ইয়ানূর রহমান : বেনাপোল পৌরসভার উন্নয়নের নামে প্রতিষ্ঠানটির মেয়র আশরাফুল আলম লিটন নিজের ভাগ্যের উন্নয়ন করে চলেছেন। বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজে ফাঁকিবাজি করে সেখান থেকে তিনি পকেটস্থ করছেন কোটি কোটি টাকা।
শুধু তাই নয়; গোপনে টেন্ডার দিয়ে সেই কাজ তার নিকট আত্মীয় ঠিকাদারকে পাইয়ে দিচ্ছে। অবশ্য বেনাপোলে প্রচার রয়েছে, টেন্ডার আত্মীয় বা ঘনিষ্ঠজনকে পাইয়ে দিলেও কাজ করেন মেয়রই। ফলে এলাকার উন্নয়ন হোক বা না হোক মেয়র লিটনের ব্যক্তিগত উন্নয়ন হচ্ছে ঠিকই।
২০১১ সালে বেনাপোল পৌরসভার নির্বাচনের পর ভাগ্যের চাকা খুলে যায় আশরাফুল আলম লিটনের। পৌরসভার বিভিন্ন উন্নয়ন বরাদ্দের একটি অংশ তার পকেটে ঢুকতে থাকে। পৌর পরিষদের একাংশকে ম্যানেজ করে তিনি এ কাজ করতে থাকেন। একাধিক পৌর কাউন্সিলর, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ভাষ্য, গেল আট বছরে পৌর এলাকায় কোটি কোটি টাকার কাজ হয়েছে। এর প্রত্যেক খাত থেকেই তিনি একটি অংশ ভাগ পেয়েছেন। এর বাইরে প্রায় প্রতিটি টেন্ডারই পাইয়ে দেয়া হয়েছে তার ঘনিষ্ঠজনদের। মূলত ঘনিষ্ঠজনদের নামে দরপত্র জমা দেয়া হলেও সেই প্রতিষ্ঠানের কাজ করেছেন মেয়র লিটন।
বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অতি গোপনে সব কাজের টেন্ডার কার্যসম্পন্ন হয়েছে। প্রথম শ্রেণির কোনো খবরের কাগজে টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়নি। অখ্যাত ও আন্ডার গ্রাউন্ড মার্কা কাগজে গোপনে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে মেয়র লিটন তার মামার প্রতিষ্ঠান ও গাড়ির ড্রাইভারের প্রতিষ্ঠানের নামে দরপত্র জমা দেয়। কাজ বাগিয়ে নিতেই তিনি এমনটি করে আসছেন।
সূত্র মতে, বর্তমানে বেনাপোল পৌরসভার বস্তি উন্নয়নে ইউজিপি-৩ প্রকল্পের আওতায় দুই কোটি ৬৬ লক্ষ ৬৭ হাজার ৬৭৩ টাকার কাজ চলমান রয়েছে। এখানে যে কাজগুলো হচ্ছে সেগুলো যেনতেনভাবে করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। শুধু তাই নয়, এই প্রকল্পের কাজ শুরুর আগে অখ্যাত দৈনিকে টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। ফলে ঠিকাদারের অংশগ্রহণ ও কার্যাদেশ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন খোদ পৌর আওয়ামী লীগের নেতারাই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বেনাপোল পৌরসভার সচিব রফিকুল ইসলাম বলেন, ইউজিপি-৩ প্রকল্পের বিজ্ঞাপন স্থানীয় কেনো দৈনিকে দেওয়া হয়নি। ঢাকার পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়া হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মনে হয় নিউজ নামে একটি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছিল। ঠিকভাবে মনে নেই। অফিসে আসেন; দেখে বলতে পারবো’।