রাম একে একে পুড়িয়ে দিয়ে লোকজনদের ধরে এনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করে শ’শ’ স্বাধীনচেতা গ্রামবাসীকে। এদের মধ্যে করমজার প্রাক্তন চেয়ারম্যান আফাজ ডাক্তার, আঃ লতিফ, শেখ কাজেম আলী, খোয়াজ শেখ, পিয়ার মন্ডল, জাকের আলী শেখ, সৈয়দ আলী মোল্লা, জগনারায়ণ বিশ্বাস প্রমুখ। যে গাব গাছটির পাশে গ্রামবাসীকে হত্যা করা হয়েছিল, সেটি এখনও কালের সাক্ষি হয়ে দাড়িয়ে আছে। আরও আছে সেই ডাববাগান। এলাকাবাসী জায়গাটির নতুন নামকরণ করেছে ‘শহীদ নগর’। ১৯৭১সালের ১৯ এপ্রিলের সেই ভয়াল রাতের কথায় শহীদনগর বাসী ফিরে যায় সেদিনের স্মৃতিতে। শহীদ নগরে রয়েছে এ দিনে শহীদদের ‘গণকবর’। শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতিকে স্মরণীয় করার জন্য এখানে “বীর বাঙালি”নামে একটি ‘স্মৃতি সৌধ’ গড়ে তোলা হয়েছে। করোনা ভাইরাসের কারণে এবার দিবসটি পালনের জন্য কোন কর্মসূচী গ্রহণ করা হবে না বলে নিশ্চিত করেন উপজেলা নিবার্হী অফিসার এসএম জামাল আহমেদ।