স্টোরে কম্বল, মেঝেতে কাঁপছে রোগী যশোরে শীতে আক্রান্ত শিশুরা, একদিনে চিকিৎসা নিয়েছে ৩৩৯, ভর্তি ৩৯

ইয়ানূর রহমান : প্রচন্ড শীতে ঠান্ডাজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব হয়েছে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে শিশুরা। রবিবার ২৫০ শয্যা যশোর জেনারেল হাসপাতালের বহির্বিভাগে শীত জনিত রোগে আক্রান্ত ৩৩৯ শিশু চিকিৎসা নিয়েছে। এরমধ্যে ভর্তি হয়েছে ৩৯ জন।

এদিকে ভর্তি রোগীরা প্রচ- শীতে হাসপাতালের মেঝেতে কাঁপলেও কম্বল সরবরাহ করা হচ্ছে না। বিশেষ করে পুরুষ ও মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে কোনো শয্যা না থাকায় চিকিৎসাধীন রোগীদের কষ্টের শেষ নেয়। রোগী স্বজনদের ভাষ্যমতে, এখনো পর্যন্ত কোনো রোগীকে হাসপাতাল থেকে কম্বল দেয়া হয়নি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে কম্বল স্টোর থেকে বেরই করা হয়নি।

রবিবার রাত সাড়ে ৭টা পর্যন্ত হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ২৮, শিশু ওয়ার্ডে ৩৯, পুরুষ ও মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে ১শ’ ১৩ রোগী চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেবিকারা জানান, শীতের কারণে রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। হাসপাতালের বহির্বিভাগ থেকে চিকিৎসা গ্রহণকারী শিশুদের বেশিরভাগই নিউমোনিয়া, ব্রংকাইটিস, শ্বাসকষ্ট, অ্যাজমা, হাঁপানি, সর্দি-জ্বর ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত।

রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় ডায়রিয়া ও শিশু ওয়ার্ডের মেঝেতেও অনেকে রয়েছে। কোনো শয্যা না থাকায় মহিলা ও পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডে সকল রোগী মেঝেতে শুয়ে চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করছেন।

সরেজমিন দেখা গেছে মেঝেতে শীতে কাঁপছে রোগীরা। অথচ রোগীদের সরকারি কম্বল দেয়া হয়নি। রোগীর স্বজন মেহেরুন আক্তার ও লিয়াকত আলী জানান, তাড়াহুড়া করে রোগীকে হাসপাতালে আনার কারণে তাৎক্ষণিকভাবে শীত নিবারণ উপকরণ আনতে ভুলে যান। কিন্ত সেবিকাদের কাছে চেয়েও কম্বল পাননি। কোনো কোনো রোগীর স্বজনকে বলা হচ্ছে ‘ওয়ার্ডে ইনচার্জ নেই। কম্বল স্টোরে তোলা রয়েছে। ইনচার্জ আসলে চেয়ে নেবেন।’

হাসপাতালের স্টোর কিপার শরিফুল ইসলাম জানান, গত শীত মৌসুমে ওয়ার্ড ইনচার্জদের পর্যাপ্ত পরিমাণে কম্বল সরবরাহ করা হয়েছিলো। এবার এখনো ইনচার্জরা চাহিদাপত্র দেয়নি। স্টোরে কম্বল আছে। চাহিদাপত্র দিলেই সরবরাহ করা হবে।

হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার আব্দুর রশিদ জানান, শীতের প্রকোপ বাড়ায় ঠান্ডাজনিত কারণে বয়স্ক মানুষ ও শিশুদের রোগবালাইও বেড়েছে। আক্রান্তদের জরুরি বিভাগে আনা হলে প্রয়োজন মতো চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হচ্ছে। প্রয়োজন মনে হলে ভর্তি করে ওয়ার্ডে পাঠানো হচ্ছে।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবুল কালাম আজাদ লিটু জানান, শীতজনিত রোগে আক্রান্তদের সংখ্যা বেড়েছে। আবহাওয়া এভাবে চলতে থাকলে রোগীর সংখ্যা আরো বেড়ে যাবে। তিনি আরো জানান, ওয়ার্ড ইনচার্জসহ সকল সেবিকাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে রোগীর জন্য কম্বল চাওয়া মাত্র সরবরাহ করার জন্য। কম্বল না দেয়ার বিষয়ে রোগীর লোকজন তাকে কিছু বলেননি। অবশ্যই রোগীদের কম্বল দেয়ার বিষয়ে কার্যকরী প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।