অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা বীমার গুরত্ব সম্পর্কে কতটুকু অবহিত ? এ ব্যাপারে শিক্ষা দানের সাথে সম্পৃক্ত বিশিষ্ট জনদের অভিমত তুলে ধরা হলো।


তাপস রঞ্জন তলাপাত্র ঃ এ প্রসঙ্গে চাটমোহরের চড়–ইকোল উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাপস রঞ্জন তলাপাত্র অভিমত পোষণ করেন, “ছাত্র-ছাত্রীদের সঞ্চয়ী মনোভাব গড়ে তোলার চেষ্টা করা যেতে পারে। তবে তৃতীয় থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত অধ্যয়নরত ছাত্র ছাত্রীদের জন্য রচনার বিষয় বীমার গুরত্ব যথার্থ নয়। যেহেতু তাদের পাঠ্য বইয়ে এ বিষয় অন্তর্ভূক্ত নয় বা বীমা সম্পর্কে তাদের তেমন ধারণাও থাকার কথা নয় তাই রচনার বিষয়বস্তু নির্ধারণে আরো একটু চিন্তা ভাবনা করে বিষয় নির্ধারণ করলে ভাল হতো। বঙ্গবন্ধুর শিশুকাল. বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা জীবন, বঙ্গবন্ধুর মানবতাবাদ, বাংলাকে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর ভাবনা, সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা বা এরকম অন্য বিষয় নির্ধারণ করলে ভালো হতো বলে আমার মনে হয়।”

মোঃ মোতাহার আলী ঃ চাটমোহর মহিলা ডিগ্রী কলেজের সহঃ অধ্যাপক মোতাহার আলী অভিমত পোষণ করেন, “একজন শিক্ষক হিসেবে আমার
এটা মনে হয় যে, বীমার মতো একটি জটিল ও গুরত্বপূর্ণ বিষয় অনেক শিক্ষিত ব্যক্তিই যেখানে ভাল ধারণা রাখেন না সেখানে প্রাথমিক ও
নি¤œমাধ্যমিক স্তরের একজন শিক্ষার্থীর এ বিষয়ে রচনা লেখা অনেকটাই অসম্ভব। তাই রচনার বিষয়বস্তু নির্ধারণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আরো একটু বিবেচনা করলে ভাল হতো।”
অধ্যক্ষ সদর উদ্দিন ঃ প্রফেসর বয়েন উদ্দিন ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ সদর উদ্দিন
অভিমত পোষণ করেন, “যেহেতু প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত
ছাত্র ছাত্রীদের বীমা বিষয়ে পড়ানো হয়না বা ধারণা দেওয়া হয় না বা এ বিষয়টি তাদের পাঠ্যসূচীতেও অন্তর্ভূক্ত নেই সেক্ষেত্রে বীমা সম্পর্কে
সুন্দর ভাবে রচনা উপস্থাপন করা এ স্তরের ছাত্র ছাত্রীদের পক্ষে প্রায় অসম্ভবই। বিশেষত ঃ তৃতীয় থেকে অষ্টম শ্রেনীর শিক্ষার্থীদের পক্ষে
বীমার গুরত্ব সম্পর্কে রচনা লেখা সম্ভব বলে মনে হয় না।”
অধ্যক্ষ আব্দুল হাই সিদ্দিকী ঃ মির্জাপুর ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল
হাই সিদ্দিকী অভিমত পোষণ করেন, “বীমা একটি কঠিন বিষয়। যারা
অর্থনৈতিক ধ্যান-ধারণা, চিন্তা-চেতনা পোষণ করেন, তারা বীমা সম্পর্কে জেনে থাকতে পারেন। যারা বীমা সম্পর্কে জ্ঞাত তারা এ সম্পর্কে ধারণা দিতে পারেন। অনেক সাধারণ বড় মানুষও বীমা সম্পর্কে
বা বীমার গুরত্ব সম্পর্কে সঠিক ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ দিতে পারবেন না।
যেহেতু প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের ছাত্র ছাত্রীরা বীমার গুরত্ব সম্পর্কে অবগত নয় সেহেতু আমার মনে হয় এ বিষয়ে রচনা লিখতে দিলে তারা এর
সঠিক ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ দিতে পারবে না। এটি তাদের উপর বোঝা চাপিয়ে দেয়া বৈ কিছু নয়। এ স্তরের শিক্ষার্থীদের রচনার এমন বিষয়
নির্ধারণ করা মোটেও ঠিক হয় নি।”
অধ্যক্ষ আলী হায়দার সরদার ঃ হরিপুর দূর্গাদাস স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ
আলী হায়দার সরদার অভিমত পোষণ বলেন, “ আমার ব্যক্তিগত অভিমত হলো
বাচ্চাদের বয়স, মানসিকতা, মেধা, শ্রেণী অনুযায়ী রচনার বিষয়বস্তু নির্ধারণ করা উচিত ছিল। প্রাথমিক, নি¤œমাধ্যমিক ও মাধ্যমিক

শিক্ষার্থীদেও বীমা সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকার কথা নয়। তাই, রচনার বিষয়বস্তু নির্ধারণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সচেতন হওয়া প্রয়োজন
ছিল।”
এ ব্যাপারে চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরকার মোহাম্মদ রায়হান জানান, রচনার বিষয়বস্তু মন্ত্রনালয় নির্ধারণ করে। এ ব্যাপারে
আমরা মন্ত্রনালয়ের নির্দেশনা পালন করি।
শেষ কথা ঃ গত বৃহস্পতিবার চাটমোহর উপজেলা শিল্পকলা একাডেমিতে বীমার গুরত্ব সম্পর্কে অনুষ্ঠিত রচনা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহনকারীরা জানান, প্রতিযোগির সংখ্যা আশংকাজনক ভাবে কম
হওয়ায় কর্তৃপক্ষ তিনটি ক্যাটাগড়িতে প্রতিযোগিতা হবার কথা থাকলেও তিনটি গ্রুপকে এক গ্রুপে পরিণত করে রচনা প্রতিযোগিতা সম্পন্ন করেন।
লেখক- সাংবাদিক, প্রভাষক ও গীতিকার বাংলাদেশ টেলিভিশন।
ইকবাল কবীর রনজু
চাটমোহর, পাবনা