রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার ভবানীগঞ্জ পৌরসভার চাঁনপাড়া মহল্লায় নির্মানাধীন একটি পাঁচতলা ভবনের পায়খানার হাউজ তৈরি করতে খনন করার সময় উদ্ধারকৃত গুপ্তধন নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। উদ্ধারকৃত ওই গুপ্তধন নিয়ে এখনও আত্মগোপন করে আছে ভবন নির্মাণের সাথে জড়িত পাঁচ শ্রমিক। পুলিশ তাদের হন্যে হয়ে খুঁজছে। পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি চাঁনপাড়া মহল্লার মিষ্টি ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন তার পুরাতন টিনসেড বাড়িটি ভেঙ্গে সেখানে একটি পাঁচতলা ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করে। আর সি সি পিলার দিয়ে ভবন নির্মানের কাজ কিছু দূর এগিয়ে যায়। গত ১১ ফেব্রুয়ারী নির্মানধীন ভবন সংলগ্ন স্থানে একটি পায়খানার হাউজ তৈরির জন্য খনন কাজ শুরু করে চাঁনপাড়া মহল্লার ইবর উদ্দিনের ছেলে আলতাফ হোসেন(৩২) ও একই এলাকার নির্মাণ শ্রমিক ওসমান(৩৫), দেউলিয়া গ্রামের নির্মাণ শ্রমিক রহিম উদ্দিন(৪৫) সহ আরো দুই শ্রমিক। ওই দিন সকাল থেকেই হাউজ নির্মাণের জন্য খনন কাজ শুরু করে শ্রমিকরা। দ্রুত এগিয়ে চলে খনন কাজ। বাড়ির মালিক মিষ্টি ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন খনন কাজ তদারকীর জন্য মহিলাসহ অন্যান্যদের দায়িত্ব দিয়ে তিনি একটি ইসলামী জালসায় দোকান নিয়ে চলে যান। এদিকে বেলা তিনটার দিকে হাউজ খনননের প্রায় শেষ পর্যায়ে এসে শ্রমিকরা সেখানে একটি বিশালআকৃতির চারির মধ্যে একটি মাটির কলসের সন্ধান পায়। চারিটির চারি পাশে ইট দিয়ে ঘিরে রাখা ছিল। স্থানীয়দের মতে, মাটির কলসের সন্ধান পাওয়ার পর শ্রমিকরা বেশ কৌতুহলী হয়ে পড়ে। বিষয়টি বাড়ির মহিলা সদস্যরা আঁচ করতে পেরে জালসায় মিষ্টির দোকান নিয়ে ব্যস্ত বাড়ির মালিক আলমগীরে কাছে মোবাইল ফোনে খবর পাঠায়।এসময় আলমগীর খবরটি জানার পর তড়িঘড়ি করে দোকান বন্ধ করে ঘন্টাখানেকের মধ্যে বাড়ি ফিরে এসে জানাতে পারে শ্রমিকরা উদ্ধার হওয়া ওই মাটির কলসিটি নিয়ে মুহূর্তের মধ্যেই উদাও হয়ে গেছে। এ সময় তিনি শ্রমিকদের মোবাইলে বার বার কল করে সেগুলো বন্ধ পায়। সাথে সাথে বিষয়টি বাগমারা থানার পুলিশকে অবহিত করা হলে ওই দিন সন্ধ্যায় ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন বাগমারা থানার উপ-পরিদর্শক হাসান আলী। এ সময় তিনি শ্রমিকদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে তাদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে শ্রমিকদের একজন সহযোগির সাথে যোগায়োগের করে জানতে পারেন শ্রমিকরা সবাই নাটোর এলাকায় অবস্থান করছে। এ সময় তাদের মোবাইল নম্বর গুলোও বন্ধ পাওয়া যায়। এস আই হাসান আলী জানান, শ্রমিকরা অত্যন্ত ধূর্ত প্রকৃতির। তারা বার বার নিজেদের অবস্থান পরিবর্তন করে চলেছে। মোবাইল ট্রাকিংয়ে আমরা তাদের অবস্থান জানার ও আটকের চেষ্টা করছি। বাড়ির মালিক আলমগীর হোসেন জানান, শ্রমিকদের সাথে তার পাঁচতলা ভনন নির্মাণের চুক্তি হয়েছে। প্রায় মাস খানেক ধরে তারা কাজ করছে। ওই দিন হাউজ খনন করতে গিয়ে একটি মাটির কলসি পাওয়া যায়। পরে শ্রমিকরা বাড়ির লোকজনের দৃষ্টি এড়িয়ে কৌশলে কলসিটি নিয়ে আত্মগোপন করে। বিষয়টি সাথে সাথে বাগমারা থানায় অবহিত করা হয়েছে। বাগমারা থানার ওসি আতাউর রহমান জানান, শ্রমিকদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। তাদেরকে পাওয়া গেলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে বলে তিনি জানান।