ঈশ্বরদীতে ভাড়া নিয়ে বিবাদের জের ধরে চলন্ত বাস হতে ধাক্কা দিয়ে সড়কে ফেলে সুমন হোসেনকে হত্যার ঘটনায় বাসের সুপারভাইজার ও হেলপারকে গ্রেফতার করেছে ঈশ্বরদী থানা পুলিশ। কুষ্টিয়ার দৌলতপুর এলাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযা চালিয়ে এদের সন্ধ্যার দিকে গ্রেরফার করা হয়েছে বলে জানান থানার অফিসার ইনচার্জ বাহাউদ্দিন ফারুকী। গ্রেফতারকৃতরা হলো দৌলতপুরের ধর্মদাহ গ্রামের জাহাঙ্গির আলমের পুত্র বাসের হেলপার নাসিম উদ্দিন (২২) এবং দৌলতপুরের গোড়ার পাড়া গ্রামের আনারুল ইসলামের পুত্র বাসের সুপারভাইজার রোকনুজ্জামান (৩৮)। শনিবার দুপুরে নিহতের স্ত্রী রুমা খাতুন বাদী হয়ে ঈশ্বরদীর সুপার সনি পরিবহনের বাসের চালক ও দুই সহকারীকে আসামি করে ঈশ্বরদী থানায় মামলা দায়ের করলে ৬ ঘন্টার মধ্যেই পুলিশ আসামীদের গ্রেফতার করতে সমর্থ হয়।
মামলার এজাহারে জানা যায়, সুমন হোসেন গত ১৯ শে ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে রূপপুর মোড় হতে ভেড়ামারা যাওয়ার উদ্দেশ্যে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা মেহেরপুরের গাংনী গামী সুপার সনি পরিবহনে উঠে বসেন। এসময় বাসের সহযোগীদের সাথে ভাড়া নিয়ে বাগ্বিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে বাসের দুই সহযোগী তাকে মারপিট করে। বাসটি লালন শাহ সেতুর পাকশী টোল প্লাজা পার হতেই সহযোগী দু’জন সুমনকে বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। চালক সুমনের শরীরের উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে চলে যান। চাকায় পিষ্ট হয়ে সুমন গুরুতর আহত হয়। পরে হাইওয়ে পুলিশের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাহাউদ্দীন ফারুকী জানান, সিসিটিভি ফুটেজের ছবি দেখে গাড়িটির নম্বর সন্ক্ত করা হয়। এই সূত্র ধরেই মামলা দায়ের এবং তরিৎ তদন্ত চালিয়ে আসামী সনাক্ত পূর্বক আসামীদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
সুমনের বাড়ি কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় । তিনি ঈশ্বরদীর পাকশী ইউনিয়নের ঝাউতলা গ্রামে শ্বশুরবাড়ির পাশে ভাড়া বাড়িতে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে থাকতেন। পাকশীর রূপপুর মোড়ে একটি খাবার হোটেলে শ্রমিকের কাজ করতেন। নিহত সুমনের স্ত্রী, ১ ছেলে ও ১ মেয়ে রয়েছে। ছেলে অষ্টম শ্রেণি ও মেয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। সুমনই সংসারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন।
সুমনের লাশ শুক্রবার রাতে তাঁর বাড়ি কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার সাতবাড়িয়া গ্রামে দাফন করা হয়েছে।