কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে শর্তসাপেক্ষে ৬ মাসের জন্য মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) বিকেলে গুলশানে নিজ বাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, বিদেশ না যাওয়ার শর্তে ৪০১ ধারার ১ উপধারা মতে তাকে মুক্তি বিষয়ে মতামত দিয়েছি। মতামত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
মানবিক কারণে তার বয়স বিবেচনায় নিয়ে এ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান আইনমন্ত্রী।
আনিসুল হক বলেন, এসময় তিনি বাসায় থেকে চিকিৎসা নেবেন। দেশের বাইরে যেতে করতে পারবেন না। আর আজকের পরিপ্রেক্ষিতে (কোভিড-১৯ পরিস্থিতি) কাউকে বিদেশে যেতে বলা মানে তাকে সুইসাইড (আত্মহনন) করতে বলা।
বাসায় অসুস্থ হলে তিনি কীভাবে চিকিৎসা নেবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, চিকিৎসার যদি দরকার হয় তিনি বর্তমানে বাংলাদেশের সবচেয়ে মানসম্মত হাসপাতালে (বিএসএমএমইউ) আছেনই। সেখানে তার চিকিৎসা চলছেই। আর ভবিষ্যতে এ বিষয়টি অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে বোঝা যাবে।
সরকারের সিদ্ধান্ত কখন থেকে কার্যকর হবে? জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, যখন থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাকে মুক্তি দেবে তখন থেকে।
সূত্র জানায়, খালেদা জিয়ার কারামুক্তি এখন সময়ের ব্যাপার।
বিশ্বজুড়ে যে চিত্র দেখা যাচ্ছে, তাতে করোনাভাইরাসে ৬০ বছরের বেশি বয়সী মানুষের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। সেজন্য ৭৫ বছর বয়সী খালেদা জিয়াকে মুক্তির দাবি জানিয়ে আসছিল বিএনপি।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় দুই বছরের বেশি সময় ধরে কারাগারে আছেন খালেদা জিয়া। বর্তমানে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন।
স্বাস্থ্যগত অবস্থার অবনতির কথা উল্লেখ করে তার পরিবারের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত দুই দফায় জামিনের জন্য আবেদন করা হয়েছে।
পরবর্তীতে বিদেশে চিকিৎসার জন্য মুক্তি চেয়ে স্বরাষ্ট্র ও আইনমন্ত্রীর কাছে চিঠি দেয় তার পরিবার।
প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালে বিএনপি চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ মামলা হয়।
দশ বছর পর ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারী মামলার রায়ে তার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয়। তবে পরে হাইকোর্ট সেই সাজা বাড়িয়ে দশ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন।