রাজশাহী জেলায় বিভিন্ন ফসলের চাষাবাদ হলেও প্রধান ফসল বোরো ধান। অবৈধভাবে পুকুর খনন করায় বিলের পানি নামতে সময় লাগায় বীজতলা তৈরি ও চারা প্রস্তুতে কিছুটা সময় লাগার পরেও এখন পুরো দমে বোরো ধান রোপণ কাজে ব্যাস্ততা বেড়েছে কৃষকদের। তবে পৌষের এই তীব্র শীত আরকুয়াশা জন্য বাঁধার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাঝে মাঝে দিনের শেষে সূর্যের দেখা মিললেও উত্তরের হীমেল হাওয়ার কারণে শীত যেন প্রখর থেকে প্রখর হচ্ছে। ঘন কুয়াশা আর তীব্র শীতের মাঝে সকাল থেকে সন্ধ্যা পযর্ন্ত জেলার বিভিন্ন উপজেলার কৃষকরা বোরোর চারা রোপণে উৎসবে মেতে উঠেছেন। তবে বর্ষার পানি আর পুকুর খননের কারনে পানি নামতে সময় লাগায় এ বছর বোরো চাষে পিছিয়ে পড়েছি। তাই কৃষকদের কাছে বোরো ধানের চাষ নিয়ে ব্যবস্থতা সময় পার করতে হচ্ছে। কিন্তু রোপা আমন ধান কেটে মাড়াই শেষ হতে না হতেই বোরো ধান আবাদের প্রস্তুতি নেয়া শুরু করেন তারা। এবং প্রচন্ড শীত উপেক্ষা করে বীজতলা তৈরি করা থেকে শুরু করে চারা রোপণ করা পর্যন্ত ব্যস্ততার মধ্যে সময় কাটে তাদের। ইতোমধ্যে নানান সমস্যার মধ্যেও ধানের চারা রোপণের জন্য কোমর বেঁধে মাঠে নেমে পড়েছেন কৃষকেরা। মাঠের দিকে নজর দিলেই চোখে পড়ে ব্যস্ত চাষিদের। গভীর নলকূপ এখনও পুরোপুরিভাবে চালু না হলেও বিলের উপরের জমি গুলোতে শ্যালো ইঞ্জিনের মাধ্যমে সেচ দিয়ে ধানের চারা রোপণের কাজ চলছে। কোনো জমিতে চলছে চাষ, বীজতলা থেকে তোলা হচ্ছে বীজ, চলছে রোপণ, সব মিলিয়ে মাঠে জোরেশোরে চলছে বোরোর আবাদ। অপরদিকে গোদাগাড়ীর প্রেমতলী এলাকার বর্গাচাষি আজাহার আলী জানান, গত বছর ৭ বিঘা জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছিলেন। এবার করছেন পাঁচ বিঘা জমিতে। এর মধ্যে নিজের রয়েছে দুই বিঘা। আর বাকিটা জমি মালিকের। জমি তৈরি হয়ে গেছে। দু’এক দিনের মধ্যে বীজ রোপণ করবেন। গত বছর বিঘা প্রতি আবাদে খরচ হয়েছে সাড়ে ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা। এবার ৬ হাজার টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ কারণে শ্রমিকের মজুরি ৩০০ টাকার উপরে দিতে হচ্ছে। রজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা জানান, চার-পাঁচ বছর থেকে জেলাতে বোরো ধানের আবাদ ক্রমশই বেড়ে চলেছে। এর অন্যতম কারণ অন্যান্য বছরের চেয়ে ধানের দাম বেড়ে যাওয়ায় কৃষকেরা পতিথ্য জমিতে চাষাবাদ শুরু করে দিয়েছেন। এছাড়া মৌসুমের ফসলের তুলনায় এই ধানে অধিক পরিমাণে সেচ দিতে হয়। আর সেচ দেয়ার জন্য গভীর নলকূপের উপর ভরসা করতে হয়।