বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: শখের বসে মাছ চাষ করে আর্থিকভাবে
যুগান্তকারী সাফল্য অর্জন করেছেন সিলেটের বিশ্বনাথের যুবক মুহিবুর রহমান
মাহবুব। তিনি উপজেলার লামাকাজি ইউনিয়নের মঙ্গলগিরি গ্রামের মৃত আজমান আলীর
ছেলে। নিজ প্রচেষ্টাই তাকে এ সফলতা আনতে সহায়তা করেছে।বেকারত্ব
দূর করতে তিনি মৎস্য চাষাবাদ শুরু করেন। আর্থিকভাবে তিনি সচল থাকলেও মাছ
চাষাবাদ করে আয়ের উৎস খুঁজতে থাকেন। ২০১৩ সালে নিজের ১২০ শতক জমিতে একটি
পুকুর নির্মাণ করে সাইফ মাছের খামার নির্মাণ করেন। আর সেই খামারে কার্প
জাতীয় মিশ্র মাছ চাষাবাদ শুরু করেন। মৎস্য অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ
গ্রহণ করে কার্যক্রম সম্প্রসারণ করতে থাকেন। প্রথম বছরই তিনি সাফল্যের মুখ
দেখতে শুরু করেন। তার খামারের চাষাবাদ শুরু হলেও এ পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি
কোনো সংস্থা তার স্বাবলম্বী হওয়ার নেপথ্যে ন্যূনতম ভূমিকা রাখেনি।
সম্পূর্ণ নিজের প্রচেষ্টায় এ পর্যন্ত এগিয়েছেন।
তিনি
কোনো সংস্থা থেকে প্রযুক্তিগত সহায়তা বা অনুদান পাননি। তবে
সরকারি-বেসরকারি কোনো সহায়তা পেলে এ খামারটি মাছ চাষ সম্প্রসারণের মাধ্যমে
একই সময়ে অর্জিত সাফল্য আরো দ্বিগুণ করতে পারতেন। তার এই সফলতা দেখে ওই
এলাকার আশপাশের গ্রামের শিক্ষিত বেকার যুবকেরা মাছ চাষের দিকে আগ্রহী হয়ে
পড়েছে।সরেজমিনে সাইফ খামারে গিয়ে দেখা যায়, নিজ
উদ্যেগে তিনটি পুকুর বর্তমানে ৩ লাখ টাকা পুঁজি নিয়ে মাছ চাষ শুরু করেন
তিনি। এখন পর্যন্ত প্রায় ৫ লাখ টাকার মাছ বিক্রয় করেছেন। আরো প্রায় ৩ লাখ
টাকার মাছ তার পুকুরে রয়েছে। তার কঠোর পরিশ্রম, সততা আর ঘামের প্রতিফলন
সুরভিত হয়ে বেকারত্বের অভিশাপে দ্বার খুলে স্বাবলম্বী হয়েছে। বর্তমানে তার
৩টি বড় পুকুর রয়েছে। সেইসব পুকুরে রুই, মৃগা, শরপুটি, গাসগাও মাছসহ বিভিন্ন
প্রজাতীর মাছ চাষ করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। তার সব খরচ বাদে বৎসরে
আয় থাকে প্রায় ৫ লাখ টাকা।
মুহিবুর রহমান মাহবুব
জানান, শখের বসে ২০১৬ সালের জুলাই মাসের প্রথম দিকে ১২০ শতক জমিতে মাছ চাষ
শুরু করি। এতে সফলতার মুখ দেখতে পাই। পরে আরো ২৭০ শতক জমিতে দুটি পুকুর করে
মাছ চাষা শুরু করি। তিনটি পুকুরে প্রায় ৩ লাখ টাকার মাছ চাষা করি।
ইতিমধ্যে প্রায় ৫ লাখ টাকার মাছ বিক্রি করেছি। বর্তমানে তিনটি পুকুরে প্রায়
৩ লাখ টাকার মাছ রয়েছে। মৎস্য অফিস থেকে দুই-একবার মাছ চাষের প্রশিক্ষণ
গ্রহণ করি। প্রশিক্ষণের আগে মাছ চাষে কিছুটা ক্ষতি হয়েছিল। কিন্তু
প্রশিক্ষণ নেয়ার পর আর কোনো ক্ষতি হয়নি।
উপজেলা
সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সফিকুল ইসলাম ভূইয়া বলেন, সফল মৎস্য খামারী মহিবুর
রহমান মাহবুব মাছ চাষের কারণে উপজেলা মৎস্য অফিস থেকে বিভিন্ন ভাবে
সহযোগিতা পেয়েছেন। আমরা উপজেলার মৎস্য চাষীদের সকল ধররে সহযোগিতা করে আসছি।