নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার প্রায় ২০টি গ্রামে মাঠের পর মাঠ জুড়ে দিগন্ত বিস্তৃত শিমের চাষ করা হয়েছে। এ এলাকার পাঁচ সহস্রাধিক কৃষক শুধু শিম চাষের মাধ্যমে নিজের ভাগ্যকে বদলে দিয়েছেন। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও তারা শিম বিক্রি করে প্রায় ৩৫ কোটি টাকা আয় করবেন বলে আশা করছেন।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার গোপালপুর, রাজাপুর, রাওতা, নটাবাড়িয়া, পূর্ণকলস, নারায়ণপুর, আস্তিকপুর, অর্জুনপুর, কচুয়া, মৃধা কচুয়া, দৌলতপুর, গোসাইপুর, শিবপুর, গড়মাটি, ধলা, তেলো, দাসগ্রাম ও কেলা গ্রামে সবচেয়ে বেশি শিম চাষ হয়ে থাকে। এসব গ্রামে এ বছর মোট প্রায় দেড় হাজার হেক্টর জমিতে শিমচাষ করা হয়েছে।
গোপালপুর গ্রামের শিমচাষী আবদুল মালেক ও রাসেল জানান, শিমচাষে বিঘা প্রতি ৩০-৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়। প্রতি বিঘা জমিতে ৮০-৮৫ হাজার টাকার শিম উৎপন্ন হয়। মৌসুমের শুরুতে প্রতি কেজি শিম ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে প্রতি কেজি ২০-২৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সব খরচ বাদে ৪৫-৫০ হাজার টাকা লাভ থাকে।
সরেজমিনে কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, ব্যাপকহারে শিম চাষের ফলে এলাকার দরিদ্র-অসহায় মহিলা ও বেকার যুবকেরা অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছল হয়েছেন। শিমের বীজ রোপণ থেকে শুরু করে শিম তোলা ও বাজাতজাতকরণ পর্যন্ত এসব মহিলা ও বেকার যুবকেরা ব্যস্ত সময় কাটান। এতে শিম মৌসূমের প্রায় ৬ মাস তাদের কাজের কোন অভাব হয় না। শিম কেনাবেচার জন্য পার্শ্ববর্তী মুলাডুলি বাজারে গড়ে উঠেছে আড়ত ব্যবসা।
মুলাডুলি হাটের আড়ৎদার দুলাল হোসেন জানান, বর্তমানে প্রতি মণ শিম ৮০০-৯০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আড়তে শিমের আমদানি প্রচুর। প্রতিদিন এ আড়ত থেকে ৩০-৩৫ ট্রাক শিম রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইকবাল আহম্মেদ বলেন, জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি অপেক্ষাকৃত স্বল্প সময়ে, কম পরিশ্রমে অধিক লাভজনক হওয়ায় চাষীরা ব্যাপকহারে শিম চাষে ঝুঁকেছেন। মূলত শিমচাষের মাধ্যমেই এ এলাকার কৃষকেরা নিজেদের ভাগ্যকে বদলে দিয়েছেন।