ঝিনাইদহের বিভিন্ন উপজেলায় ক্ষেতের ফসল রক্ষার নামে নির্বিচারে পাখি নিধন করা হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রশাসন ও বনবিভাগের কর্মকর্তারা কোন ভুমিকা পালন করছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। বাউকুল ক্ষেতসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেতে কারেন্ট জাল দিয়ে ফসল রক্ষার নামে বিপন্ন প্রজাতির পাখি হত্যা করা হচ্ছে। অথচ এই পাখি পরাগায়নের মাধ্যমে কৃষি উৎপাদনে মুখ্য ভুমিকা পালন করে থাকে। খোজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার মহেশপুর, কোটচাঁদপুর ও শৈলকুপা উপজেলার বিভিন্ন মাঠে কারেন্ট জাল দিয়ে ফসলের ক্ষেত রক্ষা করা হচ্ছে। এই জাল ব্যবহারের ফলে ফসলের ক্ষতি করে না এমন পাখিও মারা যাচ্ছে। ক্ষেতের উপর দিয়ে রাতে ও দিনে উড়ে চলা পাখিও ধরা পড়ছে কারেন্ট জালে। শৈলকুপার দুধসর এলাকার এক কৃষক কয়েক বছর ধরে তার বাউকুল ক্ষেতে কারেন্ট জাল বিস্তার করে পাখি নিধন করে আসছিলো। সম্প্রতি তিনি তার কুলের ক্ষেতে কেটে ফেলেছেন। মহেশপুর ও কোটচাঁদপুর এলাকার বহু মাঠে কারেন্ট জাল দিয়ে ফসলের ক্ষেত ঘিরে রাখা হয়েছে। পাখি বিশেষজ্ঞরা ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে নির্বিচারে পাখি হত্যাকারী কৃষকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী তুলেছেন। বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ পরিবেশ ও জীব বৈচিত্র সংরক্ষন কমিটির সভাপতি মাসুদ আহম্মদ সনজু বলেন, পাখি নিধন করা দন্ডনীয় অপরাধ। পাখি আমাদের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। কিন্তু কৃষক রুপি কিছু ব্যবসায়ীর কারণে পাখির জীবন বিপন্ন হচ্ছে। পাখি আমাদের শষ্য ভান্ডারকে সমৃদ্ধ করে। কাজেই পাখি নিধনকারীদের বিরুদ্ধে এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি বলেন আমি অনেক বছর ধরেই গনমাধ্যমে বক্তব্য দিয়ে আসছি। নানা কর্মসুচি পালন করেছি। তারপরও প্রশাসনের কোন নজরদারী নেই। ধর্মীয় নেতারা জানান, ক্ষেতে উৎপাদিত ফলমুল পশু পাখি না খেলে বরকত আসে না। সেখানে তাদের হক ও রিজিক রয়েছে। যারা কারেন্ট জাল দিয়ে পাখি নিধন করেন, তাদের কঠিন গোনাহগার এবং শাস্তির সম্মুখিন হতে হবে। বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ জেলা বণ কর্মকর্তা গিয়াস উদ্দীন মুকুল বলেন, পাখি হত্যা ও ধরা অপরাধ। তবে ক্ষেতে কারেন্ট জাল দিয়ে পাখি হত্যার বিষয়ে আমাদের আইনে সুস্পষ্ট কোন নির্দেশনা নেই। আমরা চেষ্টা করছি কৃষকদের এই পন্ধা থেকে নিবৃত্ত করতে, কিন্তু পারছি না।